<p style="text-align:justify">গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর পর আওয়ামী লীগের দলীয় কাঠামো অনেকটাই তছনছ। রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রায় শূন্যের কোঠায়। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগ করতে হওয়ায় নেতৃত্বশূন্যতাও প্রকট। কঠিন চাপে থাকা এই দলের সমমনা ১৪ দলীয় জোটও অনেকটা নিষ্ক্রিয়।</p> <p style="text-align:justify">জোটের হেভিওয়েট নেতাদের অনেকে কারাবন্দি। কেউ কেউ আত্মগোপনে। এমন পরিস্থিতে রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান ফিরিয়ে আনতে পুরনো মহাজোটের রূপরেখায় ভেতরে ভেতরে মহাঐক্যের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। দলটির আহ্বানে জোটের সবাই যে সাড়া দিচ্ছে এমন নয়; কোনো কোনো দল একসঙ্গে থাকতে চায়। কোনোটি নিমরাজি। আবার কেউ আছে, যারা এখনই সায় দিচ্ছে না। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ঢাকায় বজ্রসহ বৃষ্টি ঝরতে পারে" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/06/1730860360-349d33fc7c18bb5c69aa90c66aeed3e2.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ঢাকায় বজ্রসহ বৃষ্টি ঝরতে পারে</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/dhaka/2024/11/06/1443343" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট মূলত রাজনৈতিক জোট। এটি সরকার তৈরির জোট নয়। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটের শরিকদের জন্য আওয়ামী লীগ মাত্র সাতটি আসন ছেড়েছিল। ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ শরিক দলগুলোকে অবজ্ঞা করে গেছে।</p> <p style="text-align:justify">গেল নির্বাচনের পর জোটের অস্তিত্বসংকটে পড়েছিল। এমনকি এক পর্যায়ে জোটের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা। পরিস্থিতি এখন পুরোই পাল্টে গেছে। খোদ আওয়ামী লীগই প্রয়োজনীয়তা বোধ করছে। দলটি এখন অস্তিত্বের খাতিরে সঙ্গী চায়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে দলের কেন্দ্র থেকে জোটকে শক্তিশালী করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ কেউ জোটের শরিক দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে শুরু করেছেন।</p> <p style="text-align:justify">দেশের বাইরে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে কালের কণ্ঠ’র এই প্রতিবেদকের কথা হয়েছে। তাঁরা জানান, দেশে এই মুহূর্তে রাজনীতি করার পথ অনেকটাই রুদ্ধ। শরিক ছোট ও মাঝারি রাজনৈতিক দলগুলোও নিজেদের কর্মসূচি পালনে সাহস পাচ্ছে না। জোটের বেশ কয়েকজন শরিক নেতা এখন কারাগারে আছেন। যাঁরা বাইরে আছেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো হচ্ছে।</p> <p style="text-align:justify">আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শুধু ১৪ দলীয় জোট নয়, প্রয়োজনে পুরনো মহাজোট ফিরে আসতে পারে। আওয়ামী লীগের সেই ধরনেরও প্রস্তুতি আছে।’ </p> <p style="text-align:justify">আওয়ামী লীগের এক প্রবীণ নেতা বলেছেন, ‘জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানাই। এই সরকার গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চায় না, সেটি পরিষ্কার।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="দুপুরের মধ্যে ১১ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/06/1730859977-2770c7be65da0d7fd3b0acca487b9c2d.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>দুপুরের মধ্যে ১১ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/06/1443342" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘১৪ দলীয় জোট সক্রিয় করতে আমরা যোগাযোগ বাড়াচ্ছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা কাজ করছি। শুধু সময়ের অপেক্ষা, মহাঐক্যের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’</p> <p style="text-align:justify">আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের বড় অংশীদার ছিল জাতীয় পার্টি। ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় জাতীয় পার্টি জোট থেকে বের হয়ে আলাদা ভোট করে। দশম সংসদে জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের আসনে বসে। এরপর ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে গঠিত সংসদেও দলটির বিরোধী অবস্থান ছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে নাঙলের জায়গা হচ্ছে না। এমনকি ৩১ অক্টোবর জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="আজ ৬ নভেম্বর, দিনটি কেমন যাবে আপনার?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/06/1730859596-949badd3dad97d739d3ce3d200406f70.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>আজ ৬ নভেম্বর, দিনটি কেমন যাবে আপনার?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/lifestyle/2024/11/06/1443341" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা অনেক জোটে গেছি। এতে আমাদের শুধু সুনাম নষ্ট হয়েছে। লোকে বলে আমাদের নাকি নিজস্ব কোনো ভোট নেই। তাই এবার এককভাবে ভোট করব। জোট ছাড়া দেখতে চাই কী হয়। ফলে আওয়ামী লীগ জোটের প্রস্তাব দিলেও আমরা যাব না।’ </p> <p style="text-align:justify">২০০৪ সালে ২৩ দফার ভিত্তিতে ১৪ দলীয় জোট গঠিত হয়। বর্তমানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এক ছাতার নিচে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), গণ-আজাদী লীগ, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), তরীকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় পার্টি (জেপি) রয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">২০০৮ সালের পর থেকে টানা চারবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করায় জোটের রাজনৈতিক কার্যক্রমে গতি কমে। মাঠের রাজনীতিতে জোটের নিষ্ক্রিয়তায় ছোট দলগুলো আরো ছোট হয়ে যায়। দলগুলোর আওয়ামী লীগের ওপর নির্ভরতা এতটাই বেড়েছে যে এখন তাদের অস্তিত্বও সংকটের মুখে।</p> <p style="text-align:justify">সময়ের পরিক্রমায় আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতাচ্যুত। অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ দলের মন্ত্রী, এমপি, নেতাসহ সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে। ফলে আওয়ামী লীগের এসব অপকর্ম ও ভুলের দায় জোটের কোনো কোনো শরিকদল নিতে চাচ্ছে না। আওয়ামী জোটের বর্তমান অবস্থান দুর্বল তা সব দলের কাছেই পরিষ্কার। তাই দলগুলো জোট নিয়ে এখনই খুব আশাবাদী হতে পারছে না। তবে পরিস্থিতি বুঝে ভিন্ন আঙ্গিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকতে চায় জোটের শরিকরা তাদের অস্তিত্বের খাতিরে। প্রয়োজনে নতুন করে জোটের পরিধি বাড়ানোর কথা বলেছেন অনেকে। </p> <p style="text-align:justify">ওয়াকার্স পার্টির এক প্রবীণ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, আওয়ামী লীগের কোনো ভুলই নেই, এটা বলা ঠিক হবে না। আবার এই মুহূর্তে ১৪ দল চালিয়ে নেওয়া কঠিন—এটাও সত্য। কিন্তু আমাদের জোট আদর্শিক। ৫ আগস্ট যা ঘটল, তাতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ একটা অবস্থান তৈরি হয়ে গেছে। ১৪ দলীয় জোট টিকুক বা না টিকুক, এখন সময় এসেছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার।</p> <p style="text-align:justify">জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দলের মূল নেতা জেলে, তাই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। এখন আমাদের মূল লক্ষ্য দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ভাইয়ের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। উনার শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ। কারাগারে উন্নত চিকিৎসা সম্ভব না। আমাদের নেতাকর্মীদের নামে শতাধিক মামলা হয়েছে—এগুলো নিয়েও আমাদের ভাবতে হচ্ছে।’</p>