<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উচ্চশিক্ষায় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি না কমে বরং জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। গত বছর এই পদ্ধতি থেকে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চাপে তা সম্ভব হয়নি। তবে এ বছর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে গুচ্ছ ভর্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূত্র জানায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছে থাকতে চায় না ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি), যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি), শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ (শেকৃবি) আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয় বেরিয়ে গেলে বড় ধরনের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে গুচ্ছ ভর্তি।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ২১ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের বিশেষ সভায় গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই মধ্যে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাঁচটি ইউনিটের মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গুচ্ছ ভর্তি ছিল আগের বছর চাপিয়ে দেওয়া একটি সিদ্ধান্ত। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। সম্প্রতি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের বৈঠকে আমি জানিয়ে দিয়েছি, আমরা গুচ্ছে থাকতে চাই না। এরই মধ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির বৈঠক করেছি। সেখানে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনার ব্যাপারে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলেছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span>  </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় না থাকার ব্যাপারে গত শিক্ষাবর্ষ থেকেই আলোচনা করছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি একাডেমিক সভায়ও এ ব্যাপারে ঐকমত্য হয়। তবে শেষ পর্যন্ত ইউজিসির চাপে তারা গত শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ ভর্তিতে থাকতে বাধ্য হয়। আগামী শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করতে চায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যেতে আগ্রহীদের কাতারে আরো রয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কৃষি গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যেতে চায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা গুচ্ছের সঙ্গে থাকব কি না তা একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হবে। আমরা দ্রুত এ নিয়ে বসব। তবে এককভাবে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শেকৃবি উপযুক্ত। এককভাবে পরীক্ষা নিলে দেশের সেরা মেধাবীরা শেকৃবির সঙ্গে যুক্ত হবে এবং সেশনজটও কমে আসবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে তিন বছর আগে শুরু হয়েছিল গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা। জানা গেছে, বর্তমানে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৪টি। এর মধ্যে সাধারণ ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছের নাম দেওয়া হয়েছে জিএসটি (জেনারেল, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি)। প্রকৌশল গুচ্ছে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ও আলাদা ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে। ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশে পরিচালিত চার বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর) গুচ্ছ ভর্তিতে আসেনি। এ তালিকায় আছে বিশেষায়িত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ছাড়া বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স), বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্কেস ইউনিভার্সিটিও আলাদা পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করে থাকে। অ্যাফিলাইটিং বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আলাদাভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করে থাকে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে সাধারণত ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া জিপিএর ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হলেও পরে আলাদা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করে। এতে একই শিক্ষার্থীর নাম একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধা তালিকায় আসছে। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ায় অন্যদের ফের মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হচ্ছে। এভাবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই পাঁচ-সাতবার মেধা তালিকা প্রকাশের পরও তাদের আসন শূন্য থাকছে। আর শিক্ষার্থীদের একাধিক গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি যেসব বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে নেই, সেখানে আলাদাভাবে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। এতে একজন শিক্ষার্থীকে অন্তত সাত-আটটি পরীক্ষায় অংশ নিতে হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কোনোভাবেই কমছে না।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সম্প্রতি ইউজিসির চেয়ারম্যার অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা হচ্ছে, সেখানে যে সমস্যা হচ্ছে, সেগুলো আমরা দূর করতে চাই। এসব দূর করার জন্য আমরা সব ধরনের উদ্যোগ নেব। গুচ্ছের মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমানো। সেটাই আমরা করতে চাই। তবে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্রতায় আমরা হস্তক্ষেপ করতে চাই না। তাই শিক্ষক, ছাত্র, অভিভাবক সবার সঙ্গে আলোচনা করে যে সহযোগিতা করা দরকার, তা আমরা করব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>