<p>গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আওয়ামী লীগ বা দলটির সহযোগী সংগঠনের বিচারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, সরকার চাইলে দল বা সংগঠনের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রস্তুত আছে প্রসিকিউশন।</p> <p>রবিবার (১০ নভেম্বর) আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে পুরাতন হাইকোর্ট ভবনের সংস্কার কাজ পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা বলেন চিফ প্রসিকিউটর।</p> <p>সংগঠন বা দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখনো দলের বিচারের বিষয়ে তদন্ত শুরু করিনি। যদিও আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। তবে সরকার চাইলে আমরা বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রস্তুত আছি।’</p> <p>আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ-যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে উল্লেখ করে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘ব্যক্তি পর্যায়ে আমরা যে তদন্তগুলো করছি, প্রত্যেকটি জায়গায় কিন্তু আওয়ামী লীগের যুক্ত থাকার বিষয়টি পাচ্ছি। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম, যুবলীগ-ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যারা আছেন, তাদের বিরুদ্ধে আলাদাভাবে তদন্ত চলছে। তাদের বিরুদ্ধে গণহত্য, মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রমাণ আমরা ক্রমাগত পাচ্ছি।’</p> <p>তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দল হিসেবে আলাদাভাবে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত না শুরু করলেও ব্যক্তি পর্যায়ের তদন্তের ক্ষেত্রেই আমরা তাদের দলের বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাচ্ছি। আমরা আগে ব্যক্তি পর্যায়ের বিচারগুলো করতে চাই। সরকার যখনই সিদ্ধান্ত নেবে দল হিসেবে তাদের (আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য সংগঠনের) বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার, তখনই আমরা কাজ শুরু করব।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘যেহেতু প্রক্রিয়াটা অনেক দূর এগিয়ে আছে, তাই সরকার যখনই বলবে তখনই দল হিসেবে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য প্রস্তুত করতে পারব। এই ক্ষেত্রে আমাদের কোনো দুর্বলতা নেই, সমস্যা নেই। আমাদের তদন্ত প্যারালাললি চলছে। যদিও আলাদাভাবে আমরা দল হিসেবে বিচারের জন্য তদন্ত রিপোর্টটা সেভাবে করছি না। এখন শুধু ব্যক্তি পর্যায়েই আছে।’</p> <p>ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনা সরকারের। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে ৮ আগস্ট গঠন করা হয় অন্তবর্তী সরকার। এই সরকারে আইন উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়ে আসিফ নজরুল ঘোষণা দেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা হবে। সেই ঘোষণা অনুযায়ী প্রথমে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন, তদন্ত সংস্থা পুনর্গঠনের পর গত ১৪ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে সরকার।</p> <p>সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীকে ওই ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরদিনই বিচারিক কাজে বসেন ট্রাইব্যুনাল। গত ১৭ অক্টোবর প্রসিকিউশনের আবেদনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় ট্রাইব্যুনাল থেকে। আর ২৭ অক্টোবর সাবেক ১৭ পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।<br />  </p>