<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নস ভেল স্টেডিয়াম। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই মাঠ বাংলাদেশকে অভিশপ্ত এক মুহূর্তের সাক্ষী করেছিল। সেই দুঃসহ স্মৃতি হয়তো কখনোই মুছবে না। চলমান সফরে আর্নস ভেলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটি খেলবে বাংলাদেশ, গতকাল মহান বিজয় দিবসে যার প্রথমটিতে ৭ রানের জয় কিছুটা হলেও স্বস্তির বাতাস হয়ে আসবে সফরকারী দলের ড্রেসিংরুমে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জ্যামাইকায় দারুণ এক জয়ে টেস্ট সিরিজটি ভালোভাবে শেষ করেছিল বাংলাদেশ। তবে ওয়ানডে সিরিজে বিপরীত চিত্র। নিজেদের পছন্দের সংস্করণে ধবলধোলাই হওয়ার জ্বালা গায়ে জড়িয়ে নামতে হয়েছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে। প্রথম ম্যাচ অবশ্য বলছে, ওয়ানডে সিরিজের ধাক্কা সামলাতে সফল হয়েছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে সহজ জয়ের পথ থেকে ম্যাচটা যখন ছুটে যাচ্ছিল, তখনো হাল না ছেড়ে উজ্জ্বীবিত ছিল পুরো দল। তার ফলও এসেছে তরুণ পেসার হাসান মাহমুদের হাত ধরে। শেষ ওভারে ম্যাচ জিততে স্বাগতিকদের দরকার ছিল ১০ রান। শুরুর ধাক্কার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ম্যাচে ফেরানো রোভম্যান পাওয়েল উইকেটে থাকায় জয়ের পাল্লা ভারী ছিল স্বাগতিকদের দিকে। তবে হাসানের ছিল ভিন্ন ভাবনা! প্রথম বলে আলজারি জোসেফ সিঙ্গেল নেওয়ার পরের বলটি ডট খেলেন পাওয়েল। তৃতীয় বল শেষে আর্নস ভেলের গ্যালারি যেন মৃত্যুপুরী! হাসান ডেলিভারিটা করেছিলেন অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে। তা তুলে মারতে চেয়েছিলেন পাওয়েল। কিন্তু বল ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জায়গা করে নেয় উইকেটকিপার লিটন দাসের গ্লাভসে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">চতুর্থ বলে ওবেদ ম্যাকয় সিঙ্গেল নিয়ে দেন আলজারি জোসেফকে। তাকে বোল্ড করে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে বাংলাদেশকে অন্য রকম এক প্রথমের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন হাসান। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে এই ম্যাচের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৬ ম্যাচের পাঁচটি জিতেছিল বাংলাদেশ। এর কোনোটিই ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ছিল না। এবার প্রথম তাদের মাটিতে জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দারুণ এই জয়ে ছোট ছোট অবদান অনেকের। ব্যাটিংয়ে যেমন সৌম্য সরকার, জাকের আলি, মেহেদী হাসান ও শামীম হোসেনের কথা না বললে নয়। আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৩০ রানের মধ্যে ড্রেসিংরুমে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম (৬), লিটন দাস (০) ও আফিফ হোসেন (৮)। চতুর্থ উইকেটে জাকেরকে নিয়ে ৫৭ রান যোগ করেন সৌম্য। ২৭ বলে ২ ছক্কা ও ১ চারে ২৭ রান করা জাকেরকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন রোমারিও শেফার্ড। সঙ্গী হারানো সৌম্য নিজেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ওবেদ ম্যাকয়ের বলে বোল্ড হয়ে দলীয় ৯৬ রানে ফেরেন সৌম্য। ৩২ বলে ৩ ছক্কা ও ২ চারে ৪৩ রান করেন এই বাঁহাতি ওপেনার।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এখান থেকে দলের সংগ্রহটাকে দেড় শ ছুঁই ছুঁই দূরত্বে নিয়ে যান শেখ মেহেদী ও শামীম। ৪৯ রানের জুটিতে শামীমের ব্যাটের দুরন্তপনা বাংলাদেশকে লড়ার সাহস সঞ্চার করে। লম্বা সময় পর দলে ফেরা বাঁহাতি ব্যাটারের ইনিংসটির স্ট্রাইক রেট ২০৭.৬৯। ১৩ বলে ২৭ রানের ইনিংসটি সাজানো ৩ ছক্কা ও ১ চারে। তাতে ১৪৭ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। সফরকারী দলের ইনিংসের অর্ধেকের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে ১৪৮ রানের লক্ষ্যটাকে পাহাড়সম বানিয়ে ফেলেন বাংলাদেশের বোলাররা। আসলে মেহেদী। এই অফ স্পিনারের ঘূর্ণিতে দিশাহারা ক্যারিবিয়ানরা ৩৮ রানের হারায় ৫ উইকেট। এর ৪টিই নেন মেহেদী। ম্যাচসেরার পুরস্কারও জিতেছেন তিনি।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">স্কোর ৩৮ থেকে ৬১ রানে যেতে আরো দুই উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিপর্যয় সামলে পুরো ম্যাচের চিত্র বদলে দেয় শেফার্ড-পাওয়েল জুটি। পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নেওয়া পাওয়েলকে সঙ্গ দেন শেফার্ড। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের সমীকরণ তখন সহজ থেকে সহজতর হচ্ছিল। ১৮তম ওভারে শেফার্ডকে ফিরিয়ে ৩২ বলে ৬৭ রানের জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ। ১৬ বলে ২২ রান করেন শেফার্ড। শেফার্ডের বিদায়ের পরও ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের হাতে ছিল। কিন্তু শেষ দুই ওভারের ৯ বল পাওয়েল উইকেটে থাকার পরও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৮ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি বাংলাদেশের দুর্দান্ত বোলিংয়ে। তাতে অভিশপ্ত আর্নস ভেল সাক্ষী হলো বাংলাদেশের অন্য রকম প্রথমের।</span></span></span></span></span></p>