<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তাল যমুনা এখন মরা নদী। কূলে জেগে উঠেছে বিশাল চর। চরের কোথাও সমতল, আবার কোথাও উঁচু-নিচু। কিছু জায়গায় ছোট ছোট গর্ত। সেখানে রয়েছে জমে থাকা পানি। চরের এসব গর্তে জমে থাকা পানিতে কালো বোরো ধান রোপণ করছেন চরের কৃষকরা। এই ধান রোপণে জমিতে কোনো চাষ দিতে হয়নি। এ কারণে উৎপাদন খরচ নেই বললেই চলে। আর তাই এই ধান চাষ করে লাভবান হচ্ছেন চরের কৃষকরা। গত রবিবার সরেজমিন বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বহমান যমুনা নদীর কূলে জেগে ওঠা চরে আগাম জাতের কালো বোরো ধান চাষের এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয়রা জানান, শুকনা মৌসুমে এ বছর যমুনা নদীর কূলে জেগে ওঠা চরে কালো বোরো ধান চাষ করেছেন শত শত কৃষক। নদীর কূলে ধানের সবুজ চারাগাছ বাতাসে দোল খাচ্ছে। প্রতিবছরই শুষ্ক মৌসুমে যমুনা নদী পানিশূন্য হয়ে যায়। তবে উজান থেকে নেমে আসা সামান্য পানিতেই নদীর কূলের ভূমিহীনরা প্রতিবছর বোরো ধান চাষ করেন। বেশির ভাগ চাষি জেগে ওঠা চরে ৮-১০ বছর ধরে বোরো ধান চাষ করছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চরের কৃষকরা নিজস্ব জমি না থাকায় কোনো ফসলই চাষাবাদ করতে পারেন না। অন্যদিকে সেচ দেওয়া পানির চেয়ে নদীর চুয়ে আসা পানিতে বোরো চাষ অনেক বেশি উপকারী। তাই নদীর কূলে চরের নরম পলিমাটিতে বোরো ধান লাগানো হয়। এতে সার ও সেচসহ নানা ক্ষেত্রেই সাশ্রয় হয় চাষিদের। এই জাতের ধানের ফলন প্রতি বিঘায় প্রায় ৮-৯ মণ করে পাওয়া যায়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চাষিরা নভেম্বর মাসের শুরুর দিকে কালো বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করেন। চারাগাছের বয়স ২৫-৩০ দিন হলে চাষিরা নদীর কূলে জেগে ওঠা চরে বিনা চাষে সেই চারা রোপণ করেন। এই ধান উৎপাদনে জমিতে হালচাষের প্রয়োজন হয় না, রাসায়নিক সারও তেমন একটা লাগে না। মার্চ মাসের শেষের দিকে এই ধানের ফসল ঘরে তোলা হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যমুনার বাঁধে আশ্রিত ভূমিহীন দিনমজুর জাহিদুল ইসলাম। স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে প্রায় ১০ বছর ধরে বাস করছেন বাঁধে। নিজের জমি না থাকায় বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে প্রায় এক বিঘা জমিতে কয়েক বছর থেকে বোরো ধান চাষ করে আসছেন। এই জমির ধান থেকেই তার পরিবারের কয়েক মাসের খাবারের জোগান হয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ছামিদুল ইসলাম জানান, আগে এসব বালুচর পতিত থাকত। নদীর এসব পতিত জমিতে বোরো ধান চাষ করে চাষিরা সচ্ছলতা পাচ্ছেন। সেই সঙ্গে এলাকার খাদ্য চাহিদা পূরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।</span></span></span></span></span></p>