<p>মহান ভাষা আন্দোলনের অকুতোভয় সৈনিক, প্রবীণ সাংবাদিক অধ্যাপক আবদুল গফুর চিরতরে চলে গেছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুর ২টা ৪৩ মিনিটে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।</p> <p>ভাষা আন্দোলনের মুখপত্র ‘সৈনিক’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন আবদুল গফুর। তিনি ১৯২৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার রাজবাড়ীর দাদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ভাষা আন্দোলনের প্রথম সাংস্কৃতিক সংগঠন তমদ্দুন মজলিসের প্রতিষ্ঠাকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন তিনি। পূর্ব পাকিস্তানের তত্কালীন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন তমদ্দুন মজলিস পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর প্রথম বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে দাবি তোলে।</p> <p>১৯৪৮ সালের ১৪ নভেম্বর তমদ্দুন মজলিসের বাংলা মুখপত্র সাপ্তাহিক সৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হলে গফুর প্রথমে এর সহসম্পাদক এবং পরে সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।</p> <p>১৯৫১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সৈনিক পত্রিকার বিশেষ সংখ্যার শিরোনাম ছিল ‘শহীদ ছাত্রদের তাজা রক্তে ঢাকার রাজপথ রঞ্জিত, মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেলে ছাত্র সমাবেশে পুলিশের নির্বিচারে গুলিবর্ষণ’। ফলে ২৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ পত্রিকাটির অফিস অবরোধ করে সম্পাদক আবদুল গফুর এবং প্রকাশক আবুল কাসেমকে গ্রেপ্তার করে। ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখায় সরকার তাঁকে ২০০৫ সালে একুশে পদক দেয়। শিক্ষাজীবনে ম্যাট্রিকুলেশন ও ইন্টারমিডিয়েটে স্ট্যান্ড করা ছাত্র ছিলেন তিনি। সাদা মনের গুণী মানুষ অধ্যাপক আবদুল গফুর দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। ১৯৭১ সালের মে থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত তিনি দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। এরপর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ইংরেজি দৈনিক পিপল, ১৯৭৯ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত দৈনিক দেশ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালে দৈনিক ইনকিলাব প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি তখন থেকে পত্রিকাটির ফিচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আবদুল গফুরের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ।</p> <p> </p>