<p>আগামী তিন মাসের মধ্যে তৃণমূলের সব পর্যায়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করবে বিএনপি। দলের নীতিনির্ধারণী সূত্র জানিয়েছে, দুই ধরনের প্রস্তুতি সামনে রেখে সাংগঠনিক পর্যায়ে বড় ধরনের পুনর্গঠনে হাত দিয়েছে দলটি।</p> <p>বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা জানিয়েছেন, আগামী বছর নির্বাচন হতে পারে বলে তাদের ধারণা। সে জন্য সংগঠন শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা। এ ছাড়া দেশে ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি হলে নির্বাচনের দাবি আদায়ে আবার আন্দোলন করতে হতে পারে—এমন বার্তাও দলের নেতাদের দেওয়া হচ্ছে। এই দুই ভাবনা থেকে বিএনপি তাদের সংগঠন পুনর্গঠনে হাত দিয়েছে।</p> <p>সম্প্রতি দলটি ৯ জন জ্যেষ্ঠ নেতাকে চিঠি দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সারা দেশে ইউনিয়ন, পৌর, উপজেলা-থানা থেকে শুরু করে মহানগর ও জেলা কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে।</p> <p>বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর বিভাগ জানিয়েছে, ঢাকা ছাড়া ৯ সাংগঠনিক বিভাগে ৯ জন নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন : সিলেট বিভাগে স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, রংপুরে ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, কুমিল্লায় বরকতউল্লা বুলু, বরিশালে আবদুল আউয়াল মিন্টু, চট্টগ্রামে আহমেদ আযম খান, ফরিদপুরে আসাদুজ্জামান রিপন, খুলনায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, রাজশাহীতে আব্দুস সালাম ও ময়মনসিংহ বিভাগে যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। ঢাকা বিভাগে এখনো কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।</p> <p>বরিশাল বিভাগের দায়িত্ব পাওয়ার কথা জানিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু কালের কণ্ঠকে বলেন, কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সম্মেলন করতে পারবেন বলে তিনি আশা করেন।</p> <p>দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ৮২টি সাংগঠনিক জেলার বেশির ভাগই আহ্বায়ক কমিটি। ইউনিয়ন, পৌর ও উপজেলা পর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরে এক কমিটি কাজ করছে। অনেক ইউনিটে কোনো কমিটি নেই। ফলে তৃণমূলের সাংগঠনিক পর্যায়ে স্থবিরতা কাজ করছে।</p> <p>গত রবিবার দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছে দেওয়া নির্দেশনাসংক্রান্ত চিঠিতে স্বাক্ষর করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনার বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌর, থানা কমিটি থেকে শুরু করে মহানগর ও জেলা কমিটি সম্মেলন এবং কাউন্সিলের মাধ্যমে আগামী ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি সমাপ্ত করতে হবে। এই পত্রপ্রাপ্তির পর আপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সহসাংগঠনিক সম্পাদকদ্বয় এবং মহানগর ও জেলার সভাপতি/আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক/সদস্যসচিবগণের সঙ্গে বৈঠক করে অতিসত্বর সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু করতে হবে।’</p> <p>দলের নেতারা বলেন, তৃণমূলের সম্মেলন সঠিক সময়ে করা সম্ভব হলে দলের ‘জাতীয় কাউন্সিলের’ মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি পুনর্গঠনও করা হতে পারে। দলের উচ্চ পর্যায়ে এমন আলোচনাও আছে।</p> <p>রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে তারা পুরস্কৃত হবেন বলে তিনি আশা করেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনা বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্তরা প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন।</p>