<p>ক্যান্সার চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ একটা চিকিৎসা পদ্ধতি হলো কেমোথেরাপি। এই পদ্ধতিতে ওষুধের সাহায্যে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা হয় বা সেগুলোর বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এসব ওষুধের উৎপাদন ও প্রয়োগ প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল।</p> <p><strong>ওষুধের ‍উৎস</strong><br /> কেমোথেরাপির ওষুধ বিভিন্ন উৎস থেকে তৈরি করা হয়। সাধারণত চারটি প্রধান উৎস রয়েছে প্রাকৃতিক উৎস। গাছপালা বা মাইক্রো-অর্গানিজম থেকে ওষুধের কাঁচামাল সংগ্রহ করা হয়। যেমন ভিঙ্ক্রিস্টিন এবং ভিঙ্কাব্লাস্টিন নামক ওষুধ তৈরি হয় পেরিওয়িঙ্কল গাছ থেকে। অন্যদিকে ডক্সোরুবিসিন নামে একটি ওষুধ তৈরি হয় Streptomyces ব্যাকটেরিয়া থেকে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="প্যারাসিটামল কী দিয়ে তৈরি? এর কাঁচামাল কোথা থেকে আসে?" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/11/1733931832-9876c9a3f300f29c8ee619765c1ad768.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>প্যারাসিটামল কী দিয়ে তৈরি? এর কাঁচামাল কোথা থেকে আসে?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/12/11/1456444" target="_blank"> </a></div> </div> <p>সিন্থেটিক কেমিক্যাল অর্থাৎ রাসায়নিক উপায়ে কিছু ওষুধ তৈরি করা হয়। ল্যাবরেটরিতে জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই ওষুধ তৈরি করা হয়। এর জন্য বিশেষ ধরনের কাঁচামাল এবং অণু ব্যবহার করা হয়। যেমন, সাইক্লোফসফামাইড, মেথোট্রেক্সেট ইত্যাদি ওষুধ রাসায়নিকভাবে তৈরি হয়।</p> <p>শরীরের প্রাকৃতিক উপাদানগুলো (প্রোটিন, এনজাইম ইত্যাদি) ব্যবহার করে বায়োটেকনোলজির মাধ্যমে ওষুধ তৈরি হয়। যেমন, মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি নামে ওষুধগুলো এভাবে তৈরি হয়।</p> <p>কখনো কখনো প্রাকৃতিক উৎস এবং সিন্থেটিক প্রক্রিয়া একসাথে ব্যবহার করে কার্যকর ওষুধ তৈরি করা হয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="হোমিওপ্যাথি কি সত্যিই কাজ করে? বিজ্ঞান কী বলে?" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/11/1726044286-e723981ea82be35c7d735f0f28e10467.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>হোমিওপ্যাথি কি সত্যিই কাজ করে? বিজ্ঞান কী বলে?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/09/11/1424361" target="_blank"> </a></div> </div> <p> </p> <p><strong>প্রক্রিয়া</strong><br /> কেমোথেরাপির ওষুধ তৈরির প্রক্রিয়া বেশ জটিল এবং বেশ কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথম থাপে রয়েছে গবেষণা ও উন্নয়ন। বিজ্ঞানীরা প্রথমে গবেষণাগারে ক্যান্সার কোষের আচরণ বিশ্লেষণ করেন এবং নতুন ওষুধের উপাদান খুঁজে বের করেন।</p> <p>দ্বিতীয় ধাপে ল্যাবরেটরিতে এবং প্রাণীর শরীরে ওষুধটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়। এতে ওষুধের কার্যকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="শীতে চোখের সমস্যা? করণীয় কী?" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/17/1734423708-e1c9bf1a74ce6a40d277f8adc4d2de88.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>শীতে চোখের সমস্যা? করণীয় কী?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/12/17/1458404" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তৃতীয় ধাপে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়। বেশ কয়েকটি ধাপে আবার এই পরীক্ষা চালানো হয়। এতে ওষুধের কার্যকারিতা, সঠিক ডোজ এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করা হয়।</p> <p>পরীক্ষায় সফল হলে, ওষুধটি বড় পরিসরে বিশেষ কারখানায় তৈরি করা হয়। ওষুধ তৈরি করার সময় মান নিয়ন্ত্রণ কঠোরভাবে পালন করা হয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="কুকুরে কামড়ালে কী করবেন? ভ্যাকসিন নেবেন কতদিনের মধ্যে?" