<p>ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির বিষয়ে আন্তর্জাতিক জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন অনুসন্ধান কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিবকে এক মাসের মধ্যে এই কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। আর কমিটি গঠনের দুই মাসের মধ্যে চুক্তির বিষয়ে বিশদ প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।</p> <p>আজ মঙ্গলবার চুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা রিট ও সম্পূরক আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। </p> <p>সমতা ও ন্যয়্যতার ভিত্তিতে সম্পাদিত চুক্তি সংশোধনে রাজি না হলে চুক্তি বাতিলের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং আদানি গ্রুপের সঙ্গে অসম, অন্যায্য ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তিটি কেন প্রতরাণামূলক, অযৌক্তিক, বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="আদানির বিদ্যুতে ৪৮০০ কোটি শুল্ক ফাঁকি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/14/1731536615-c35b6ccb105d3d722dba2c1d6f57fd9c.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>আদানির বিদ্যুতে ৪৮০০ কোটি শুল্ক ফাঁকি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2024/11/14/1446403" target="_blank"> </a></div> </div> <p>গত ৬ নভেম্বর রিট আবেদনকারী এম আব্দুল কাইয়ুম লিটন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)-এর চেয়ারম্যান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালযয়ের সচিবকে আইনি নোটিশ পাঠান। নোটিশে তিন দিনের মধ্যে চুক্তি সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু করতে অনুরোধ করা হয়। তা না হলে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করার কথা উল্লেখ ছিল নোটিশে। এই আইনি নোটিশের জবাব না পেয়ে গত ১২ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন এই আইনজীবী।</p> <p>আদালতে রিটের পক্ষে নিজেই শুনানি করেন রিটকারী এম আব্দুল কাইয়ুম লিটন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আফরোজা ফিরোজ মিতা, কামারুন মাহমুদ দীপা ও মনিরুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. তানিম খান ও সৈয়দা সাজিয়া শারমিন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="আদানির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের বাস্তবতা কী?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/13/1728802038-3d66aa80894d21813167fb31f512a9a4.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>আদানির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের বাস্তবতা কী?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/business/2024/10/13/1434670" target="_blank"> </a></div> </div> <p>পরে আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ুম লিটন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আন্তর্জাতিক জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশনার পাশাপাশি চুক্তি সম্পাদনের আগে আদানি গ্রুপের দরকষাকষি হয়েছিল কিনা, হয়ে থাকলে সেই দরকষাকষি সংক্রান্ত যত যত তথ্য-উপাত্ত ও নথি আছে, সেগুলো এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’</p> <p>এই আইনজীবী বলেন, ‘দেশীয় বা আন্তর্জাতিক চুক্তির মানদণ্ড হচ্ছে, চুক্তির শর্ত সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে হয়েছে কিনা। আদানি গ্রুপের সঙ্গে এই চুক্তিটা আমরা মনে করেছি একপেশে ছিল। যাতে কোনোভাবেই বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করা হয়নি। কেবলমাত্র আদানি গ্রুপের স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে চুক্তিতে। এই ধরণের চুক্তিকে অস্বচ্ছ বলা হয়, যা জননীতি বা ন্যায্যতার পরিপন্থী।’</p> <p>এক প্রশ্নে আইনজীবী লিটন বলেন, ‘প্রতারণামূলকভাবে চুক্তিটি আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে এর খেসারত দিতে হচ্ছে আমাদের ১৮ কোটি মানুষকে। কারণ, আদানি গ্রুপ থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ১৪ দরে কিনছি। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর-প্রতিবেদনে এই তথ্য এসেছে। অথচ ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি ইউনিট ৫ দশমিক ৫ পয়সা দরে কিনছি। আর ভারতের অন্যান্য বেসরকারি খাত থেকে বাংলাদেশ প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনছে ৮ টাকা ৫০ পয়সা করে। নেপাল থেকে আমরা প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ নিচ্ছি ৮ টাকা দরে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="কারাগারে বসে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হয় সালমান এফ রহমানের!" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/19/1732011157-d6d55a82f7452d28747769bddd786a39.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>কারাগারে বসে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হয় সালমান এফ রহমানের!</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/19/1448347" target="_blank"> </a></div> </div> <p>বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনার প্রভাব ব্যাখ্যা করে এই আইনজীবী বলেন, ‘বিদ্যুতের দাম বেড়ে গেলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। মূল্যস্ফীতি ঘটে। স্বাভাবিকভাবেই ভোক্তা পর্যায়ে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যায়। গোটা জাতিকে এর ফল ভোগ করতে হয়।’ </p> <p>আদালত আগামী বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের দিন রেখেছেন বলে জানান এম আব্দুল কাইয়ুম লিটন।  </p> <p>জানা গেছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার দেশের স্বার্থ যথাযথভাবে রক্ষা করে বিভিন্ন চুক্তি করেছে কি না, সম্পাদিত চুক্তিতে স্বচ্ছতার অভাব আছে কি না, তা নিরূপণে এক বিশেষ আইনের অধীনে সরকার একটি প্যানেল গঠন করেছে। এসব চুক্তির একটি ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে করা ২৫ বছর মেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খন্ডে আদানির ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে মূলত বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে বিদ্যুতের মোট চাহিদার প্রায় এক দশমাংশের জোগান আসছে প্রকল্পটি থেকে।</p> <p>বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানির কাছ থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনতে বাংরাদেশের খরচ পড়ছে ১২ টাকা (০.১০০৮ ডলার)। এটি ভারতের অন্যান্য বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের খরচের চেয়ে ২৭ শতাংশ বেশি। আর ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের খরচের চেয়ে ৬৩ শতাংশের বেশি।</p>