<p>এই তো বছরের জুলাই মাসের ঘটনা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে পুরো দেশ উত্তাল। ছাত্রদের দাবির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান। দমাতে কারফিউ থেকে শুরু করে প্রতিরোধ সবই করে সরকার। ওই সময় তখন হোয়াটসঅ্যাপে খোলা হয় ‘আলো আসবেই’ নামেই একটি গ্রুপ। যে গ্রুপে যুক্ত হন দেশের সরকারপন্থী সব অভিনয়শিল্পী। ছিলেন দুজন মন্ত্রী ও সাংসদ। পরে ঘটে যায় ৫ আগস্ট। ছাত্র-জনতার দাবির মুখে পালিয়ে যান স্বৈরাচার সরকার শেখ হাসিনা। তার পরই প্রকাশ পায় এই গ্রুপের কথা। যেখানে একে একে বেরিয়ে আসে সব চেনা নাম, চেনা মুখ। ‘আলো আসবেই’ গ্রুপটিতে সেখানকার সদস্য শিল্পীদের কথোপকথনের কিছু স্ক্রিনশট ফাঁস হলে এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। কারণ, এই গ্রুপের সবাই ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ফলে ওই গ্রুপটিতে তারা ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে নানা পদক্ষেপের কথা জানান। এর মধ্যে নব্বইয়ের দশকের চিত্রনায়িকা অরুণা বিশ্বাস আন্দোলন দমাতে ছাত্র-জনতার ওপর গরম পানি নিক্ষেপের পরামর্শ দেন। যা প্রকাশ হওয়ার পর চারিদিকে ছিঃ ছিঃ পড়ে যায়। ব্যাপকভাবে সমালোচিত হতে শুরু করেন ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের সদস্য শিল্পীরা। নিন্দা জানান অনেক তারকাও।</p> <p>সেই গ্রুপে ছিলেন ছোট পর্দার অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন অভিনয়শিল্পী সংঘের কার্যকরী কমিটির দুজন। তারা হলেন উর্মিলা শ্রাবন্তী কর ও সাজু খাদেম। আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ দুই অভিনয়শিল্পীকে শোকজ বা কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছিল অভিনয়শিল্পী সংঘ। নির্দিষ্ট সময়ের পর তারা জবাব দিয়েছিলেন। কিন্তু জবারের পর কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি শিল্পীদের এই সংগঠন। বহাল তবিয়তে তারা আছেন কমিটিতে। সংগঠনে সাজু খাদেম সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ঊর্মিলা কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের শোকজ-পরবর্তী ব্যবস্থা না নেওয়া প্রসঙ্গে সংগঠনটির সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম বলেন, ‘গত ৫ সেপ্টেম্বর কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় সাজু ও ঊর্মিলাকে শোকজ করার সিদ্ধান্ত হয়। পরে ৭ সেপ্টেম্বর নোটিশ পাঠানো হয়। গঠনতন্ত্রের ৭-এর ৫ ধারা মোতাবেক তাদের শোকজ করা হয়। তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাবও দেন। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’</p> <p>কারণ কী জানতে চাইলে বলেন,‘ এর মধ্যে জরুরি সভা ডাকা হয়। সেখানে সংস্কার করতে সংঘে আরেকটা কমিটি গঠন করা হয়। তখন সবাই মিলে পদত্যাগের কথা বললে সেটা না করার বিষয়ে অনুরোধ আসে। তাই আমরা যেহেতু রয়েছি তাই তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’</p> <p>আদৌ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না বা বহিষ্কার করা হবে কি না, সে বিষয়ে কিছু বলেননি নাসিম। তিনি জানান, আগামী জানুয়ারিতে সংগঠনটিন সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে তারপর নির্বাচন। আপাতত এ রকমই পরিকল্পনা।</p>