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/17/1734421831-59a41ab8382a1a9d74bf993e8135cb46.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>কুকুরে কামড়ালে কী করবেন? ভ্যাকসিন নেবেন কতদিনের মধ্যে?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/12/17/1458393" target="_blank"> </a></div> </div> <p><strong>যেভাবে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়</strong><br /> রোগীর অবস্থার ওপর ভিত্তি করে কেমোথেরাপির ওষুধ বিভিন্নভাবে শরীরে প্রয়োগ করা হয়। যেমন, <br /> ইনজেকশন বা ইনফিউশন, ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল আকারে, টপিক্যাল অ্যাপ্লিকেশন, ইন্ট্রাথেকাল ও ইন্ট্রাপেরিটোনিয়াল প্রক্রিয়ায় কেমোথেরাপি রোগির শরীরে প্রয়োগ করা হয়।</p> <p>ইনজেকশন বা ইনফিউশন পদ্ধিতে শিরার ভেতর ওষুধ সরাসরি রক্তে প্রয়োগ করা হয়। এটি সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি। এক্ষেত্রে ইনজেকশন ব্যবহার হয় বেশি।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="কুকুরের পেটে কি ঘি-ভাত সহ্য হয়? বিজ্ঞান কী বলে?" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/17/1734429688-6f186c1cb3e4844aabfbfc33d8faa49f.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>কুকুরের পেটে কি ঘি-ভাত সহ্য হয়? বিজ্ঞান কী বলে?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/12/17/1458430" target="_blank"> </a></div> </div> <p><br /> ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল আকারে ওষুধ রোগিকে মুখে খাইয়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে ত্বকের ক্যান্সার বা ক্ষতস্থানে সরাসরি ওষুধের ক্রিম লাগানো হয়। এটাকে বলে টপিক্যাল কেমোথেরাপি।</p> <p>ইন্ট্রাথেকাল পদ্ধতিতে ওষুধ সরাসরি মেরুদণ্ডের তরলে প্রবেশ করানো হয়। অন্যদিকে ইন্ট্রাপেরিটোনিয়াল তরলে মিশিয়ে রোগির পেটের ভেতর ওষুধ পুশ করে দেওয়া হয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="গাছেরা কি ঘুমায়? বিজ্ঞান কী বলে?" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/17/1734417957-5f35e41f226b511c1a2303c839b5cba1.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>গাছেরা কি ঘুমায়? বিজ্ঞান কী বলে?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/12/17/1458379" target="_blank"> </a></div> </div> <p><strong>যেভাবে কাজ করে</strong><br /> ক্যামোথেরাপির প্রধান কাজ হলো দ্রুত বিভাজনশীল ক্যান্সার কোষগুলোকে টার্গেট করে ধ্বংস করা। ক্যান্সার কোষ খুব দ্রুত বিভাজিত হয়, তাই এসব ওষুধ ক্যান্সার কোষের ডিএনএ বা প্রোটিনকে আক্রমণ করে এদের বৃদ্ধি থামিয়ে দেয়।</p> <p>তবে কেমোথেরাপি পার্শপ্রতিক্রিয়া আছে, ক্যান্সার কোষের পাশাপাশি শরীরের স্বাভাবিক কোষকেও ক্ষতি করতে পারে। বিশেষ করে চুলের গোড়া, হাড়ের মজ্জা, এবং হজমতন্ত্রের কোষগুলো কেমোথেরাপির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণেই কেমোথেরাপির পর রোগির দেহে চুল পড়া, বমি বমি ভাব বা ক্লান্তির মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ভ্রু ও হাত-পায়ের লোম বাড়ে না কেন?" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/16/1734336505-b241da9913cc47a13520f344e699f661.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ভ্রু ও হাত-পায়ের লোম বাড়ে না কেন?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/12/16/1458064" target="_blank"> </a></div> </div> <p>কেমোথেরাপির ওষুধ তৈরির প্রক্রিয়া দীর্ঘ ও গবেষণাধর্মী। এটি প্রাকৃতিক উৎস, রাসায়নিক প্রক্রিয়া ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি হয় এবং রোগীর শরীরে সুনির্দিষ্টভাবে প্রয়োগ করা হয়। আধুনিক গবেষণার মাধ্যমে এর কার্যকারিতা দিন দিন আরও উন্নত হচ্ছে এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমানোর চেষ্টা চলছে।</p> <p>সূত্র: বিবিসি</p>