<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দীর্ঘদিন পর আবার আগের নিয়মে ফিরে গেল বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো ঋণ তিন মাস মেয়াদোত্তীর্ণ হলেই সেটা খেলাপি হিসেবে বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনাতে বলা হয়, মেয়াদোত্তীর্ণের সময়সীমা তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে হলে নিম্নমান, ছয় থেকে ১২ মাসের মধ্যে সন্দেহজনক ও ১২ মাস বা এর অধিক হলে মন্দ বা ক্ষতিজনক মানে খেলাপি হিসেবে দেখাতে হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নির্দেশনা অনুযায়ী, সব ধরনের ঋণ পরিশোধ বা সমন্বয়ের জন্য নির্ধারিত দিনের পরবর্তী দিন থেকে তা মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে গণ্য হবে। আর মেয়াদোত্তীর্ণের সময়সীমা তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে হলে নিম্নমান, ছয় থেকে ১২ মাসের মধ্যে সন্দেহজনক ও ১২ মাস বা এর অধিক হলে মন্দ বা ক্ষতিজনক মানে খেলাপি করতে হবে। একই সঙ্গে স্ট্যান্ডার্ড ঋণের ক্ষেত্রে ঋণস্থিতির ১ শতাংশ, স্পেশাল মেনশন অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে ঋণস্থিতির ৫ শতাংশ জেনারেল প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। এ ছাড়া খেলাপিকৃত ঋণের ক্ষেত্রে নিম্নমান হলে প্রভিশনের ভিত্তির ওপর ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক হলে ৫০ শতাংশ ও মন্দ বা ক্ষতিজনক হলে ১০০ শতাংশ স্পেসিফিক প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যদি কোনো ঋণ বা অগ্রিম সাব-স্ট্যান্ডার্ড এবং ডাউটফুল (ডিএফ) মানে খেলাপি করা হয়, তাহলে ওই ঋণের ওপর অর্জিত সুদ আয় অ্যাকাউন্টে জমা করার পরিবর্তে সুদের সাসপেন্স অ্যাকাউন্টে জমা করতে হবে। কোনো ঋণ বা অগ্রিম ক্ষতিজনক মানে খেলাপি করা হলে একই অ্যাকাউন্টে সুদের চার্জ করা বন্ধ হয়ে যাবে। অন্য কোনো বিশেষ কারণে কোনো ক্ষতিজনক মানে ঋণ অ্যাকাউন্টে কোনো সুদ চার্জ করা হলে সাসপেন্স অ্যাকাউন্টে তা সংরক্ষণ করা হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুনর্নির্ধারিত ঋণের ক্ষেত্রে অবাস্তব সুদ সাসপেন্স অ্যাকাউন্টে জমা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আয় অ্যাকাউন্টে জমা করা যাবে না। একই সঙ্গে এ ধরনের ঋণ পুনরুদ্ধারের জন্য মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে ফাইল করা পর্যন্ত সময়ের জন্য সুদ ও মূল পরিমাণের জন্য একই ফাইল করার জন্য ঋণ অ্যাকাউন্টে মামলা চার্জ করা যেতে পারে। কিন্তু এভাবে লোন অ্যাকাউন্টে ধার্যকৃত সুদের মধ্যে সংরক্ষণ করতে হবে সাসপেন্স অ্যাকাউন্ট। এ ছাড়া যদি খেলাপি ঋণ বা এর কিছু অংশ পুনরুদ্ধার করা হয় অর্থাৎ ঋণ অ্যাকাউন্টে প্রকৃত আমানত কার্যকর করা হয়, তাহলে প্রথমে সুদ উল্লিখিত আমানত থেকে আদায় করতে হবে এবং পরে ঋণ সমন্বয় করা হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের ক্রমবিকাশমান অর্থনীতির সহায়ক শক্তি হিসেবে একটি শক্তিশালী আর্থিক খাতের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আর্থিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে খেলাপিকৃত ঋণের হার হ্রাস করার বিষয়ে যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। ব্যাংক খাত সংস্কার করার জন্য এরই মধ্যে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ওই পদক্ষেপের অংশ হিসেবেই আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার আলোকে আলোচ্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ফলে ব্যাংকের সম্পদের প্রকৃত গুণমান নিরূপণ করা সম্ভব হবে। তবে যেহেতু সার্কুলারটি ১ এপ্রিল ২০২৫ সাল থেকে কার্যকর হবে, সেহেতু ব্যাংকগুলো এই নীতিমালা পরিপালনের ক্ষেত্রে