<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রয়াত ব্যবসায়ী টাইকুন লতিফুর রহমানের পরিবারে সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে এখন </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গৃহদাহ</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> চরমে। ট্রান্সকম গ্রুপের ১৬টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সিইও সিমিন রহমান একাই দখলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নিজের মায়ের পেটের ভাই-বোনকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে গোপনে ভুয়া স্বাক্ষর ও জাল দলিল <img alt=" জালিয়াতি করে সিমিনের কবজায় ৩০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ!" height="245" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/12 December/17-12-2024/9888.jpg" style="float:left" width="343" />তৈরি করে সব সম্পত্তি গ্রাসের সীমাহীন প্রতারণা করেছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আরেক বোন শাযরেহ হক। দেশের একটি বড় শিল্প গ্রুপের সম্পত্তি নিয়ে ভাই-বোনের মামলা-মোকদ্দমার পর কালের কণ্ঠের অনুসন্ধান, সম্পত্তি দখল করতে তৈরি সিমিন রহমানের সব নথিপত্র পর্যালোচনা এবং উভয়ের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সূত্র বলছে, গত বছরের ১৬ জুন বড় ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমান মারা যাওয়ার পর তাঁর ছোট বোন শাযরেহ হক উত্তরাধিকবার হিসেবে নিজেদের প্রাপ্য সম্পত্তি বুঝে পেতে এখন আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। শাযরেহ হক অভিযোগ করেছেন, বড় বোন সিমিন জালিয়াতি ও প্রতারণা করে পারিবারিক সব সম্পত্তি একাই নিজের দখলে নিয়েছেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জানা যায়, ট্রান্সকম গ্রুপের সিস্টার কনসার্ন মিডিয়া স্টার লিমিটেডের অধীনে পরিচালিত পত্রিকা প্রথম আলো। গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের মৃত্যুর পর তাঁর মেয়ে সিমিন রহমানের বিরুদ্ধে মিডিয়া স্টার দখলের অভিযোগ উঠেছে। তিনি এখন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একইভাবে তাঁর বিরুদ্ধে ট্রান্সকমের আরেক অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মিডিয়া ওয়ার্ল্ডের (যার আওতায় ডেইলি স্টার) বোর্ড দখলেরও অভিযোগ উঠেছে। এর বাইরেও বাংলাদেশ ল্যাম্পস, ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকস, এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস, পেপসিকোসহ গ্রুপটির আরো ১৬টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিমিন রহমান নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তাঁর দখলে নেওয়া সব প্রতিষ্ঠানের বর্তমান ভ্যালুয়েশন ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এর মধ্যে শুধু এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের ভ্যালুয়েশনই ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিজের পত্রিকার প্রভাব খাটিয়ে জাল-জালিয়াতি করে দখল করা কম্পানি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে মরিয়া সিমিন রহমান। ছোট বোন শাযরেহ হক সিমিনের বিরুদ্ধে গত ফেব্রুয়ারি মাসে গুলশান থানায় পৃথক তিনটি জালিয়াতি, প্রতারণা ও আত্মসাতের মামলা করেন। কিন্তু সিমিন প্রভাব খাটিয়ে এসব মামলার তদন্ত ও বিচারকাজ নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আইনজীবীর মাধ্যমে শাযরেহ হক জানান, গত আওয়ামী শাসনামলের শেষ দিকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বান্ধবী বলে পরিচিত অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমকে ব্যবহার করে নিজের পক্ষে বিশেষ আইনি সুবিধা নেন সিমিন রহমান। তৌফিকা করিম অন্তরালে থেকে তাঁর চেম্বারের দুই ঘনিষ্ঠ আইনজীবী শাহীন ও বাহারুলকে দিয়ে ওই বিশেষ আইনি সুবিধা নেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ ছাড়া প্রথম আলো পত্রিকাকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করে