<p>বগুড়ার শাজাহানপুরে বন্ধুদের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় অপর বন্ধুর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর হিন্দুপাড়ার ৪ বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।</p> <p>মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার বেজোড়া হিন্দুপাড়ায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।</p> <p>এর আগে সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন বন্ধু রেজাউল ইসলাম ওরফে রনি (৩৬)। নিহত রেজাউল ইসলাম উপজেলার চকলোকমান দক্ষিণপাড়ার মৃত আব্দুল হামিদ আলীর ছেলে।</p> <p>স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত রেজাউল ইসলামের সঙ্গে বেজোড়া হিন্দুপাড়ার বাসিন্দা বাদশা মিয়ার দুই ছেলে আকরাম হোসেন (৩০) ও রানা মিয়া (২৫), শহিদুল ইসলামের ছেলে মারফি (১৯), মৃত সজল দাসের ছেলে সজিব দাস (২০), শুকুর আলীর ছেলে সুজন (২০), আব্দুর রশিদের ছেলে সুমন (২৫), বাবলুর ছেলে মঙ্গল দাস (১৯), মৃত সুরেশের ছেলে সীমান্ত (১৯), আব্দুল করিমের ছেলে শাকিল (২৩) এবং কিনু মন্ডলের ছেলে সজিবের (২২) বেশ কিছুদিন থেকে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। </p> <p>এমতাবস্থায় গত ১১ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে রেজাউল ইসলাম ওরফে রনি তার বন্ধু জমি কেনাবেচা ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের সঙ্গে মোটরসাইকেল যোগে বেজোড়া হিন্দুপাড়ায় এক ব্যক্তির কাছে জমির বায়না করতে যান। পথিমধ্যে হিন্দুপাড়া বটতলা নামক স্থানে পৌঁছালে উল্লেখিত বন্ধুরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার পথরোধ করে রেজাউল ও নজরুলকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে বটগাছের নিচে নিয়ে গিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে রেজাউল ইসলামের মাথায় ও পিঠে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এসময় তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে গুরুতর আহত অবস্থায় রেজাউল ইসলামকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। এ ঘটনায় রেজাউল ইসলামের মা বাদি হয়ে শাজাহানপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। হাসপাতালে রেজাউল ইসলামের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার বেলা ১২টার দিকে রেজাউল ইসলাম মারা যান। রেজাউল ইসলামের মারা যাওয়ার খবর জানাজানি হওয়ার প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর হঠাৎ করে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে অভিযুক্ত বন্ধুদের মধ্য থেকে রানা, সজিব, সুমন ও সজিব দাস নামে ৪ বন্ধুর বসতবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।</p> <p>একই সঙ্গে ৪ বন্ধুর বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্থানীয় অনেকে বলছেন, রেজাউল ইসলামের মৃত্যুর খবরে উত্তেজিত হয়ে স্থানীয়রা তাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। আবার অনেকে বলছেন, রেজাউল ইসলাম মারা যাওয়ার খবর পেয়ে হত্যা মামলা দুর্বল করতে নিজেদের বাড়িঘরে নিজেরাই আগুন ধরিয়ে দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর ফন্দি এটেছে।</p> <p>শাজাহানপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাসুদ করিম জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে বিভিন্নজনের কাছ থেকে ভিন্ন রকম তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। কেউ বলছে উত্তেজিত জনগণ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। আবার নিজেদের বাড়িঘরে তারা নিজেরাই আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে। তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p>