প্রস্তুতি গ্রহণের পর্যাপ্ত সময় পাবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডলারে ক্ষতিগ্রস্তরা ঋণ পরিশোধে ৮ বছর সময় পাবেন</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডলারের দাম বাড়ার কারণে যেসব আমদানিনির্ভর শিল্প খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের জন্য আলাদা একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বলা হয়, ডলারের দাম বাড়ার কারণে যেসব আমদানিনির্ভর শিল্প খাত ক্ষতির মুখে পড়েছে, সেই ব্যবসায়ীরা ঋণ পরিশোধে আট বছর পর্যন্ত সময় পাবেন। এসব ঋণ আলাদাভাবে হিসাব করে এক বছরের বিরতিসহ প্রতি মাসে বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে পরিশোধ করা যাবে। যেসব আমদানিকারক বিলম্বে ঋণ পরিশোধের শর্তে আমদানি করেছিলেন এবং ক্ষতির শিকার হয়েছেন, শুধু তারাই এই সুযোগ পাবেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, কভিড-১৯-এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাসহ নানা কারণে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার মূল্যমান উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় স্থানীয় উৎপাদনমুখী শিল্পগুলো কাঁচামাল আমদানিকালে বিনিময় হারজনিত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন সক্ষমতা হ্রাসসহ ফোর্সড ঋণ সৃষ্টি হচ্ছে এবং চলতি মূলধনের ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমদানিনির্ভর শিল্পসহ স্টিল খাত, সিমেন্ট খাত ও স্থানীয় যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পণ্যের বিক্রয়মূল্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত, সেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদন সক্ষমতা অক্ষুণ্ন রাখার মাধ্যমে দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি ও রপ্তানির গতিধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে নতুন নির্দেশনা প্রদান করা যাচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশনার ফলে খাদ্যপণ্য আমদানিকারকদের অনেকে এই সুবিধা পাবেন। কারণ তেল, চিনিসহ নানা পণ্যের দাম সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল আমদানির জন্য ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত খোলা ঋণপত্রের ক্ষেত্রে বিনিময় হারজনিত ক্ষতির মোট পরিমাণ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক নির্ধারণ করবে। অপ্রত্যাশিত বিনিময় হারজনিত ক্ষতির মোট পরিমাণ নির্ণয়ের পদ্ধতিও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্ষতির সমপরিমাণ অর্থ গ্রাহকের ঋণ-ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে চলতি মূলধন ঋণসীমার বাইরে আলাদা একটি মেয়াদি ঋণ হিসেবে স্থানান্তর করা যাবে, যা সর্বোচ্চ এক বছরের বিরতিসহ সর্বোচ্চ আট বছর মেয়াদে সমকিস্তিতে (মাসিক বা ত্রৈমাসিক) পরিশোধযোগ্য হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এতে আরো বলা হয়, এই সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে একক গ্রাহক ঋণসীমা কোনোভাবেই অতিক্রম করা যাবে না। কোনো খেলাপি গ্রাহক প্রতিষ্ঠান এই সুবিধা পাবে না। এ সুবিধা নিতে চাইলে গ্রাহকদের আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে নিজ নিজ ব্যাংকে আবেদন করতে হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ছাড়া গ্রাহক বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের কারণে প্রকৃত অর্থে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কি না, তা ব্যাংক কর্তৃক নিশ্চিত হতে হবে এবং এসংক্রান্ত নথিপত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগের যাচাইয়ের জন্য যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>