<p style="text-align:justify">রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডের সামনে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের রোগী, স্বজন এবং আগতদের খাবারের উচ্ছিষ্টে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে রোগী ও স্বজনরা। </p> <p style="text-align:justify">সম্প্রতি এ অবস্থার বেগতিক দেখে হাসপাতাল পরিদর্শনসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছেন রংপুর জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল। </p> <p style="text-align:justify">সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড, আইসিইউ, নতুন ভবনের সামনে, সাইকেল গ্যারেজের বিপরীতে, পূর্ব গেটের প্রবেশমুখসহ হাসপাতাল চত্বরজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। ওয়ার্ডের সামনেই ডাস্টবিন রাখা হয়েছে। তবে সচেতনতার অভাবে যত্রতত্র প্রতিনিয়ত খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেলায় সৃষ্টি হয় ময়লার স্তূপ। এদিকে হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরাও ফেলছেন মেডিক্যাল বর্জ্যসহ নানা আবর্জনা। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে রোগী, চিকিৎসকরা। </p> <p style="text-align:justify">রোগী ও তাদের স্বজনরা বলছে, দুর্গন্ধের কারণে হাসপাতাল চত্বর ও আশপাশে চলাফেরা কঠিন হয়ে পড়েছে। সুস্থ হতে এসে অনেকেই হাসপাতালের বাইরের নোংরা পরিবেশে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।</p> <p style="text-align:justify">জানা যায়, এক হাজার শয্যার এই হাসপাতালে আড়াই হাজারের বেশি রোগী ভর্তি থাকছে, সঙ্গে স্বজনরাও। সম্প্রতি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীদের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না হওয়ায় হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে।</p> <p style="text-align:justify">সুন্দরগঞ্জ থেকে আসা এক রোগীর স্বজন লিমন বলেন, সকালে শিশু ওয়ার্ডের সামনে একটি ডাস্টবিন বসানো হয়। তাতে ময়লার দুর্গন্ধে থাকা যায় না। হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা মুশকিল। চারপাশে ময়লা-আবর্জনা পড়ে আছে। এখান থেকে রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে জানালার পাশে বেডে থাকা রোগীরা বাইরে থেকে আসা দুর্গন্ধে অস্বস্তিতে থাকে। সবার জন্যই এই পরিবেশ ঝুঁকিপূর্ণ।</p> <p style="text-align:justify">রংপুরের পীরগঞ্জ থেকে আসা বকুল মিয়া ও মুখলেসুর রহমান বলেন, ‘আমরা চার দিন থেকে ভর্তি। দুর্গন্ধের টেকা যাচ্ছে না, এসব পরিষ্কার করা দরকার। তা না হলে রোগীর সঙ্গে আমরাও অসুস্থ হয়ে পড়ব।’</p> <p style="text-align:justify">স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের সামনে ময়লা ফেলার কারণে এখান থেকে দুর্গন্ধ ও রোগজীবাণু ছড়াচ্ছে। দ্রুত অপসারণ না করা হলে অবস্থা আরো খারাপ হবে। রোগ সারাতে এসে সুস্থ মানুষেরও এখানে রোগী হয়ে যাওয়ার অবস্থা।</p> <p style="text-align:justify">ফুলবাড়ী থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আবুল হোসেন মিয়া জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই এখানে ভাগাড় সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনিটরিং করলে এমনটা হতো না। এমন  ভাগাড় চিন্তাই করা যায় না। </p> <p style="text-align:justify">রংপুর মেডিক্যালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমি বর্তমানে ছুটিতে আছি, এসব বিষয়ে কিছু জানি না।’</p> <p style="text-align:justify">সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রংপুর মহানগরের সভাপতি খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, ‘অব্যবস্থাপনা ও সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বহীনতার কারণে এমনটা হয়ে আসছে। সবার সুস্থতার কথা চিন্তা করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চারপাশ সব সময়ই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।’</p>