<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তারল্য সংকটে থাকা দুর্বল তিন ব্যাংককে ২৬৫ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে সবল চার ব্যাংক। তারল্য সহায়তা দেওয়া ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে  ডাচ-বাংলা ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তবে সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় তারল্য সহায়তা পেলেও গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ন্যাশনাল ব্যাংকের দিলকুশা শাখায় গিয়ে দেখা যায়, টাকা জমা দেওয়ার লাইনে কোনো লাক নেই। কিন্তু উত্তোলনের লাইনে উপচে পড়া ভিড়। শাখাটির তথ্য মতে, প্রতিদিন কোটি টাকা উত্তোলনের বিপরীতে টাকা জমা পড়ছে নামমাত্র। ফলে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী টাকা ফেরত দিতে হিমশিম খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। শুধু ন্যাশনাল নয়, টাকা ফেরত দেওয়ার চাপে আছে আরো অন্তত ১০টি বাণিজ্যিক ব্যাংক। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের মতিঝিলের একটি শাখায় টাকা তুলতে আসা গ্রাহক মনিরুল ইসলাম জানান, গত মাসে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে দিত। পরে ১০ এবং এখন একজনকে পাঁচ হাজার টাকা করে দিচ্ছে। কিন্তু অনেকের বাসায় রোগী রয়েছে। তাদের চিকিৎসার জন্য টাকা প্রয়োজন। ব্যাংকে টাকা তুলতে এলে পাওয়া যাচ্ছে না নিজের টাকা। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ বিষয়ে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফোরকান উল্লাহ বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতার টাকাটা যদি ভেঙে ভেঙে না পেয়ে একসঙ্গে পাই, তাহলে ভালো হয়। অনেক সময় দাতা ব্যাংকগুলোর কাছে টাকা পাওয়ার জন্য অপেক্ষাও করতে হয়। এই সময়টা কমিয়ে আনতে পারলে আমরা আরো দ্রুত টাকা ফেরত দিতে পারব।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিআইবিএমের সাবেক মহাপরিচালক মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দীর্ঘ সময় ধরে আর্থিক সহায়তা দিয়ে টেনে নেওয়া ঠিক হবে না ব্যাংকগুলোকে। প্রয়োজনে অবসায়নের দিকে যেতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সাপোর্ট দিতে পারে। কিন্তু এই সাপোর্ট অনাদিকাল পর্যন্ত চলতে পারে না। ব্যাংকগুলোকে নিজের সামর্থ্যেই ঘুরে দাঁড়াতে হবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করা হয়। এগুলোসহ মোট ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নামে-বেনামে ব্যাংকগুলো থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে পাচারের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থা। নামে-বেনামে টাকা বের করে নেওয়ায় তীব্র তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে ব্যাংকগুলোতে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআরআর ও এসএলআর রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। পাশাপাশি কিছু ব্যাংকের বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চলতি হিসাবেও ঘাটতি তৈরি হয়েছিল। ঋণাত্মক হলেও লেনদেন অব্যাহত রাখার সুযোগ দিয়েছিলেন সাবেক পলাতক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। টাকা ছাপিয়ে দেওয়া সেই বিশেষ সুবিধা এখন বন্ধ করে দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ অবস্থায় সাময়িক সংকট মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টির বিপরীতে ধারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর দুর্বল ব্যাংকের কাছ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ডিমান্ড প্রমিসরি (ডিপি) নোট নিয়ে রাখবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কোনো ব্যাংক সংকটে পড়লে সাধারণভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিশেষ ধার দেওয়া হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক ধার দেওয়া মানে সরাসরি টাকা ছাপানোর মতো। এতে মুদ্রা সরবরাহ বেড়ে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ পড়ে। এমনিতেই এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি। যে কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি টাকা না দিয়ে অন্য ব্যাংক থেকে ধারের ব্যবস্থা করছে। এর মানে, বাজারের টাকা এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে যাবে। ফলে মূল্যস্ফীতির ওপর বাড়তি প্রভাব পড়বে না। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টির মানে হলো, কোনো কারণে এসব ব্যাংক ব্যর্থ হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই টাকা দেবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সহায়তার পাশাপাশি ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব কৌশল থাকা উচিত। কারণ গ্যারান্টি সহায়তা দিয়ে যেকোনো ব্যাংক ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। ঋণ আদায়ে তাদের নিজস্ব কৌশল থাকতে হবে। যদিও কিছু ব্যাংক ঋণ আদায়ে খুব ভালো করছে। তাদের মতো অন্যদেরও উদ্যোগী হতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তার আশায় সব ঠিক হবে না।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> এর আগে গত সপ্তাহে তারল্য ঘাটতি মেটাতে দুর্বল সাত ব্যাংককে ছয় হাজার ৫৮৫ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে সবল ১০ ব্যাংক।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>