<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিগত সরকারের আমলে জনকল্যাণের নামে নানা ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল, কিন্তু সেসব প্রকল্প বাস্তবায়নের মান ও স্বচ্ছতা নিয়ে তখনো বিস্তর প্রশ্ন ছিল। উন্নয়নের নামে লুটপাটও হয়েছে বিগত সরকারের আমলে। প্রকল্পের টাকা চলে গেছে সুবিধাভোগী একটি গোষ্ঠীর হাতে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে বিগত সরকার বেশ কিছু মহৎ উদ্যোগ নিলেও শেষ পর্যন্ত এসব প্রকল্প স্বার্থান্বেষী মহলের লালসা আর লুটপাটের শিকার হয়েছে। গত এক দশকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে। বেশির ভাগ প্রকল্পে নিম্নমানের কাজ করে লুটপাট করা হয়েছে। পরিকল্পনা ও দক্ষতার অভাবে তিন বছরের কাজ করতে কোনো প্রকল্পে ১০ বছরও লেগেছে। অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২০২১ সালে ৩০ হাজার বীর নিবাস নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের আওতায় ১৩ হাজার ১২৯টি বীর নিবাস নির্মিত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, নিম্নমানের কাজের মাধ্যমে এই প্রকল্পে বড় ধরনের দুর্নীতি করা হয়েছে। কোথাও কোথাও দেখা গেছে বীর নিবাসে বা নির্মিত ঘরে ফাটল, কোথাও গাঁথুনি ঠিকভাবে করা হয়নি। বেশির ভাগ জায়গায় পুরোপুরি নকশার আদলে করা হয়নি ভবন। গত বছরে প্রকাশিত পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের মূল্যায়নে উঠে  আসে প্রকল্পের অনিয়মের চিত্র।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি)  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু বীর নিবাসের দেয়ালের ইটের কাজে ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়েছে। ইটের কাজের লাইন এবং গ্রেড সঠিক হয়নি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইটের গুণগত মান খারাপ পাওয়া গেছে। কিছু ক্ষেত্রে ইটের আকৃতি যথাযথ ছিল না। একই লাইনের ইট একটির পরে অন্যটি সমতলে স্থাপন করা হয়নি। দেয়ালের ইটের কাজে ত্রুটি আছে। প্রথম শ্রেণির ইটের কাজে বাঁকা আকৃতির ইট ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে প্লাস্টারে প্রয়োজনের চেয়ে কম সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। হাওর অঞ্চলের বীর নিবাস বর্ষা মৌসুমে ডুবে যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। হালকা ভূমিকম্পেই এসব ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। একই অবস্থা জেলা-উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণের দুই প্রকল্পে। অনেক জায়গায় দেখা গেছে, ভবন নির্মাণের পর তিন-চার বছর ধরে পড়ে আছে, এখনো চালু হয়নি। অনেক ভবনেই দেখা গেছে ফাটল। বেশির ভাগ জায়গায় ভবন পড়ে থাকায় নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন আসবাব ও যন্ত্রপাতি। স্বাধীনতাসংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে চির অম্লান করে রাখার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে তৃতীয় দফায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থান সংরক্ষণে মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়। দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়েও এই প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ হয়নি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ১৫ বছরে উন্নয়ন শব্দটিকে লুটপাটের মাধ্যমে কলুষিত করা হয়েছে। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য উন্নয়নের গল্প ব্যবহার করা হয়েছে ব্যক্তি  ও দলীয় স্বার্থে। এ ধরনের লুটপাটের প্রকল্প বন্ধ করতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে যে দুর্নীতি স্থানীয় পর্যায়ে হচ্ছে, তা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখবে।</span></span></span></span></p>