<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বহুল বিতর্কিত </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বাতিল করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে এই আইনের অন্তত ১০টি ধারায় করা মামলা চলমান রাখতে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হেফাজত</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামের বিশেষ বিধান যুক্ত করে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাইবার নিরাপত্তা আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">-এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি)। প্রস্তাবিত খসড়াটি অনুমোদনের জন্য আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে। উপদেষ্টা পরিষদের সম্মতি পাওয়া গেলে অধ্যাদেশটি গেজেট আকারে জারি করা হবে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূত্র আরো জানায়, অধ্যাদেশটি কার্যকর হলে বিদ্যমান সাইবার নিরাপত্তা আইনের ধারা ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২২, ২৩, ২৭, ৩০, ৩২ ও ৩৫-এর অধীনের মামলা চলমান থাকবে। এসব ধারার মামলার মধ্যে বেআইনিভাবে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে প্রবেশ করা, কম্পিউটার সিস্টেম ও ডিজিটাল ডিভাইসে প্রবেশ করে ক্ষতিসাধন বা কম্পিউটার সোর্স কোড বদল করা সংক্রান্ত বিদ্যমান সব মামলা চলবে। এ ছাড়া যেকোনো ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক জালিয়াতি বা প্রতারণা, সাইবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, ব্যাংকিং চ্যানেলের ই-ট্রানজেকশন, হ্যাকিং এবং কম্পানি কর্তৃক অপরাধসংক্রান্ত মামলা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রস্তাবিত খসড়ায় বলা হয়, সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ চিহ্নিত, প্রতিরোধ ও দমন এবং এসব অপরাধের বিচার নিশ্চিত করতে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করা হয়। দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও সুধীসমাজের প্রতিনিধিরা আইনটি বাতিলের দাবি জানান। আইনটি সংশোধনের বিষয়ে টিআইবিও একটি প্রস্তাব দেয়, যা বিদ্যমান পরিস্থিতি ও বাস্তবতা বিবেচনায় আমলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তবে বিদ্যমান সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ বাতিল করা হলেও এর অধীনে অনিষ্পন্ন মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে যাতে কোনো বাধা না থাকে, সে জন্য খসড়া </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাইবার নিরাপত্তা আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">-এর ৩ নম্বর অনুচ্ছেদে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হেফাজত</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামের নতুন অনুচ্ছেদ যোগ করা হয়েছে। সরকার কর্তৃক মামলা প্রত্যাহার করা না হইলে, ওই আইনের ধারা ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২২, ২৩, ২৭, ৩০, ৩২ ও ৩৫-এর অধীন তদন্তাধীন ও অনিষ্পন্ন মামলা সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে চলমান থাকবে। এসব ধারার অধীন যেসব মামলার রিপোর্ট, অভিযোগ বা চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে বা তদন্তাধীন আছে, সেসব মামলা সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলা বলে গণ্য হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেভাবে সাইবার নিরাপত্তা আইন : </span></span></strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> সাংবাদিক, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবীদের পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বিরোধিতার মধ্যেই ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সংসদে পাস হয়েছিল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। সেই প্রতিবাদ সামাল দিতে ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম বদল করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়। অনেকটা পুরনো আইনই নতুন নামে করা হয়। এটি নিয়েও ছিল অংশীজনদের মধ্যে ক্ষোভ-অসন্তোষ। আইনটি নিয়ে গত ৩০ এপ্রিল এক ওয়েবিনারে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে প্রধান গবেষক ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ, যিনি সরকার কর্তৃক গঠিত সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান। তাঁর গবেষণায় বলা হয়, ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা এক হাজার ৪৩৬টি মামলার তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এসব মামলায় কমপক্ষে চার হাজার ৫২০ জনকে আসামি করা হয়। সবচেয়ে বেশি অভিযুক্ত হয়েছেন রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিক। আর অভিযোগকারীদের মধ্যে ক্ষমতাসীন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা শীর্ষে আছেন। সবচেয়ে বেশি মামলা করা হয়েছে ২০২১ সালে। মামলার শিকার ৪৫১ জনের মধ্যে ২০৯ জন সাংবাদিক জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত এবং ১৯৭ জন স্থানীয় সাংবাদিক। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শেখ হাসিনার পতনের পর গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেও সাইবার নিরাপত্তা আইনে একাধিক মামলা করা হয়েছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং সেনাপ্রধানকে উদ্দেশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার হারিয়াছড়ি গ্রামের মোকতার হোসেনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে একই গ্রামের মোহাম্মদ সাইফুদ্দীন মামলা করেন। সাইবার ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামের বিচারক জহিরুল হকের আদালতে মামলা করা হয়। এতে তাঁর বিরুদ্ধে পবিত্র কোরআন ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগও আনা হয়। মামলার আবেদন গ্রহণ করে আদালত অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) আগামী ২৭ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইনটি বাতিলের দাবি আরো জোরালো হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের আইন ও তথ্য উপদেষ্টাও আইনটি বাতিলে জোরালো বক্তব্য দেন।</span></span></span></span></span></p>