<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পানির অন্য নাম জীবন। সেই পানির অন্যতম উৎস নদী-নালা, খাল-বিল ইত্যাদি। নদীদূষণ, খালদূষণ গোটা সমাজের জন্য ক্ষতিকর। পানির উৎসগুলো দূষিত করার ফলে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে। নতুন নতুন রোগ-ব্যাধির সৃষ্টি হয়। জীববৈচিত্র্য প্রভাবিত হয়। তাই কোনো মুসলমানের জন্য খাল-বিল, নদী-নালা দূষিত হয় এমন কাজ করা যেমন জায়েজ নয়, তেমনি কেউ এই কাজে লিপ্ত থাকলে তাকে এর সুযোগ দেওয়াও উচিত নয়। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ক্ষতি করাও যাবে না, ক্ষতি সহাও যাবে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৩৪১)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শুধু তা-ই নয়, বিশুদ্ধ পানির অন্য নাম জীবন। মহান আল্লাহর এই অমূল্য নিয়ামতের ওপর সব প্রাণীই নির্ভরশীল। তাই সেই পানি কিংবা পানির উৎসকে দূষণের মাধ্যমে বিষাক্ত করে ফেলাও এক ধরনের ফাসাদ, যা মহান আল্লাহ হারাম করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, স্মরণ কর, যখন মুসা (আ.) তার কওমের জন্য পানি প্রার্থনা করল, আমি বললাম, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তোমার লাঠি দ্বারা পাথরে আঘাত কর।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ফলে তা থেকে ১২টি ঝরনা প্রবাহিত হলো, প্রতিটি গোত্র নিজ নিজ পানের জায়গা চিনে নিল, (বললাম) </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আল্লাহ প্রদত্ত রিজিক থেকে তোমরা পানাহার কর এবং দুষ্কৃতকারীর মতো পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি কোরো না</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(সুরা : বাকারা, আয়াত : ৬০)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, বনি ইসরাঈলকে জিজ্ঞেস কর, তাদের আমি কত সুস্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম। যে ব্যক্তি তার নিকট আল্লাহর নিয়ামত এসে যাওয়ার পর তা পরিবর্তন করে ফেলে, (তার মনে রাখা উচিত যে) আল্লাহর শাস্তি বড় কঠিন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(সুরা : বাকারা, আয়াত : ২১১)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তা ছাড়া খাল-বিল, নদী-নালা ইত্যাদির পানি গোটা মানবজাতির হক। শুধু মানবজাতি নয়, প্রাণিকুলের জীবন রক্ষার সঙ্গে এর সূত্র রয়েছে, একে দূষিত করা সমগ্র প্রাণিজগতের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের শামিল। যেহেতু হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু খিদাশ (রহ.) বিশ্বনবী (সা.)-এর জনৈক মুহাজির সাহাবির কাছ থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, আমি বিশ্বনবী (সা.)-এর সঙ্গে তিনবার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, মুসলিমরা তিনটি জিনিসে সমানভাবে অংশীদার</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পানি, ঘাস ও আগুন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৭৭)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অতএব, সেই পানির উৎসকে দূষিত করা গোটা উম্মাহর বিরুদ্ধে আগ্রাসন বৈ কী হতে পারে!</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মানুষকে পানিবাহিত রোগ ও ক্ষতি থেকে বাঁচানোর জন্য নবীজি (সা.) পানি দূষিত হয়ে যায় এমন কাজ করতে নিষেধ করেছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত : রাসুল (সা.) বদ্ধ পানিতে প্রস্রাব করতে নিষেধ করেছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(নাসায়ি, হাদিস : ৩৫)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন গোসল ফরজ অবস্থায় (নাপাক অবস্থায়) বদ্ধ পানিতে গোসল না করে। তিনি বলেন, তাহলে সে কিভাবে গোসল করবে, হে আবু হুরায়রা! তিনি বলেন, কোনো পাত্রে পানি তুলে নিয়ে গোসল করবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৬০৫)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শুধু খাল-বিলের পানিই নয়, ঘরে জমিয়ে রাখা সুপেয় পানিও যাতে কোনো ধরনের দূষণের শিকার না হয়, এ জন্য নবীজি (সা.) তা ঢেকে রাখার নির্দেশ দিতেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত,</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা (রাতে) বাসনগুলো ঢেকে রাখবে, মশকগুলোর প্রবেশদ্বার আটকে রাখবে, ফটকগুলো বন্ধ করবে এবং বাতিগুলো নিভিয়ে দেবে।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(মুসলিম, হাদিস : ৫১৪১)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অতএব, প্রতিটি মুমিনের উচিত, পানি ও পানির উৎস তথা খাল-বিল, নদী-নালা দূষণ থেকে বিরত থাকা এবং দূষণ রোধে যার যার অবস্থান থেকে সচেতন হওয়া, কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।</span></span></span></span></p>