অর্থ ও প্রভাব খাটিয়ে পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে সব স্তরে ক্ষমতা দেখিয়ে অবৈধভাবে সম্পত্তি সিমিন রহমান নিজের নামে কুক্ষিগত করে রেখেছেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রায় চার দশক আগে ট্রান্সকম প্রতিষ্ঠা করেন ব্যবসায়ী লতিফুর রহমান। ব্যবসা করার প্রাথমিক মূলধন দেন তাঁর বাবা ব্যবসায়ী খান বাহাদুর মজিবুর রহমান। তাঁর হাত ধরেই দিন দিন প্রতিষ্ঠানটি বিজনেস টাইকুনে পরিণত হয়। লতিফুর রহমানের তিন সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান প্রয়াত আরশাদ ওয়ালিউর রহমান (রিয়াজ), মেজো মেয়ে সিমিন রহমান, ছোট মেয়ে শাযরেহ হক। সিমিন রহমান বড় ভাই ও ছোট বোনের স্বাক্ষর জালিয়াতি করেই সব সম্পদ দখলে নিয়েছেন। এই প্রতিবেদকের হাতে আসা সব নথিপত্র পর্যালোচনা করেই এসব তথ্য জানা গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশ কয়েক বছর আগে সিমিনকে কম্পানির গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছিলেন বাবা লতিফুর রহমান। পরিবারের অন্য সদস্যদেরও ছিল তাঁর প্রতি পূর্ণ সমর্থন। আর সেই সুযোগে ট্রান্সকম দখলে সিমিন বেপরোয়া হয়ে ওঠেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সিমিন রহমানের দুই ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে ফারাজ আইয়াজ হোসেন ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজান বেকারির জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহত হন। আর সিমিন তাঁর স্বামী ওয়াকার বিন হোসেনকে কয়েক বছর আগে তালাক দিয়েছেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শাযরেহ হকের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, প্রতারণা ও আত্মসাতের ঘটনার শুরু ২০২০ সালের ১ জুলাই ট্রান্সকমের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের মৃত্যুর পর, ২০২৩ সালের শুরুর দিকে যেটি পুরোপুরি ধরতে পারেন লতিফুর রহমানের বড় ছেলে আরশাদ ওয়ালিউর রহমান ও ছোট মেয়ে শাযরেহ হক। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০২০ সালে ভাই-বোনের ভুয়া স্বাক্ষর ব্যবহার করে বেশির ভাগ শেয়ার নিজের নামে নেওয়ার জন্য সিমিন গ্রুপ অব কম্পানির নথিপত্র ও পরিবারিক ডিড অব সেটলমেন্ট তৈরি করেন। শুধু তাই নয়, রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে লতিফুর রহমানের নামে থাকা দুই বিঘা দুই কাঠা জমির মধ্যে ৩৫ কাঠার ভুয়া হেবা দলিল তৈরি করে নিজের নামে নেওয়ার চেষ্টা করেন সিমিন রহমান। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কাছে সিমিনের দাখিল করা ওই হেবা দলিলেও বাবা ও ছোট বোন শাযরেহ হকের স্বাক্ষর জালিয়াতি করেছেন। পরবর্তী সময়ে ছোট বোন এটি জানতে পারলে ভুয়া হেবা দলিলের কার্যক্রম আটকে যায়। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শাযরেহ হকের আইনজীবী আমিনুল হক বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সিমিন নানাভাবে সবার সম্পত্তি একাই জাল দলিল ও নথিপত্র তৈরি করে গ্রাস করার চেষ্টা করছেন। তদন্তেও প্রভাব খাটিয়ে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> শাযরেহ হকের আইনজীবীরা আরো জানান, ট্রান্সকমের প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি সিমিন রহমানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জালিয়াতি করে ট্রান্সকমের বেশির ভাগ শেয়ার দখল </span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">৭টি ভুয়া এফিডেভিট ব্যবহার করে সেখানে ছোট বোন শাযরেহ হকসহ বাবা, ভাই ও অন্যদের স্ক্যান করা স্বাক্ষর ব্যবহার করে ট্রান্সকমের বেশির ভাগ শেয়ার ট্রান্সফারের দলিল তৈরি করেন এবং এগুলো যৌথ মূলধনী কম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরে (আরজেএসসি) দাখিল করেন সিমিন। এ কাজে তাঁর সহযোগী ছিলেন কম্পানি সেক্রেটারি কামরুল হাসান আর মো. রুহান মিয়া। শাযরেহ হকের নামে আরজেএসসিতে সিমিনের দায়ের করা এফিডেভিটের নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ২০২৩ সালে সৃজনকৃত বলে সম্প্রতি ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে দেওয়া ডাক বিভাগ ও ঢাকা জেলা প্রশাসকের অফিসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। মামলায় অভিযোগ ছিল, গ্রুপটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমান ও ট্রান্সকমের আরো পাঁচ কর্মকর্তা এটি করেছেন। এই মামলা গত ফেব্রুয়ারি মাসে গুলশান থানায় করেন শাযরেহ হক। