<p style="text-align:justify">রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শ্যামাসুন্দরী খালকে গিলে রাখা ১১৭ জন দখলবাজের কবজা থেকে মুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশ ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে এই কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় তিন দখলদারের কাছ থেকে জমি উদ্ধার করে লাল পতাকা টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। </p> <p style="text-align:justify">এর আগে অসংখ্যবার উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েও নানা কারণে তা পারেনি প্রশাসন।</p> <p style="text-align:justify">সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় ১৬ কিলোমিটার এই খালের স্থান ভেদে ১২০ ফুট চওড়া থাকলেও দখলদারদের কারণে খালের অবস্থা ৮ থেকে ১৬ ফিট নেমেছে। এই খাল ঘাঘট নদী থেকে শুরু করে ধাপ পাশারীপাড়া, কেরানীপাড়া, মুন্সিপাড়া, ইঞ্জিনিয়ারপাড়া, গোমস্তাপাড়া, সেনপাড়া, মুলাটোল, তেঁতুলতলা, নূরপুর, বৈরাগীপাড়া হয়ে মাহিগঞ্জের মরা ঘাঘটের সঙ্গে যুক্ত হয়। এখন অধিকাংশ এলাকায় দখল করে রেখেছেন খালের পাড়ের বাসিন্দারা। বাসা বাড়ির পয়ঃনিষ্কাশন, সুয়ারেজের লাইন এই খালে দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না করায় খালটি নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে। বহুবার দখলদার উচ্ছেদ আর সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলেও অদৃশ্য কারণে থমকে যেতো সেই কাজ। ফলে দুপাড়ে অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়ায় সংকীর্ণ হয়ে পড়ে খালটি। সামান্য বৃষ্টিতেই গোটা শহরে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।</p> <p style="text-align:justify">উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধা জানান, শ্যামা সুন্দরী খালের উৎস, অবস্থান, দখলদার চিহ্নিত এবং সার্ভে কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর অবৈধভাবে দখলে রাখা ১১৭ জন দখলদারের চূড়ান্ত তালিকা করেছে জেলা প্রশাসন। নগরভবন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন যৌথ উদ্যোগে এই উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। </p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।</p> <p style="text-align:justify">সুজন রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, খাল উদ্ধারে বহুবার উদ্যোগ নিলেও নিজের সম্পত্তি দাবি করে দেয়া হয়েছে মামলা। গতিহীন হয়ে পড়েছে উচ্ছেদ কার্যক্রম। ভোট-জোট আর স্থানীয় রাজনীতির প্রভাবে পিছু হাঁটতে হয়েছে প্রশাসনকে। এবার আইন প্রয়োগ, কঠোরতা এবং সদিচ্ছাকে সামনে এনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মাধ্যমে এই উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।</p> <p style="text-align:justify">সদ্য বিদায়ি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘নগর বাঁচাতে এই কার্যক্রম জনগুরুত্বপূর্ণ। দখল মুক্ত করতে আমি সব প্রক্রিয়া শেষ করে এসেছি। বর্তমান প্রশাসন সহজেই তা উদ্ধার করতে পারবে।’</p>