<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছোট্ট একটি ঘর। ইটের গাঁথুনি দেওয়া থাকলেও পলেস্তারা নেই। চারদিকে স্যাঁতসেঁতে। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন পরিত্যক্ত ঘর। কাছে গেলেই চোখে পড়ে ঘরটির ভেতরে একটি চৌকি। এমন পরিবেশে ওই ছোট্ট ঘরটিতেই দিন কাটছে সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা তাহেরা বেগমের। বৃদ্ধা তাহেরার সম্বল বলতে রয়েছে একটি গরু। ওই গরু নিয়েই একঘরে বসবাস করছেন তিনি। তাহেরা কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বেড়াজাল গ্রামের বাসিন্দা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রায় ৪০ বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে তাঁর। একটি কন্যাসন্তান থাকলেও বিচ্ছেদের পর মেয়ের আর কোনো খোঁজ পাননি তিনি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয়দের ভাষ্য, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ভেসে গেছে বৃদ্ধা তাহেরার সব কিছু। বন্যার আগে একটি টিনের ঘরে থাকতেন তিনি; গরুর জন্য ছিল আলাদা ঘর। কিন্তু সবই ভেসে গেছে বানের স্রোতে। ইটের গাঁথুনি দেওয়া স্যাঁতসেঁতে ওই ঘরটিতে আগে কেউ থাকত না। বর্তমানে বাধ্য হয়ে অহসায় তাহেরা গরুসহ ওই ঘরেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরেজমিনে গিয়ে গতকাল সকালে দেখা গেছে, ঘরের সামনে মাটিতে বসে আছেন তাহেরা। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ আর তীব্র দুর্গন্ধে ঘরটির সামনে দাঁড়াতেই কষ্ট হচ্ছিল। দিনের আলোতেও ঘরটির ভেতরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। দেখেই বোঝা যাচ্ছিল সব কিছু ভেসে গেছে বন্যার পানিতে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বয়সের ভারে নুয়ে পড়া বৃদ্ধা তাহেরা বেগম বর্তমানে ভালোভাবে কথাও বলতে পারেন না। আধো আধো কণ্ঠে বললেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বন্যা আমার কিচ্ছু রাখছে না। সব ভাসাইয়া লইয়া গেছে। মাইনসের দেওয়া ফেতরা, জাকাতের টেকা দিয়া অনেক আগে এহনকার থাওনের ঘরটায় কয়টায় ইট লাগাইসিলাম। আগে যেই ঘরডায় থাকতাম, হেইডা বন্যায় নিসেগা। গরুডারে লইয়া এহন একঘরে থাকতাছি। আমরার খবর কেডা নিবো।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিষয়টি নজরে আনা হলে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বুড়িচং উপজেলায় চার হাজার ১৪৩টি বাড়িঘর পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরই মধ্যে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করেছি। ওই তালিকায় বৃদ্ধা তাহেরা বেগমের নাম থাকতে পারে। আর কোনো কারণে নাম না থাকলে আমরা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। এখনো আমাদের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হয়নি। শিগগিরই আমরা পুনর্বাসনের কাজ শুরু করব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>