<p>শাহনাজ আক্তার। কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তিনি। একই সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন জেলার উপ-পরিচালক পদেও। গাজীপুর জেলার সাবেক এসপি ও পরে ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের ঘনিষ্ঠ এবং কালীগঞ্জের সাবেক এমপি ও প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির আশির্বাদে এই কর্মকর্তা এখনো বেপরোয়া, দাপিয়ে বেড়ান জেলা-উপজেলা। ৯ বছর ধরে কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার পাশাপাশি ৫ বছর ধরে জেলার উপ-পরিচালকের পদেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।</p> <p>অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৩ সালে গাজীপুর সদর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহনাজ আক্তার তৎকালীন গাজীপুরের এসপি হারুনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেন। হারুনের ক্লাসমেট হিসেবে তার পরিচয় প্রকাশ পায়। ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি শাহনাজ আক্তার কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ) আসনের সাবেক এমপি ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির আশির্বাদে তিনি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার করেন। ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জুন কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি গাজীপুর জেলার  উপ-পরিচালকের চলতি দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময় ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর থেকে এখনো অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে জেলার উপ-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন শাহনাজ আক্তার। কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে তিনি ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি থেকে দায়িত্ব পালন করছেন বলে ওনার বোর্ডে লেখা আছে।</p> <p>একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এসপি হারুনকে দিয়ে তৎকালীন গাজীপুর জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালককে ভয় দেখিয়ে গাজীপুর থেকে বিদায় করে শাহনাজ আক্তার উপ-পরিচালকের দায়িত্ব নেন।</p> <p>বর্তমানে তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও একই বিভাগের গাজীপুর জেলার উপ-পরিচালক হিসেবে দুটি দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে ৯ বছর ধরে কালীগঞ্জে ও একই সঙ্গে ৫ বছর ধরে গাজীপুর জেলারও দায়িত্বে এই সরকারি কর্মকর্তা। দীর্ঘ ৯ বছর একই পদে ও ৫ বছর ধরে দুই পদে থাকার কারণে ওপরতলা পর্যন্ত তার সব নিয়ন্ত্রণ হয়ে গেছে। এই কারণে তিনি কাউকে পরোয়া করেন না। নিজের ইচ্ছেমতো পরিচালনা করছেন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দুটি চেয়ার।</p> <p>মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের একাধিক সূত্র জানায়, সাবেক এমপি ও প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির ঘনিষ্ঠ লোক হওয়ায় কেউ তাকে কিছু বলার সাহস পায়নি। জেলার উপ-পরিচালকের পদ খালি হলে সাধারণত সদর থেকে পূরণ করা হলেও চুমকির ক্ষমতার প্রভাবে কালীগঞ্জ থেকেই পূরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও দীর্ঘ ৫ বছর ধরে গাজীপুরে উপ-পরিচালকের পদে কাউকে পোস্টিং দেওয়া হয় না শুধুমাত্র শাহনাজ আক্তারের ক্ষমতার কারণে।</p> <p>এদিকে দীর্ঘ সময় একই পদে থাকায় কি পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে তা অনুসন্ধানের জন্য দ্রুত জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি সংশ্লিষ্টদের।</p> <p>সম্প্রতি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর গাজীপুর জেলার উপ-পরিচালকের অফিসে গিয়ে দেখা যায়, শাহনাজ আক্তার অফিসে নেই। শিরিন আক্তার নামে প্রগ্রাম অফিসার কালের কণ্ঠকে বলেন, শাহনাজ আক্তার সপ্তাহে দুই দিন গাজীপুরের উপ-পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেন। বাকী দিন কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে ৫টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ চলছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।</p> <p>মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করে পাওয়া গেলেও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহনাজ আক্তার বলেন, অধিদপ্তরকে জিজ্ঞেস করেন বলে ফোন কেটে দেন।</p>