<p>বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলমকে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।</p> <p>বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন তারা।</p> <p>সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত রাজু। </p> <p>বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘হাসনাতের ওপর হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই,’ ‘সারজিসের ওপর হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই,’ ‘সন্ত্রাসবাদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না,’ ‘ হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই, ইসকনের ঠাঁই নাই,’ ‘ফ্যাসিবাদের আগ্রাসন, রুখে দেবে জনগণ,’ দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা,’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। </p> <p>সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাকিব হোসাইন বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পলায়ন করলেও তার দোসররা এখনো এই বাংলায় রয়ে গেছে। তারা বিভিন্ন ব্যানারে থেকে সেই স্বৈরাচারী আগ্রাসন জারি রেখে শেখ হাসিনার ষড়যন্ত্রকে কায়েম করতে চায়। </p> <p>শেখ হাসিনার ১৬ বছরের স্বৈরাচারী আগ্রাসন থেকে মুক্ত করে যারা আমাদেরকে সুন্দর একটি বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে সেই কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে সড়ক দুর্ঘটনার মাধ্যমে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে চায় তারা। বাংলাদেশে স্বৈরাচারের দোসররা যাতে আর কোনো স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করতে না পারে এবং কোনো নিরীহ নেতৃত্বের ওপর হামলা করতে না পারে সেজন্য সচেষ্ট থাকতে হবে। প্রশাসনকে আরো বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।</p> <p>এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে ফ্যাসিবাদী কাঠামোর চক্রান্ত থেমে নেই। একের পর এক অরাজকতা তৈরি করে তারা এই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। মঙ্গলবার ইসকন নামের সন্ত্রাসী সংগঠনের সন্ত্রাসীদের হামলায় আমাদের যে ভাই শহীদ হয়েছেন তার কবর জিয়ারত করে ফেরত আসার সময় আজকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলমের ওপর পরিকল্পিতভাবে ট্রাকচাপা দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাচেষ্টা। আমাদের গণ-অভ্যুত্থানের নায়ক, তাদের ওপর যদি কোনোরকম আক্রমণ নেমে আসে তাহলে সারা বাংলাদেশের ছাত্র জনতা ঘরে বসে থাকবে না। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, চব্বিশ ঘণ্টার ভেতরে যদি হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের ওপর হামলাকারীদের পরিচয় প্রকাশ করা না হয় তাহলে আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে বাধ্য হব। আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বলতে চাই, আপনারা অতি দ্রুত এই হামলার, এই হত্যাচেষ্টার যারা আসামি তাদেরকে জাতির সামনে উন্মোচিত করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করেন।</p> <p>এ সময় নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা গণ-অভ্যুত্থানের লক্ষ্য ও ছাত্র-জনতার অর্জনকে নস্যাৎ করার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ইসকনের মাধ্যমে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে। আজকে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। খুনি হাসিনা মনে করে, গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম সারির নেতৃত্বকে হত্যা করা গেলে বিপ্লবকে নস্যাৎ করা সম্ভব। কিন্তু বাংলার জমিনে লাখো হাসনাত, সারজিস রয়েছে। আমাদের শহিদ ও আহত ভাইদের অর্জনকে আমরা বৃথা যেতে দেব না। আপনারা গুলি করতে পারেন, ট্রাকচাপা দিতে পারেন কিন্তু আমরা একেকজন হাসনাত-সারজিস হয়ে ফিরে এসে এই বিপ্লবকে সমুন্নত রাখব।</p>