<p style="text-align:justify">বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের শাড়ি প্রতিবেশী দেশ ভারত নিজেদের দাবি করার পর নড়েচড়ে বসে সরকার। সেই প্রেক্ষাপটে স্বল্প সময়ের মধ্যে বেশ কিছু পণ্যের জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) সনদ দেওয়া হয়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪৩ পণ্যের সনদ চূড়ান্ত হয়ে গেছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আরো ৫৭টি পণ্যের সনদ দিয়ে ১০০ পণ্যের মাইলফলক পূরণ করতে চায় সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি)।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ডিম ও মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে ২৮০ কোটি টাকা লোপাট!" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/06/1728189411-9df334aeddfb4db6ba4ae6bf01dd8c40.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ডিম ও মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে ২৮০ কোটি টাকা লোপাট!</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/10/06/1432321" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">গত ২৫ এপ্রিল ডিপিডিটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৪ পণ্যের সনদ দেওয়া হয়। এই ১৪টিসহ তখন মোট জিআই পণ্যের সংখ্যা হয়েছিল ৩১টি। গত এপ্রিল মাসের পর থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে আরো ১২টি পণ্যের সনদ পেয়েছে। পণ্যগুলো হলো— নরসিংদীর লটকন, মধুপুরের আনারস, ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই, মাগুরার হাজরাপুরী লিচু, সিরাজগঞ্জের গামছা, সিলেটের মণিপুরি শাড়ি, মিরপুরের কাতান শাড়ি, ঢাকাই ফুটি কার্পাস তুলা, কুমিল্লার খাদি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি, গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গয়না, সুন্দরবনের মধু।</p> <p style="text-align:justify">জাতিসংঘের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থার (ডব্লিউআইপিও) নিয়ম মেনে জিআই সনদ দেয় ডিপিডিটি। সরাসরি এ জন্য আবেদনকারীর তথ্য যাচাই করার পর জার্নাল প্রকাশ করতে হয়, যা বিজি প্রেস করে। জার্নাল প্রকাশের পর দুই মাস সময় অপেক্ষা করতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো ব্যক্তি, সংস্থা প্রকাশিত পণ্যের সনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে আপত্তি জানায় তখন, তা নিষ্পত্তি হওয়ার আগে সনদ দেওয়া যায় না।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="কেবল আত্মত্যাগ নয়, সঠিক আন্দোলন চাই" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/06/1728189024-9f7949e0066aad4e6245b52ef96cba4c.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>কেবল আত্মত্যাগ নয়, সঠিক আন্দোলন চাই</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/miscellaneous/2024/10/06/1432316" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">তবে নতুন ১২টি পণ্যের জার্নাল প্রকাশের পর দুই মাস শেষ হয়ে গেছে। ফলে এখন জিআই সনদ পাওয়া মোট পণ্যের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩টিতে।</p> <p style="text-align:justify">ডিপিডিটির মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান জানিয়েছেন, আরো সাতটি পণ্যের জার্নাল প্রকাশের জন্য বিজি প্রেসে পাঠানো হয়েছে। ছয়-সাতটি পণ্যের জার্নাল তৈরি হয়ে গেছে। আর ২৫-২৬টি পণ্যের জিআই সনদের উপযোগী কি না তা নিয়ে তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। আবেদনকারীদের কাছ থেকে কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছে। সেগুলো দিলে এগুলোর মধ্য থেকে জিআই পণ্য হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">অর্থাৎ ৪৩ পণ্য সনদ পাওয়ার পর আরো প্রায় ৪০টি পণ্য জিআই সনদ পাবে কি না তা নিয়ে এখন কাজ চলছে। আর আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে জিআই সনদ দেওয়ার সংখ্যা ১০০টি ধরে পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত সনদ দেওয়া হয়েছে ৪৩টি পণ্যের। এই পণ্যগুলোর সনদ দিতে সময় লেগেছে প্রায় ৯ বছর। তাই আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে, আগামী ডিসেম্বর বা তিন মাসের মধ্যে আরো ৫৭টি পণ্যের জিআই সনদ দেওয়া সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তবে ডিপিডিটির মহাপরিচালক সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="দ্রুতগতিতে সবুজ হয়ে উঠছে অ্যান্টার্কটিকা!" