<p>চট্টগ্রামের পটিয়ায় ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার মিছিলে গোলাবর্ষণকারী কৃষক লীগ নেতা আবুল কাশেমকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) হাইদগাঁও ইউনিয়নের দিঘীরপাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।</p> <p>আবুল কাশেম হাইদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন কৃষক লীগের সহসভাপতি। হাইদগাঁও ইউনিয়নের মৃত নুর কাদেরের ছেলে তিনি। </p> <p>পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, ছাত্র-জনতার মিছিলে গোলাবর্ষণকারী আবুল কাশেম ২৭ আগস্ট জামায়াত নেতার করা মামলার এজাহারভুক্ত ২০ নম্বর আসামি। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে আরো তিনটি মামলা রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। </p> <p>২৭ আগস্ট জামায়াত নেতা এনামুর রশিদ বাদী হয়ে পটিয়া থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা করেন। এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয় সাবেক সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। মামলায় ১৫১ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৩৫০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয় </p> <p>মামলার এজাহারে জামায়াত নেতা এনামুর রশিদ উল্লেখ করেন, ৪ আগস্ট পটিয়ার সাধারণ ছাত্র-জনতার মিছিলটি পৌরসভা এলাকার ডাকবাংলোর মোড় থেকে বাইপাস রাস্তার মোড়ে যাওয়ার সময় চট্টগ্রাম-পটিয়া-কক্সবাজার মহাসড়কের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ পটিয়া কার্যালয়ের সামনে আসে। তখন ১-৪ নম্বর বিবাদীদের নির্দেশ ৫-২২ ও ৩২ নম্বর বিবাদীরা দেশীয় ও বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র (পিস্তল, শর্টগান ও বন্দুক) নিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করেন। আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে আহত হন একাধিক ব্যক্তি। এ ছাড়া এজাহারনামীয় বিবাদী ২৩-১৫১ এবং তাহাদের সহযোগী অজ্ঞাতপরিচয় ৩০০-৩৫০ জন বিবাদীরা হত্যার উদ্দেশ্যে ইট-পাথর, কুড়াল, চাপাতি, চায়নিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শান্তিকামী মিছিলকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করেন। ছাত্র-জনতার একাধিক সদস্য হাতে, পায়ে, পিঠে, বুকে, মাথায়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। </p> <p>হামলায় হাফেজ শাহেদুল ইসলামের (২৩) মাথার পেছনে ও ডান পাশে গুলি লেগে আহত হন। মো. মোরশেদ (২১) চোখে, বুকে ও হাতে এবং নাকে গুলিবিদ্ধ হন। আবদুল বাসেত (২০) কাঁধে গুলিবিদ্ধ হন। আরিফুল ইসলাম (২২) মাথায়, হাতে, পিঠে ঘাড়ে ও ঊরুতে গুলিবিদ্ধ হন। ইমাদের (২০) সারা শরীরে সর্বমোট ২২টি গুলি লাগে। আমজাদের (২২) সারা শরীর হকিস্ট্রিকের আঘাতে মারাত্মকভাবে জখম হয়। ফয়জুল ইসলামের (২৩) সারা শরীরে ১৩টি গুলি বিদ্ধ হয়। তেকি (২০) কোমড়ে গুলিবিদ্ধ হন। রবিউল হাসান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। মু. ছাবেদ (২৫) পাঁজরে ও পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন। ভিকটিম মু. হুজাইফা (১৯) মুখে গুলিবিদ্ধ হন। মু. রিয়াজুল করিম (২৩) পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। মু. আ. রায়হান পেটে গুলিবিদ্ধ হন। মো. ওসমান হাতে বুকে ও নাকে গুলিবিদ্ধ হন। নুর কাসেম (২৮) মাথায় ইটের আঘাতে রক্তাক্ত হন। মিনার (২০) উরুতে গুলি বিদ্ধ হয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন। মো. তানজিদ (২৭) পিঠে গুলিবিদ্ধ হন। মো. তৌজিদুল ইসলামের পিঠে ৪টি গুলি লাগে। মো. ইয়াছিরের পায়ে ইট ও হকিস্টিকের আঘাতে গুরুতর হাড়ভাঙ্গা জখমপ্রাপ্ত হয়। মহিউদ্দিন ফয়সালের মাথা হকিস্টিকের আঘাতে রক্তাক্ত হয়। গুলিবিদ্ধ ও আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কেউ রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে। কেউ কেউ দোকানের গলিসহ বিভিন্ন স্থানে নিরাপদ আশ্রয় লাভের জন্য ছোটাছুটি করে এক পর্যায়ে জখমের কারণে ‘মৃত’ প্রায় রাস্তায় পড়ে থাকে। আমিসহ উপস্থিত লোকজন এবং মিছিলরত অন্যান্যদের উদ্ধার করে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।</p>