<p>গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকার পরও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কিভাবে পালিয়ে গেলেন, তা জানতে চেয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।</p> <p>আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজি) এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গতকাল মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।</p> <p>ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ ১৬ জনকে গতকাল ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, আমির হোসেন আমু, ফারুক খান, দীপু মনি, আব্দুর রাজ্জাক, শাহজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, কামরুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী ও সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও জুনায়েদ আহমেদ পলক, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম।</p> <p>এর আগে গত ১৮ নভেম্বর সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ ১৩ জনকে হাজির করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ফের ট্রাইব্যুনালে তোলা হলো আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে।</p> <p>তাদের আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি ফের ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সেদিন গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রসিকিউশনকে।</p> <p>এই আদেশের পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম ওবায়দুল কাদেরের বিষয়ে। তিনি গত তিন মাস বাংলাদেশে ছিলেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর তিনি বাংলাদেশের কোথায় কিভাবে ছিলেন এবং কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বা তিনি কিভাবে সীমান্ত অতিক্রম করেছেন, এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে এই ব্যাখ্যা</p> <p>দিতে বলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ থাকার পরও যদি কেউ কাউকে পালাতে সাহায্য করে, তাহলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।’</p> <p>সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গোপন কারাগারে গুম-নির্যাতন-খুনের নিউক্লিয়াস মন্তব্য করে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আজ (গতকাল) ট্রাইব্যুনালে অপরাধের নিউক্লিয়াস শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করেছি। ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষকে গোপন কারাগারে রেখে নিষ্ঠুর পন্থায় বছরের পর বছর আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়েছে। তাদের লাশ সিমেন্টের বস্তার সঙ্গে বেঁধে নদীতে ফেলে দিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এসবের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘তদন্তের সময় কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের স্বীকারোক্তিতেও বিষয়টি উঠে এসেছে। এসব অপরাধের অংশগুলো তদন্ত কমিশনের রিপোর্টের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা (প্রসিকিউশন) বিস্তারিত প্রতিবেদন দেব। সে জন্য সময় দরকার। আমরা (প্রসিকিউশন) সময় চেয়েছি। আদালত আমাদের দুই মাস সময় দিয়েছেন। আগামী বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে।’</p> <p>তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘এই মামলার তদন্তপ্রক্রিয়া পৃথিবীর অন্য মামলার চেয়ে ব্যতিক্রম। তদন্ত শেষ হতে কত দিন সময় লাগবে, সেটি সুনির্দিষ্ট করে বলা অসম্ভব। এটার গভীরতা ও মাত্রা অনেক বেশি।’</p> <p> </p> <p> </p>