<p>আশপাশের অন্য গ্রামগুলোর তুলনায় কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সমেশপুর গ্রামটির আবহ কিছুটা ভিন্ন। অন্য গ্রামগুলোর আবাদি জমিগুলো শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলে ভরে থাকলেও সমেশপুরের চিত্রটা একদমই আলাদা। কারণ গ্রামটিতে গেলে ফসলের মাঠে যতদূর চোখ যায়, শুধু সবজির চারা আর চারা।</p> <p>গতকাল বুধবার সকালে গ্রামটিতে প্রবেশ করতেই বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মানুষের আনাগোনা চোখে পড়ল। তাঁদের অনেকেই এসেছেন আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে। কাগজে-কলমে সমেশপুর নাম হলেও গ্রামটিতে আসা বেশির ভাগ মানুষই এই গ্রামকে ভিন্ন নামে ডাকেন। তাঁদের কাছে গ্রামটির পরিচিত ‘সবজির চারার গ্রাম’ হিসেবে। কথা বলে জানা গেল, এখানে আসা সবাই বাণিজ্যিক সবজি চাষি। তাঁরা এসেছেন সবজির চারা কিনতে। কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে বুড়িচং উপজেলার ময়নামতী ইউনিয়নের সাহেববাজার এসে সবজির চারার গ্রামটি কোন দিকে, জিজ্ঞেস করলেই যে কেউ বলবে ‘একটু পূর্ব দিকে’। ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, মরিচ, শিম, লাউ, কমুড়া, ব্রকোলিসহ অন্তত ২৩ রকমের চারা রয়েছে গ্রামটিতে। বিক্রি শেষ এই স্থানে ফের বীজ বপন করে নতুন চারার অপেক্ষায় থাকেন উৎপাদনকারীরা।</p> <p>সরেজমিনে যেতেই চোখে পড়ল মীর শহিদুল্লাহ নামের একজন চারা উৎপাদনকারী তাঁর জমি থেকে ফুলকপি ও বাঁধাকপির চারা সংগ্রহ করছেন।</p> <p>তাঁর কাছ থেকে চারা কিনতে আসা কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী এলাকার জলিল মিয়া বলেন, ‘এক হাজার ৪০০ টাকা কইরা ছয় হাজার পাতাকপির (বাঁধাকপি) চারা কিনছি। এইখানকার চারা দেশের সেরা। ১৮ বছর ধইরা চারা কিনতাছি এই গ্রাম থ্যাইক্কা।’ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, ওই গ্রামটি (সমেশপুর) থেকেই সাত-আট কোটি টাকার চারা বিক্রি হয় মৌসুমে। আর পুরো জেলায় প্রায় ২০ কোটি টাকার চারা বিক্রি হয়ে থাকে।</p>