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শাযরেহ হকের আইনজীবী আমিনুল হক আরো বলেন, আরজেএসসি থেকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যে নথি জব্দ করেছেন, তাতে দেখা যায় লতিফুর রহমানের স্ত্রী শাহনাজ রহমান ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর তাঁর আইনজীবী নজরুল ইসলামের মাধ্যমে সিমিন রহমানের নামে বেশির ভাগ শেয়ার ট্রান্সফার সংক্রান্ত নথি আরজেএসসিতে দাখিল করেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমিনুল হক বলেন, স্ট্যাম্প দুটির সত্যতা নিয়ে ঢাকার জেলা প্রশাসকের কাছে একটি প্রতিবেদন চান আদালত। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, যে ভেন্ডর থেকে এই স্ট্যাম্প দুটি সরবরাহের তথ্য রয়েছে, ওই ভেন্ডরের লাইসেন্স ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর বাতিল করা হয়। আর ২০২০ সালে কভিড থাকায় ওই ভেন্ডর কোনো স্ট্যাম্প উত্তোলন বা রেজিস্টার জমা করেননি।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তবে স্ট্যাম্প দুটি কবে নাগাদ অবমুক্ত করা হয়েছিল সেটি জানার জন্য ডিসি অফিস বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সহকারী নিয়ন্ত্রকের (স্ট্যাম্প) কাছ থেকে একটি প্রতিবেদন নিতে আদালতকে পরামর্শ দেয়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তার ভিত্তিতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ২ ডিসেম্বর ডাক বিভাগের সহকারী নিয়ন্ত্রক (স্ট্যাম্প) শুভ্র সূত্রধরের আদালতে দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, স্ট্যাম্প দুটি ২০২৩ সালের মে মাসে দ্য সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেডের কাছ থেকে সহকারী নিয়ন্ত্রক (স্ট্যাম্প) কর্তৃক গ্রহণ করা হয়েছিল।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলার অভিযোগে শাযরেহ হক অভিযোগ করেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমার পিতা মৃত লতিফুর রহমান জীবদ্দশায় ট্রান্সকম লিমিটেডের ২৩ হাজার ৬০০টি শেয়ারের মালিক থাকা অবস্থায় ২০২০ সালের ১ জুলাই মারা যান। আমিসহ অন্যান্য উত্তরাধিকারী আমার পিতার ওই শেয়ারের মুসলিম শরিয়া আইন অনুযায়ী মালিক। আমার পিতা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকা অবস্থায় কুমিল্লায় মৃত্যুবরণ করেন। মারা যাওয়ার প্রায় এক বছর আগে থেকেই তিনি কুমিল্লায় অবস্থান করছিলেন। আমার পিতার ২৩ হাজার ৬০০ শেয়ার থেকে ১ নম্বর আসামি (সিমিন রহমান) আমাকে এবং আমার ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে বঞ্চিত করার জন্য অবৈধভাবে নিজের নামে বেশি শেয়ার ট্রান্সফার করে হস্তগত করার হীন অসৎ উদ্দেশ্যে ১ নম্বর আসামি ২ থেকে ৫ নম্বর আসামিদের (ট্রান্সকম কর্মকর্তা) প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তিনটি ফরমসহ ১১৭ (হস্তান্তর দলিল) আরো গুরুত্বপূর্ণ শেয়ার ট্রান্সফারের বিভিন্ন কাগজপত্র আমার এবং আমার ভাইয়ের অজ্ঞাতসারে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে তৈরি করেন। আমার পিতার মৃত্যুর পর জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা কাগজপত্র ৩ নম্বর আসামি (কামরুল হাসান) রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসে জমা দেন। ১ নম্বর আসামি (সিমিন রহমান) থেকে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে ৪ ও ৫ নম্বর আসামি (মোহাম্মদ মোসাদ্দেক ও আবু ইউসুফ মো. সিদ্দিক) জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা কাগজে সাক্ষী হিসেবে সই করেন।