<p style="text-align:justify">বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার আন্দোলন নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া যা করেছে এবং এখনো যা করছে, তা দেখে মনে হয় এই আন্দোলনের একমাত্র উদ্দেশ্য হিন্দু নির্যাতন। নির্যাতনের ইতিহাস কেউ অস্বীকার করছে না। তবে বেছে বেছে যে হিন্দুদের ওপর হামলা হয়েছে, তা নয়। এখানে মাজারেও হামলা হয়েছে।’ শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন তিনি। বক্তব্যে ভারতীয় বুদ্ধিজীবী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও সমালোচনা করেন সলিমুল্লাহ খান। </p> <p style="text-align:justify">‘বৈচিত্র্যে বহুত্বে বাংলার সংস্কৃতি : গ্যাঁড়াকল ও পরিত্রাণ’ শীর্ষক অন্তর্ভুক্তিমূলক আলাপ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নবগঠিত সংগঠন ‘সংস্কৃতিবাংলা’। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ছিলেন বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষক ড. সলিমুল্লাহ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাদার তপন ক্যামিলাস ডি রোজারিও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সন্ন্যাসী স্বামী দেবধ্যানানন্দ, উত্তরা বৌদ্ধ মহাবিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ মুদিতা পাল থের, মানবাধিকারকর্মী ইলিরা দেওয়ান ও টঙ্গীর আন-নূর জামে মসজিদের খতিব আলী হাসান তৈয়ব। অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেন কবি সোহেল হাসান গালিব। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="চোরাচালানের তথ্য দিতে গিয়ে তথ্যদাতাই ধরা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/05/1728123201-b8e343c94caf894b516fc4aca8faaec1.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>চোরাচালানের তথ্য দিতে গিয়ে তথ্যদাতাই ধরা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/10/05/1432062" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">অনুষ্ঠানের শুরুতে ধারণাপত্র পাঠ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মাসউদ ইমরান। এতে তিনি বলেন, ‘সংস্কৃতি কোনো বদ্ধ জলাশয় নয়। এটা সব সময় গ্রহণ-বর্জনের ভেতর থেকে এগিয়ে যায় এবং যাবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বেশ কিছু প্রশ্নকে সামনে নিয়ে এসেছে। অনেকে বলছেন, ‘এটা একটা নতুন বাংলাদেশ। অর্থাৎ সব মত-পথের অংশগ্রহণের বাংলাদেশ। বায়ান্ন থেকে একাত্তর সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম দেশের সব অংশীজনের সংস্কৃতিকে একাঙ্গীকরণে ব্যর্থ হয়েছে। ধর্মনির্ভর মুসলিম জাতীয়তাবাদ এবং ভাষাভিত্তিক বাঙালি জাতীয়তাবাদ মোটা দাগে একে অপরকে খারিজ করে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছে।’ </p> <p style="text-align:justify">এরপর আলোচনার সূত্রপাত করেন আলী হাসান তৈয়ব। তিনি বলেন, ‘ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.) অত্যন্ত পরমতসহিষ্ণু ছিলেন। মদিনা সনদে দেশের প্রশ্নে ধর্ম নির্বিশেষে সবাই এক ছিলেন। আমাদের দেশে ধর্মের নামে যে সংঘাত হয় সেগুলো ধার্মিক লোকদের দ্বারা হয় না। ধর্মকে বাদ দিয়ে জীবন হয় না। কিন্তু এ দেশে দীর্ঘদিন ধর্মকে দাবিয়ে রাখা হয়েছে। ধর্ম মানুষকে সুন্দর ও সহিষ্ণু করে। এর জন্য ইসলামকে পাঠ করতে হবে। মিডিয়ায় ধর্মকে এক প্রান্তে ফেলে রাখা হয়েছে। ইসলাম দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্ম বলে একে নিপীড়ক হিসেবে দেখানো হচ্ছে। দেশে সব ধর্মের পাঠ বাড়াতে হবে। দেশে আমরা ফ্যাসিবাদ রুখে দিয়েছি, কিন্তু সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ রয়ে গেছে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ধান দিয়ে গড়া হলো দুর্গা প্রতিমা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/05/1728124491-f6d6a8d4da064ef37eacd08876621efc.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ধান দিয়ে গড়া হলো দুর্গা প্রতিমা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/10/05/1432064" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">লেখক ও মানবাধিকারকর্মী ইলিরা দেওয়ান বলেন, ‘আমরা সবাই জানি ভাষা সংস্কৃতির একটা অংশ। কিন্তু সংবিধান স্বীকৃত ভাষা শুধু বাংলা। সংবিধানে বাঙালি জাতীয়তাবাদের কথা বলা হয়েছে। এটিকে আরেকটু উদারভাবে গ্রহণ করতে হবে। নতুন যে বাংলাদেশের কথা বলছি তা বাস্তবায়ন করতে হলে পরিবর্তন আনতে হবে। জাতীয় সংস্কৃতির বিকাশে বাঙালিভিন্ন জাতিসত্তার ভূমিকা কেন থাকবে না? বলা হয়, বাংলাদেশ বহু ভাষা-বহু সংস্কৃতির ধর্ম, আমরা যেন তা বজায় রাখি।’</p> <p style="text-align:justify">রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সন্ন্যাসী স্বামী দেবধ্যানানন্দ বলেন, ‘সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেভাবে নির্যাতন হচ্ছে তার দুঃখ আমাদের আছে। দেশে যুদ্ধ, ধর্ম অবমাননার সংকটকাল চলছে এখন।’</p>