<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দেলোয়ার হোসেন (৩৫)। দেলোয়ার মারা যাওয়ার আড়াই মাস চলে গেলেও এখনো কান্না থামেনি ৬৯ বছর বয়সী তাঁর বৃদ্ধা মা জিন্নাতুন নেছার। বাড়ির পাশের ছেলের কবরের পাশে ছুটে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। পাঁচ ছেলের মধ্যে দেলোয়ার আর্থিকভাবে সচ্ছল থাকায় বৃদ্ধ বয়সে ঢাকায় ছেলের কাছেই থাকতেন স্বামীহারা জিন্নাতুন নেছা। খাওয়াদাওয়া ও চিকিৎসা থেকে শুরু করে মায়ের পুরো খরচ চালাতেন ছেলে দেলোয়ার। কিন্তু পুলিশের গুলিতে ছেলে দেলোয়ার নিহত হওয়ায় এখন ভোলায় দিনমজুর ছেলে আনোয়ারের কাছে থাকেন তিনি। এদিকে ১৯ জুলাই মিরপুর ১০ নম্বরে পুলিশের গুলিতে দেলোয়ার আহত হলে তাঁকে শ্যামলী সিটি কেয়ার জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তাঁর পেটে অস্ত্রোপচার করা হয়। তিন দিন হাসপাতালের আইসিইউতে থেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। চিকিৎসায় চার লাখ টাকার বেশি খরচ করেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। দেলোয়ার চলে গেলেও পরিবারের কাঁধে তার রেখে যাওয়া প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ঋণের বোঝা। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন নিহত দেলোয়ারের স্ত্রী লিজা বেগম।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিহত দেলোয়ারের স্ত্রী লিজা বেগম কালের কণ্ঠকে বলেন, তাঁর স্বামী ১৯ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে একটি কাজে ঢাকার মিরপুর-১০ নম্বরে যান। পরে সেখানকার গোলচত্বরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। এ অবস্থায় তাঁর তলপেটে পুলিশের তিনটি গুলি লাগে। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে একে একে তিনটি হাসপাতালে নিলেও কোথাও তাঁকে চিকিৎসা দিতে রাজি হয়নি। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় তাঁর স্বামী দেলোয়ারের। পরে তাঁকে শ্যামলী সিটি কেয়ার জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। ওই দিন রাতেই তাঁর পেটে অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু ২১ জুলাই সকাল সাড়ে ৭টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লিজা আরো জানান, তাঁর স্বামীর হাসপাতালে চিকিৎসা, ওষুধ, অপারেশন, মৃতদেহ অ্যাম্বুল্যান্সে করে ভোলায় আনাসহ সব মিলিয়ে চার লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। পুরো টাকাই ধারদেনা করে সংগ্রহ করা হয়েছিল। বর্তমানে তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে রাব্বি হাসান (১৩), ছয় বছরের মেয়ে হাসনুর ও ১৮ মাস বয়সী ছেলে হোসাইনকে নিয়ে আর্থিক সংকটে রয়েছেন। জামায়াতে ইসলামীর কাছ থেকে মাত্র এক লাখ টাকা অনুদান পেয়েছেন তিনি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কান্নাজড়িত কণ্ঠে দেলোয়ারের মা জিন্নাতুন নেছা জানান, ছেলে মারা যাওয়ায় ওষুধ কিনেও খেতে পারছেন না তিনি। ছেলে হত্যার বিচার চান তিনি।</span></span></span></span></p>