<p>‘আরব আমিরাত সরকার বলেছিল ৫৭ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, আসলে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল আমাদের ১১৪ জনকে। অন্তর্বর্তী সরকারের সহায়তায় আমরা সবাই মুক্তি পেয়েছি।’ দেশে ফিরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গণমাধ্যমকে এ কথা জানান দুবাইফেরত প্রবাসী শাহীন আহমেদ। গতকাল শনিবার রাতে দুবাই থেকে দেশে ফিরেছেন সেখানে কারাদণ্ড পাওয়া ১৪ বাংলাদেশি।</p> <p>তাঁদের মধ্যে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন তিনজন। বাকি ১১ জন নামেন চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামা তিন বাংলাদেশিকে অভ্যর্থনা জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলমসহ অনেকে। সেখানে তাঁদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।</p> <p>বিমানবন্দরে শাহীন আহমেদ বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে দুবাই বসবাস করছি। কোটা আন্দোলনে ছাত্রদের যৌক্তিক দাবি মেনে না নিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা যে গুলি চালিয়েছিল মৌন মিছিল করে আমরা তার প্রতিবাদ জানাই। আমরা জানতাম প্রতিবাদ করলে রাজতন্ত্র আইনে আমাদের শাস্তি পেতে হবে। সেই শাস্তিকে উপেক্ষা করেই আমরা আন্দোলনে নেমেছিলাম। আমাদের মুক্তি দিলেও কারাদণ্ড না পাওয়া অনেকে এখনো জেলে। তাঁদের এখনো মুক্তি দেওয়া হয়নি।’</p> <p>ফিরে আসা কারাদণ্ড পাওয়া আরেক প্রবাসী জহুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘ছাত্র-জনতা ও প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। দেশকে ভালোবাসার জায়গা থেকে আমরা আন্দোলনে নেমেছিলাম। সামাজিক মাধ্যমে বেশ কিছুদিন ধরে আমরা দেখতে পাচ্ছিলাম নানাভাবে আমাদের ভাইদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছিল। অনেকের লাশ পড়ে থাকতেও আমরা দেখেছি। এগুলো সহ্য করতে পারছিলাম না। আমরা যা করেছি তা শুধু দেশের জন্য করেছি।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘আমরা অনেকে আবার ওই দেশের আইন সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত ছিলাম না। তবে যতটুকু অবগত ছিলাম, তাতে আমরা জানতাম আমাদের শাস্তি হবে। কিন্তু সেটাকে আমরা তোয়াক্কা করিনি। কারণ দেশের ঘটনাগুলো আমাদের মানসিকভাবে যন্ত্রণা দিচ্ছিল। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যাই হোক, আমরা আন্দোলন করব।’</p> <p>দূতাবাসগুলোতে প্রবাসীদের  প্রথম শ্রেণির নাগরিকের মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়ে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করে আসছেন। কিন্তু তাঁরা দেশ থেকে তেমন কিছু পান না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি, এই সরকার যেন রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের প্রতি বেশি বিনয়ী হয়। বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের প্রতি অমানবিক আচরণ করা হয়। আমাদের গণ-অভ্যুত্থানে রেমিট্যান্স যোদ্ধারা শাটডাউনের মধ্য দিয়ে যে আহবান জানিয়েছেন সেটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। তাই আমাদের দাবি, আমাদের প্রবাসীদের দূতাবাসগুলোয় প্রথম শ্রেণির নাগরিকের মর্যাদা দিতে হবে।’ </p> <p>সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের প্রবাসী ভাইদের কথা শুনে যা বুঝা গেল, এখনো অনেক প্রবাসী জেলে বন্দি রয়েছেন। তাঁদের দ্রুত মুক্ত করতে হবে এবং স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।’</p>