<p>রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ন্যায্য মূল্যে সবজি বিক্রি করছে বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়াই সংগঠনগুলোর মূল উদ্দেশ্য। বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত মানুষের কাছে ন্যায্য মূল্যে শাকসবজি পৌঁছে দেবেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।</p> <p>গতকাল রবিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর ডেমরায় অবস্থিত কোনাপাড়া এলাকায় ও মগবাজারের মধুবাগসহ শহরের ১১টি জায়গায় অন্যান্য দিনের মতোই সবজি বিক্রির কার্যক্রম শুর করে ফোরাম এসডিএ, খোঁজ ফাউন্ডেশন, অদম্য, ফেস অব বাংলা, শব্দশূন্য ও ডেমরা গ্রুপ।</p> <p>সরজমিনে কোনাপাড়ার শাহজালাল রোডে গিয়ে দেখা যায়, ২৫-৩০ জনের একটি দল সবজি বিক্রির এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। স্থানীয় বাজারের তুলনায় কম দামে সবজি কিনতে সুশৃঙ্খলভাবে নারী ও পুরুষ দীর্ঘ লাইন ধরতে দেখা গেছে।</p> <figure class="image" style="float:left"><img alt="শাক" height="271" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/Nahid/Untitled-3b.jpg" width="452" /> <figcaption>কোনাপাড়ার শাহজালাল রোডে সবজি কিনতে<br /> আসা মানুষের ভিড়। ছবি : কালের কণ্ঠ</figcaption> </figure> <p>স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এ দোকানে প্রতিটি সবজির দাম কাগজে লেখা রয়েছে। হালিপ্রতি লেবু বিক্রি করা হচ্ছে ১০ টাকায়। এ ছাড়া লতি কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, শসার কেজি ৪০, করলা কেজি ৬০, ঢেঁড়স ৫৫, ধুন্দল ৫০, বেগুনের কেজি ৫৫, কাঁচা মরিচ ২৫০ গ্রাম ৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে দোকানটিতে। এর বাইরে প্রতিটি লাউয়ের মূল্য রাখা হচ্ছে ৩০ টাকা, ধনেপাতার আঁটি ২০ এবং লালশাকের আঁটি রাখা হচ্ছে ১৫ টাকা।</p> <p>দোকানের সামনে ক্রেতাদের বেশ লম্বা লাইন। সবাই সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে চাহিদামতো সবজি কিনছেন। দোকান থেকে সবজি কেনেন অটোরিকশাচালক মনির মিয়া। তার সঙ্গে সবজির দরদাম নিয়ে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বাজারে সবজির চড়া দাম। তাই বাজারে না গিয়ে এখানে সবজি কিনতে এসেছি। বাজারের চেয়ে অনেক কম দামে এখান থেকে সবজি কিনলাম।’</p> <p>কারখানা শ্রমিক ফরিদ হাওলাদার বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে তারা ন্যায্য মূল্যে সবজি বিক্রি করছে। বাজারের চেয়ে দাম অনেক কম। আমি আজ দ্বিতীয়বারের মতো সবজি কিনতে এখানে এসেছি।’</p> <p>সবজি কিনতে আসা ফরিদা বেগম বলেন, ‘বাজারে সবজির যা দাম, তাতে আসলে আমাদের গরিবদের জন্য বিপদ। চাহিদামতো কিছুই নিতে পারি না। একটা কিনলে আরেকটা কেনার টাকা থাকে না। এখানে ন্যায্য মূল্যে সবজি বিক্রি করা হচ্ছে শুনে এসেছি।’</p> <figure class="image" style="float:left"><img alt="সবজি" height="270" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/Nahid/Untitled-3c.jpg" width="450" /> <figcaption>স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ন্যায্য মূল্যের দোকান থেকে <br /> সবজি কিনছে মানুষ। ছবি : কালের কণ্ঠ</figcaption> </figure> <p>এর মধ্যে কথা হয় স্বেচ্ছায় রক্তদানকারী সংগঠন ‘খোঁজ’-এর সভাপতি তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে সবজি থেকে শুরু করে কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণে নেই। অতিরিক্ত দামে সবজি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এতে নিম্নমধ্যবিত্তদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই সাধরাণ মানুষের কথা বিবেচনা করে আমরা সাতটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রাজধানীতে ন্যায্য মূল্যে সবজি বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছি।’</p> <p>তোফায়েল আরো বলেন, ‘সাবার দোয়া ও ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। সফল আমরা হবই ইনশাআল্লাহ। আমরা সবজি সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে চাই। এরই মধ্যে আমাদের ন্যায্য মূল্যে সবজি বিক্রির কার্যক্রম দেখে অনেক পাড়া-মহল্লায় ন্যায্য মূল্যে সবজি বিক্রি শুরু করেছেন। সবজি সিন্ডিকেট না ভাঙা পর্যন্ত আমাদের সাধ্য অনুযায়ী এই কার্যক্রম চলবে।’</p> <p>স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ফোরাম এসডিএর সভাপতি রায়হান হোসেন বলেন, ‘আমাদের সাতটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন একত্রে উদ্যোগ নিয়ে রাজধানীর কয়েকটি স্থানে ন্যায্য মূল্যে সবজি বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছি। আমরা প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে সবজি আনছি। এ ছাড়া রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও কারওয়ান বাজার আড়ত থেকেও পাইকারি দামে সবজি কিনে আনছি। সবজির ক্রয়মূল্যের সঙ্গে গাড়িভাড়া যোগ করে সেটাই ন্যায্য মূল্যে বিনা লাভে জনসাধারণের কাছে বিক্রি করছি।’ বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত এভাবেই শাকসবজি বিক্রি করা হবে বলেও জানান তিনি।</p>