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আরজেএসসি কর্তৃপক্ষ পিবিআইকে জানিয়েছে যে ট্রান্সকম লিমিটেডের ফরম ১১৭সহ বোর্ড মিটিং রেজুলেশনের আসল কাগজ সিমিন রহমান ও কম্পানির কাছে রয়েছে। বারবার চাওয়া সত্ত্বেও আজ অবধি সিমিন রহমান আসল ১১৭ ফরম এবং অন্যান্য ডকুমেন্ট কাউকে দিচ্ছেন না। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যেহেতু নিজেই সব জালিয়াতি করেছেন, এ জন্যই আসল কপি দিচ্ছেন না।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ভুয়া পারিবারিক সেটলমেন্ট দলিল </span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অভিযোগ রয়েছে, ট্রান্সকমের অধিকাংশ শেয়ার ভুয়া দলিল বানিয়ে দখল করা ছাড়াও সিমিন রহমান একটি ভুয়া পারিবারিক সেটলমেন্ট ডিড তৈরি করেছেন, যেটির উদ্দেশ্য ছিল লতিফুর রহমান তাঁর পরিবারের সবার সম্মতিতে সিমিনকে কম্পানির অধিকাংশ শেয়ার দিয়েছেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ওই ভুয়া পারিবারিক সেটলমেন্ট দলিলে লতিফুর রহমান, তাঁর ছেলে আরশাদ ওয়ালিউর রহমান, ছোট মেয়ে শাযরেহ হক, শাযরেহ হকের দুই ছেলের ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে ওই দলির তৈরি করেছেন। এ নিয়ে সিমিনসহ কম্পানির আরো পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মামলা চলমান।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তদন্তকাজের জন্য সিমিন ভুয়া দলিলের মূল কপি দিচ্ছেন না </span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">উল্লিখিত দুই মামলায় যে দুটি ভুয়া দলিল তৈরি করেছেন সিমিন রহমান, তার আসল কপি এই দুই মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সরবরাহ করছেন না। এই দুই ভুয়া দলিলের মূল কপি পাওয়ার জন্য গত ২৮ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে সিমিনসহ ছয় আসামির জামিন বাতিল ও রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে মহানগর হামিক আদালত ২৯ মে তা খারিজ করে দেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পরবর্তী সময়ে সেই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেছেন শাযরেহ হক। আগামী ১৬ জানুয়ারি সেই রিভিশন আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শাযরেহ হকের আইনজীবী বলেন, ওই ভুয়া দলিলের মূল কপি তদন্ত করলেই প্রতারণার সব প্রমাণ বেরিয়ে আসবে। ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে সিমিন সেগুলো আদালতে ও তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জমা দিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন ওই আইনজীবী।</span></span></span></span></span></p> <p><br /> <span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"><strong>তদন্তকাজে প্রভাব</strong></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শাযরেহ হক যে তিনটি মামলা করেছে তা তদন্তের দায়িত্বে রয়েছে পিবিআই। তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সিমিন রহমান তাঁর বোন, ভাই ও বাবার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে দলিলগুলো তৈরি করেছেন, সেটির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে শাযরেহ হকের আইনজীবী আমিনুল হক জানিয়েছেন, সিমিন নানাভাবে প্রভাব খাটিয়ে তদন্ত বিলম্ব ও ভিন্ন খাতে নিতে যত রকম প্রভাব আছে তা বিস্তার করছেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এসব অভিযোগের বিষয়ে সিমিন রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর আইনজীবী সিদ্দিকুল্লাহ মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমি তাঁর আইনজীবী হিসেবে বলছি, ৩০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি গ্রাস করার যে অভিযোগ করা হয়েছে, সেটি সত্য নয়। তবে ২৩ হাজার শেয়ারের যে কথা বলা হয়েছে, সেটি ঠিক আছে। আর যেহেতু এটি পারিবারিক বিষয়, এটি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। শরিয়া অনুযায়ী পরিবারের উত্তরাধীকারী হিসেবে তাঁরা যে দাবি করেছেন, সেটা তাঁরা পাবেন।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p>