<p>হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির আশা জাগলেও লেবাননে হামলা চালিয়েই যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলি নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভার আলোচনা করতে বসার কথা।</p> <p>যুক্তরাষ্ট্র ফ্রান্সের চাপের মুখে লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার। গত রবিবার রাতে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানায়।</p> <p>এদিকে ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি যুদ্ধবিরতি চুক্তির খুব কাছাকাছি থাকার কথা জানান। তবে তিনি বলেছেন, সবকিছু চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু হয়েছে, সেটা বলা যাবে না। গত সোমবার লেবাননের চারটি সূত্র বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফ্রান্সের  প্রেসিডেন্ট  ইমানুয়েল ম্যাখোঁ লেবাননে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা দিতে পারেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।  ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও হিজবুল্লাহর মধ্যে প্রস্তাবিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে গতকাল ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার ভোট দেওয়ার কথা। এই প্রস্তাবের আওতায় লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে ইসরায়েল। অন্যদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে লেবানন সীমান্তে বয়ে যাওয়া নদীর দক্ষিণ তীর থেকে হিজবুল্লাহ তাদের যোদ্ধা ও অস্ত্র সরিয়ে নেবে। হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের স্থলে ওই এলাকায় লেবাননের সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে।</p> <p>লেবাননে যুদ্ধবিরতি নিয়ে তোড়জোড় চললেও গতকালও রাজধানী বৈরুতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। দক্ষিণ বৈরুতের শহরতলিগুলোতে বাসিন্দাদের উচ্ছেদ নির্দেশ দেওয়ার পরই সেসব এলাকায় হামলা চালায় তারা। বৈরুতে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৩১ জন প্রাণ হারিয়েছে। হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীও ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়েছে।</p> <p>এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বলেছেন, লেবাননে প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন না করার কোনো কারণ নেই। যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের উদ্যোগে দেওয়া প্রস্তাব এখন টেবিলে।  ইসরায়েল যে নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি চেয়েছে তার সবই এতে আছে। গতকাল ইতালির রাজধানী রোমের কাছে জি৭ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে এক বৈঠকে বোরেল এ কথা বলেন। যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে ইসরায়েলকে চাপ দিতে আন্তর্জাতিক নেতাদের প্রতিও আহবান জানান বোরেল। গত বছরের অক্টোবরে ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা শুরুর পর লেবাননে হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গেও ইসরায়েলি বাহিনী সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। গত সেপ্টেম্বরের শেষে দিক থেকে লেবাননে হামলা তীব্র করে ইসরায়েল। সেই সঙ্গে দেশটিতে স্থল সেনাও পাঠায় তারা। গত বছরের অক্টোবর থেকে দুই পক্ষের সংঘাতে লেবাননে অন্ততপক্ষে তিন হাজার ৭৬৮ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া সাড়ে ১৫ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।</p> <p>এদিকে গাজায় হামলা চালিয়েই যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।  গতকাল উত্তর গাজায় তিন দফা হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া প্রবল বর্ষণে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীর দুর্ভোগ আরো তীব্র হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত ৪৪ হাজার ২৪৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে এক লাখের বেশি মানুষ। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল এক তথ্যে জানায়, ইসরায়েলি হামলায় গাজার অন্ততপক্ষে এক হাজার ৪১০টি পরিবারের কোনো সদস্যই আর বেঁচে নেই। তিন হাজার ৪৬৩টি পরিবারের কেবল একজন সদস্য বেঁচে আছে। দুই হাজার ২৪৭টি পরিবারের স্বজন মারা গেলেও অনেক সদস্যই এখনো বেঁচে আছে।</p> <p>সূত্র : এএফপি, আলজাজিরা, বিবিসি</p>