<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৩৫ বছরের পুরনো ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চতুর্থ ইউনিটের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে বিতর্কিত রিপাওয়ারিং প্রকল্পের ব্যয় আরো ৫৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ফলে প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে দুই হাজার ২২৬ কোটি টাকা। এদিকে পুরনো এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতা বাড়ানোর চেয়ে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করলে খরচ আরো কম হতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে স্থাপন করা ১৯০ মেগাওয়াট সক্ষমতার স্টিম টারবাইনকে কম্বাইন্ড সাইকেল মুডে রূপান্তর করে ৪০৯ মেগাওয়াটে উন্নীত করতে দুই হাজার ২৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছিল ২০১৬ সালে। তিন বছরের জন্য অনুমোদন দেওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আট বছর সময় লাগায় প্রকল্পের ব্যয় আরো ১৪২ কোটি ২১ লাখ টাকা বেড়ে যাওয়ায় মোট ব্যয় দাঁড়ায় দুই হাজার ১৭১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। প্রকল্পের ৮৭ শতাংশ কাজ শেষে আবারও ৫৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা বাড়িয়ে  প্রকল্পটির তৃতীয় সংশোধনী প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। এই প্রস্তাবটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পেলে তিন বছরের কাজ সাড়ে ৯ বছরে শেষ হবে। একই সঙ্গে ধীরগতির কারণে সরকারের তহিবল থেকে বেশি ব্যয় হবে ১৯৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, যা প্রাথমিক প্রকল্প ব্যয়ের প্রায় ১০ শতাংশ।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের প্রস্তাবটি যাচাই করতে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা আয়োজন করা হচ্ছে। সভায় প্রকল্পটির ধীরগতির কারণ, ব্যয় বৃদ্ধির যৌক্তিকতা, দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তা প্রত্যাহার, বিনিময়হারের প্রাক্কলনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে অস্বাভাবিক উচ্চ ব্যয়ের কারণে পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রের রিপাওয়রিং প্রকল্পের যৌক্তিকতা নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন উত্থাপন করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় চলমান প্রকল্পটির ব্যয় বাড়লে সরকারের অপচয় বাড়বে বলেও মত প্রকাশ করেন তাঁরা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাঁরা বলছেন, বিদ্যমান কেন্দ্রটির উৎপাদন সক্ষমতা ২১৯ মেগাওয়াট বাড়াতে এই প্রকল্পে দুই হাজার ২২৬ কোটি টাকা ব্যয় করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে যেখানে প্রতি মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতার জন্য ব্যয় হবে ১০.১৭ কোটি টাকা, সেখানে একই সক্ষমতার নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ব্যয় আরো কম হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত অর্থবছরে ৯১০ কোটি টাকা ব্যয়ে শাহজীবাজারে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাস টারবাইন পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। সেখানে প্রতি মেগাওয়াটে ব্যয় হয়েছে ৯.১১ কোটি টাকা। রূপসা ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে আট হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। সেখানে মেগাওয়াটপ্রতি ব্যয় হবে ১০.৬২ কোটি টাকা। ময়মনসিংহে ৩৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ডুয়াল ফুয়েল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে প্রতি মেগাওয়াটের জন্য ৫.৪৪ কোটি টাকা করে মোট ব্যয় হচ্ছে এক হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনীতে বিশ্বব্যাংকের তহবিল থেকে এক হাজার ৭৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও বিলম্বের কারণে ২১৫ কোটি টাকার চুক্তি বাতিল করেছে সংস্থাটি। এর ফলে নিজস্ব তহিবল থেকে ২৭০ কোটি টাকা বাড়তি ব্যয় করতে বাধ্য হচ্ছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অসংখ্য এবং অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো গত দেড় দশকে বিশেষ আইনের আওতায় এনে অনুমোদন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> দেওয়া হয়, যা এখন বিদ্যুৎ খাতের জন্য বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সঠিক গুণগত মান এবং সঠিক সেবা না দিয়ে উল্টো দেশের মানুষ এবং অর্থনীতিকে ব্যাপক ক্ষতির মুখে ফেলা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের আড়ালে আইনের দ্বারা বেআইনিকে সুরক্ষা দিয়ে লুটপাটের ক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছে। অর্থ আত্মসাতের জন্য পরিকল্পিতভাবে এ প্রকল্পগুলো করা হয়েছিল।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p>