<p>সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি বাহিনীর তৈরি একটি সেতু ভাঙার উদ্দেশ্যে শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে ঐতিহ্যের সংরক্ষণ ও যানজটের আশঙ্কায় জনমনে তীব্র প্রতিবাদের সঞ্চার হয়েছে।</p> <p>‘জার্মান সেতু’ নামে পরিচিত ওল্ড সাভা ব্রিজ ১৯৪২ সালে সার্বিয়া দখলকারী নাৎসি বাহিনী নির্মাণ করেছিল। রাজধানী বেলগ্রেডের কেন্দ্রস্থলে ব্যস্ত এলাকায় যানবাহন চলাচলের জন্য ব্যবহৃত সাভা নদীর ওপর নির্মিত চারটি সেতুর মধ্যে এটি একটি।</p> <p>এদিন সেতুটি যান চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং ভারী যন্ত্রপাতি আনা হয়। সেতু ভাঙার প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বলে শহরের ট্রাফিক দপ্তর জানিয়েছে।</p> <p>সেতুটি ভাঙার এই সিদ্ধান্ত বলকান অঞ্চলে বহুস্তরীয় সংবেদনশীলতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইস্যুগুলো এখনো রাজনৈতিক ও আবেগময় দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দু। এ ছাড়া বেলগ্রেড ইউরোপের কয়েকটি বড় শহরের মধ্যে একটি, যেখানে কোনো ভূগর্ভস্থ গণপরিবহন ব্যবস্থা নেই। তাই নতুন কোনো বিকল্প সেতু নির্মাণের আগেই এই সেতুটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।</p> <p>এদিকে সেতুটি বন্ধের কয়েক দিন আগে শত শত মানুষ এটি ভাঙার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অংশ নেয়। বিক্ষোভের অন্যতম সংগঠক জর্জে মিকেটিচ বলেন, ‘আমরা মারাত্মক যানজটের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি।’</p> <p>অন্যদিকে সেতুটি বন্ধের পেছনে অন্যতম ভূমিকা পালনকারী হিসেবে বিশ্বাস করা বেলগ্রেডের মেয়র আলেক্সান্ডার সাপিচ বলেন, পুরনো জীর্ণ সেতুটির বদলে একটি নতুন ‘সার্বিয়ান’ সেতু নির্মাণ করা হবে।</p> <p>ইতিহাসের সূত্র অনুযায়ী, সাভা সেতুটি দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ থেকে যুদ্ধের শেষ বছরে তাড়াহুড়া করে পিছু হটা নাৎসি বাহিনীর ধ্বংস না করা অল্প কয়েকটি নদী পারাপারের সেতুর একটি। সার্বিয়ায় বহুল প্রচলিত ইতিহাস অনুযায়ী, ১৯৪৪ সালের ২০ অক্টোবর বেলগ্রেড থেকে নাৎসি বাহিনী যখন পিছু হটছিল, তখন তারা সেতুটিতে বিস্ফোরক স্থাপন করেছিল। তবে স্থানীয় শিক্ষক মিলাদিন জারিচ সাহসিকতার সঙ্গে তারের সংযোগ কেটে সেতুটিকে রক্ষা করেছিলেন।</p> <p>সূত্র : এএফপি</p>