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/06/1728189230-3a65cd90b8402ac6334a01a9bce93fe7.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>দ্রুতগতিতে সবুজ হয়ে উঠছে অ্যান্টার্কটিকা!</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/10/06/1432318" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন পণ্য জিআই সনদ পায় যেগুলোর আলাদা প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ও গুণাগুণ থাকে এবং দেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্য। যেগুলোর অন্তত ৫০ বছরের ইতিহাস থাকে। য বিশ্বের অন্য কোথাও পাওয়ার দৃষ্টান্ত বিরল। তবে একই বৃহৎ অঞ্চল হলে কিছুটা মিল থাকতে পারে। জিআই পণ্যের চাহিদা সারা বিশ্বেই রয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোতে। এই ধরনের পণ্যের দাম বেশি পাওয়া যায়। যদি সঠিকভাবে জিআই পণ্য বাজারজাত করা যায়, তাহলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম ব্যবস্থা হতে পারে, তবে জিআই স্বীকৃতিতে বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ।</p> <p style="text-align:justify">খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান সরকার ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন করে ২০১৩ সালে। এর দুই বছর পর ২০১৫ সালে বিধিমালা প্রকাশ করা হয়। ওই বছর সর্বপ্রথম জামদানি শাড়ির জিআই আবেদন করা হয়। যার সনদ দেওয়া হয় ২০১৬ সালে। এরপর ২০১৭ সালে দেওয়া হয় ইলিশ মাছের জিআই সনদ।</p> <p style="text-align:justify">বিধিমালা প্রকাশের পর জিআই সনদ দেওয়ার বিষয়টি ঢিমেতালেই চলেছে। তেমন গুরুত্বসহকারে নেওয়া হয়নি বলেই মনে করে জিআই নিয়ে সচেতন সংগঠনগুলো। গত ৩ জানুয়ারি পাশের দেশ ভারত টাঙ্গাইলের শাড়িকে নিজেদের দাবি করে জিআই হিসেবে নিবন্ধন করে। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ দেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এরপর তৎপর হয় ডিপিডিটি। অবস্থা বেগতিক দেখে ৬ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম ই-মেইলের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের শাড়ির জিআই সনদের জন্য আবেদন করেন। ৭ ফেব্রুয়ারি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব টাঙ্গাইলের শাড়ির জিআই হিসেবে নিবন্ধন করার ঘোষণা দেন। এরপর সুন্দরবনের মধুর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটায় পাশের দেশ ভারত। তবে ৩০ জুন শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশে জিআই নিবন্ধিত হচ্ছে সুন্দরবনের মধু।</p> <p style="text-align:justify">ডিপিডিটির মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘৪৯৪টি পণ্যের প্রাথমিক তালিকা করা হয়েছে। যেগুলোর মধ্য থেকে জিআই পণ্য বের করে নিবন্ধন দেওয়া হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আমাদের ১০০টি পণ্যের জিআই স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। কিছুটা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আমরা পিছিয়ে গিয়েছি। এখন আবার আমরা পুরোদমে কাজ করছি।’</p> <p style="text-align:justify">মাঠ পর্যায়ে দেশের ঐতিহ্যবাহী বিশেষ বৈশিষ্টের পণ্য খুঁজতে সাহায্য করা প্রতিষ্ঠানটি হলো ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (ইডিসি)। প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট কাকলি তালুকদার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা দেশের বিভিন্ন জেলায় জেলায় গিয়ে ঐতিহ্যবাহী পণ্য খুঁজে বের করছি। নিবন্ধনের শর্ত যাতে পূরণ হয় সেটা মাথায় রেখে কাজ করছি। এরপর ডিপিডিটির পরামর্শ মেনে সেগুলোর একটি ডকুমেন্ট বানিয়ে জেলা প্রশাসক বা সংশ্লিষ্টদের দিই।’</p>