<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গত ২০ জুন শফিকুর রহমান ও ফরিদা ইয়াসমিন দম্পতিকে হত্যা করা হয়। নিহত দম্পতির ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন। এই জোড়া খুনের ঘটনায় করা মামলায় এ পর্যন্ত সন্দেভাজন বা দোষী বলে কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর মৌচাক মার্কেট এলাকায় মাথায় ইট পড়ে দীপান্বিতা বিশ্বাস নামে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তার মৃত্যু ঘটে। ওই ঘটনায় তার স্বামী তরুণ কুমার বিশ্বাস রাজধানীর রমনা মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই দুই হত্যা মামলায় অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করা হলেও তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই বলে বাদীপক্ষের ভাষ্য। তারা বলছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর করা বিভিন্ন মামলায় পুলিশের ওপর চাপ বেড়েছে। এতে অন্য ঘটনায় করা মামলাগুলোর গুরুত্ব কমে যাচ্ছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ডিএমপিতে আট হাজার ৪৮০টি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। এসব মামলা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঘটা ঘটনাগুলোর মামলা ছাড়া অন্যগুলোর অগ্রগতি ধীর।  ডিএমপি বলছে, তাদের লোকবলের ঘাটতি নেই। সব মামলার তদন্ত যথাযথভাবে চলছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জোড়া খুনের মামলার বাদী মো. আবদুল্লাহ আল মামুন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মামলাটি ডিবির (পুলিশের গোয়েন্দা শাখা) কাছে পড়ে আছে। তদন্তে অগ্রগতি নেই। সরকার পতনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিভিন্ন ঘটনায় করা মামলায় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাই আদালতের কাছে আবেদন করব, যাতে পিবিআইকে এই মামলাটির তদন্তের ভার দেওয়া হয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মৃত ব্যাংক কর্মকর্তার স্বামী ও মামলার বাদী তরুণ কুমার বিশ্বাস বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ মামলার অগ্রগতির বিষয়ে কিছুই জানি না। তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। তবে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা এখনো আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। এ পর্যন্ত কোনো আসামিই শনাক্ত হয়নি। যদি কেউ এই ঘটনার পেছনে থেকে থাকে, তাহলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশে অনেক রদবদল হয়েছে। এতে অনেক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদল হয়েছেন। সাবেক সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় করা মামলায় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান, গ্রেপ্তার আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এবং নতুন মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর কাজ করছে পুলিশ। একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে একাধিক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে। এতে একজন সব মামলার তদন্তে সেভাবে কাজ করতেও পারছেন না। এতে অন্য মামলা আড়ালে পড়ে যাচ্ছে। তবে পর্যায়ক্রমে এসব মামলার তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৭ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ২৮৯টি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে ২২৮টি নাশকতা ও ৬১টি হত্যা মামলা ছিল। এই সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে এসব মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূত্র জানায়, তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে এসব মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। পরে মামলাগুলোর নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ আমলে করা রাজনৈতিক মামলাও তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। গত ৫ আগস্টের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেন্দ্রিক ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, গুমসহ নানা অভিযোগে সাড়ে চার শতাধিক মামলা হয়েছে। বর্তমানে ডিএমপিতে আট হাজার ৪৮০টি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসব মামলা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় করা মামলা ছাড়া অন্য মামলায় তেমন অগ্রগতি নেই।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডিএমপিতে জনবল ঘাটতি নেই। যেকোনো অপারেশন পরিচালনার সক্ষমতা রয়েছে। এই জনবল দিয়ে প্রত্যেক মামলা আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে থাকি। এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হয় না। বর্তমানে স্বাভাবিক তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেন্দ্রিক মামলাগুলোয় সরাসরি জনগণ সম্পৃক্ত। তাদের সামনেই ঘটনাগুলো ঘটেছে। তাদের সহযোগিতায় পুলিশ সহজেই আসামি চিহ্নিত করতে পারছে। তবে অন্য সব মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে এমন না-ও হতে পারে। সেখানে কে বা কারা জড়িত, সেটা গভীর তদন্ত ছাড়া বের করা সম্ভব না। সে ক্ষেত্রে মামলার ফলাফল আসতেও সময় লাগে।</span></span></span></span></p>