<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকায় জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ প্লাস্টিক বা পলিথিন বর্জ্য। অপচনশীল প্লাস্টিক বর্জ্য ড্রেনের মুখে জমে পানির প্রবাহ বন্ধ করে দেয়। রাজধানীতে ডেঙ্গুরও একটি বড় কারণ এসব পলিথিন বর্জ্য। পলিথিনে জমা বৃষ্টির সামান্য পানিতেও ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা বংশবিস্তার করতে পারে। পলিথিন বর্জ্যের কারণে ভূগর্ভে পানির অনুপ্রবেশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং পানির স্তর ক্রমেই নিচে নেমে যাচ্ছে। পলিথিন দূষণের মাত্রা ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। মাছ-মাংসেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে মানুষের রক্তেও। সারা দুনিয়া প্লাস্টিক দূষণ রোধে ব্যাপক উদ্যোগ নিলেও আমরা উদাসীন। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে এই দূষণ। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশে মোট প্লাস্টিক বর্জ্যের ৩০ শতাংশের বেশি, দিনে ৬৮১ টনের মতো, উৎপাদিত হয় রাজধানীতে। আর এসব বর্জ্যের ৮০ শতাংশই একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া পণ্য বা সিঙ্গল ইউজ প্রডাক্ট। শুধু রাজধানী নয়, বিভাগীয় শহরগুলোতেও প্লাস্টিক বর্জ্য বড় হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে ২০০২ সালে বাংলাদেশ প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, কিন্তু তা শুধু কাগজে-কলমেই থেকে যায়। বাস্তবে বাংলাদেশে প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার অত্যন্ত বিপজ্জনক হারে বাড়ছে। ২০২০ সালে সম্পাদিত বিশ্বব্যাংকের এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, আগের ১৫ বছরে শহর এলাকায় জনপ্রতি প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়েছে গড়ে ছয় কেজি করে। ২০০৫ সালে বছরে জনপ্রতি প্লাস্টিকের ব্যবহার ছিল তিন কেজি, ২০২০ সালে তা দাঁড়ায় ৯ কেজিতে। আর ঢাকা মহানগরীতে জনপ্রতি ব্যবহার হয় গড়ে ২৪ কেজি করে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহারে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। দেশে ২০০৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই হারে প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়তে থাকলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্তমানে দেশে বছরে আট লাখ টনেরও বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার মাত্র ৪০ শতাংশ রিসাইকল বা পুনর্ব্যবহার হয়। বাকি বিপুল পরিমাণ বর্জ্য পরিবেশে জমা হয়। এই ধ্বংসাত্মক প্রবণতা রোধ করতেই হবে। প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার, বিশেষ করে একক ব্যবহারের প্লাস্টিকপণ্যের উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে। এ জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিতে হবে এবং তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। এ ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতে হবে এবং পলিথিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।</span></span></span></span></p>