<p>সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। গতকাল রবিবার বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের এক অনলাইন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ফলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষাসহ কোনো ধরনের কার্যক্রমে অংশ নেবেন না।</p> <p>ফেডারেশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল হক গত রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের সভায় ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ফেডারেশনের ২১ জন নেতা যুক্ত ছিলেন। সভায় সম্মিলিত সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় কর্মসূচি চলমান থাকবে। আমাদের দাবি কিন্তু তিনটা। এর মধ্যে একটা হচ্ছে প্রত্যয় থেকে অন্তর্ভুক্তি বাতিল। কিন্তু আমাদের বলা হচ্ছে, ২০২৪ সালের পরিবর্তে তা ২০২৫ সাল থেকে চালু হবে। কিন্তু আমরা চাই এই প্রত্যয়ে  আমাদের রাখা যাবে না। এ ছাড়া আরো অনেক রকম গলদ রয়েছে। এতে মেধাবীরা শিক্ষকতায় আসবে না। তাই আমরা আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’</p> <p>অধ্যাপক আব্দুল হক আরো বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকরা চরম বৈষম্যের শিকার। ২০১৫ সালে আমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল সুপার গ্রেড দেওয়ার। কোন প্রক্রিয়ায় তা বাস্তবায়ন হবে সেটি নিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এত দিনেও সেটা হয়নি। আরেকটি দাবি, স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের। আশপাশের সব দেশেই শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল। কিন্তু আমাদের দেশে নেই। আসলে সরকারের অভ্যন্তর থেকে একটি মহল নানাভাবে আমাদের সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে।’  এদিকে গতকাল রবিবার পূর্বঘোষিত সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মূল ফটকে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়। তবে অন্য দিনের চেয়ে শিক্ষকের সংখ্যা ছিল কম। এ ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও তাঁদের কর্মসূচি পালন করেন।</p> <p>গত শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করে। এরপর এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘২০২৫ সালের ১ জুলাই শিক্ষকদের পেনশন স্কিমের কার্যকারিতা শুরু হবে। এর আগে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ২০২৪ সালের যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তা সঠিক নয়। সবার পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্তি হবে ১ জুলাই, ২০২৫। এটা তাদের পরিষ্কারভাবে বলেছি।’</p> <p>শিক্ষকদের সুপার গ্রেড দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের লিখিত দাবি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর সমীপে উত্থাপন করব। পরবর্তী সিদ্ধান্ত আমরা আলাপ-আলোচনা করে নেব। আলাপ-আলোচনা করে আশা করি সমাধান আসবে।’</p>