<p style="text-align:justify">কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিগত সময়ে চালু থাকা কোটা পদ্ধতি বহাল রেখেই কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার্থীরা। তবে এটির পরিবর্তন নিয়ে কিছু করার নেই বলে জানিয়েছে সমন্বিত ভর্তি কমিটি। তারা বলছেন, সিদ্ধান্ত আসতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।</p> <p style="text-align:justify">জানা গেছে, জিএসটি অন্তর্ভুক্ত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কিংবা মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটাসহ বেশ কয়েক ধরনের কোটা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্কিত পোষ্য কোটাও রয়েছে। এর বাইরে উপজাতি বা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা, হরিজন ও দলিত সম্প্রদায় কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা এবং খেলোয়াড় কোটা চালু রয়েছে। বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে, কোটাভুক্ত শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় পাস করলেই মেলে ভর্তির সুযোগ মেলে।</p> <p style="text-align:justify">স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিচালনা-সংক্রান্ত ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশে ভর্তিতে কোটা-সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধার স্পষ্ট কোনো উল্লেখ নেই। অধ্যাদেশের ৪৬ ধারা অনুযায়ী ভর্তি কমিটি দ্বারা নির্ধারিত কার্যপ্রণালি অনুসরণ করে ভর্তি কার্যক্রম চলবে।</p> <p style="text-align:justify">জানা গেছে, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষিবিষয়ক ৪৪৮টি আসনের মধ্যে ১৯টি মুক্তিযোদ্ধা, ১০টি পোষ্যসহ মোট ৬৮টি আসন কোটাধারীদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে, যা মোট আসনের ১৫ শতাংশের বেশি। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৯৮টি আসনের মধ্যে ৩২টি মুক্তিযোদ্ধা, ২০টি পোষ্য কোটাসহ মোট ৭৮টি আসনে কোটায় ভর্তি করানো হয়, যা মোট আসনের ১১ শতাংশ। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ১১৬টি আসনের মধ্যে ৫৫টি মুক্তিযোদ্ধা ও ৬টি আসনে আদিবাসী কোটায় ভর্তি করানো হয়। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৩১টি আসনের মধ্যে ২০টিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারীদের ভর্তি করানো হয়। এছাড়া সেখানে বিভিন্ন কোটায় আরও ১৮টি আসন রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৩৫টি আসনের ১৯টিতে মুক্তিযোদ্ধা ও ১২টিতে উপজাতি কোটাধারীরা ভর্তি হন। অন্যান্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েও রয়েছে কোটা পদ্ধতি।</p> <p style="text-align:justify">বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কার্যকর থাকা কোটার বিষয়ে অভিযোগ করে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক বলেন,বর্তমানে আমরা দেখছি কীভাবে জালিয়াতি করে মুক্তিযুদ্ধ সার্টিফিকেট নিয়েছিল ক্ষমতাশীলরা। যেখানে আসল মুক্তিযোদ্ধারাই সঠিক পদ্ধতিতে নির্ধারিত নয় সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে এত বেশি সংখ্যক মুক্তিযুদ্ধ কোটাসহ অন্যান্য কোটা থাকার যৌক্তিকতা নিশ্চিতরুপেই প্রশ্নবিদ্ধ।</p> <p style="text-align:justify">কৃষি ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ইকরামুল ইসলাম বলেন, ‘কোটাধারীরা কম নম্বর পেয়েও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য এত জীবন উৎসর্গ হওয়ার পরেও কীভাবে এই বৈষম্য বিদ্যমান থাকে। মেধাই হওয়া উচিত নতুন বাংলাদেশের যোগ্যতা যাচাইয়ের একমাত্র মানদণ্ড।’</p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে সমন্বিত কৃষি ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. লুৎফর রাহমান বলেন, ‘কোটা পদ্ধতি নিয়ে গুচ্ছের সমন্বিত সভায় আলোচনা হয়েছে। তবে এই কাঠামোর পরির্বতন কিংবা সংশোধন এই কমিটির এজেন্ডাভুক্ত নয় এবং ক্ষমতার বাইরে। এজন্য শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পূর্বে প্রকাশিত সার্কুলার অনুযায়ী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চাইলে পরবর্তীতে নিজস্ব সিন্ডিকেট মিটিংয়ে ইউজিসির অনুমোদন সাপেক্ষে কোটা পদ্ধতির সংশোধন বা সংস্কার করতে পারবে।’</p>