<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আড়াই মাস পার হতে চললেও স্বস্তি ফেরেনি নিত্যপণ্যের বাজারে। বরং গত দুই সপ্তাহে বাজারে দামের বড় উল্লম্ফন ঘটেছে। নিত্যপণ্যের এই বাড়তি দামের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও এখনো বাজার অস্থির। যদিও গত দু-তিন দিনের ব্যবধানে ডিমসহ কয়েকটি পণ্যের দাম কিছুটা কমেছে, তবে সার্বিকভাবে এর প্রভাব বাজারে পড়েনি।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাজধানীর খুচরা বাজারে এখনো বেশির ভাগ সবজি প্রতি কেজি ১০০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ঢেঁড়স ও পটোলের মতো সবজিও ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে ভোক্তাসাধারণকে। চাল, পেঁয়াজ, ডিম, মুরগি, মাছ ও ভোজ্য তেল থেকে শুরু করে এমন কোনো নিত্যপণ্য নেই, যার দামে স্বস্তি আছে। এতে বর্তমানে নিম্ন আয়ের মানুষ শুধু নয়, মধ্যবিত্তরাও সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। নানাভাবে ব্যয় কাটছাঁট করেও সাধারণ মানুষ পেরে উঠছে না। কারণ জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লেও সেভাবে আয় বাড়েনি।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পাইকারি কারওয়ান বাজার ও খুচরা মহাখালী কাঁচাবাজার, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখনো বাজারগুলোতে চড়া দামেই বেশির ভাগ সবজি ও মুরগি বিক্রি হচ্ছে। তবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিম, কাঁচা মরিচসহ কয়েকটি সবজির দাম কিছুটা কমে বিক্রি হতে দেখা গেছে। খুচরায় প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম কয়েক দিন আগে দাম বেড়ে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এখন কমে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারে খুচরায় ডিম ডজন ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে আমদানি করা ও দেশি উভয় ধরনের কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ সংকটের অজুহাতে কয়েক দিন আগে রাজধানীর বাজারে কাঁচা মরিচের কেজি ৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। তবে দাম কমে এখন খুচরায় ৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ কয়টি পণ্যের দাম কমা ছাড়া বাকি সব সবজি এখনো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। গোল বেগুন মানভেদে কেজি ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, লম্বা বেগুন ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, ঢেঁড়স, পটোল মানভেদে ৯০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, বরবটি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, চিচিঙ্গা-ধুন্দল ১০০ টাকা, আলু ৬০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা কেজি এবং প্রতি পিস লম্বা লাউ ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এদিকে পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির দামে কেজিপ্রতি পার্থক্য দেখা গেছে ২০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত। গতকাল কারওয়ান বাজারে খুচরায় প্রতি কেজি করলা ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়স ও পটোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গোল বেগুন মানভেদে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা, লম্বা লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকা, টমেটো ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে সবজির চড়া দামের কারণ সরবরাহ ঘাটতি ও বারবার হাতবদল। উৎপাদন পর্যায়ের চেয়ে ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে দাম কয়েক গুণ বাড়ছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাজধানীর বাড্ডা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. আরিফ কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাজারে সবজির সরবরাহে সংকট আছে, এ কারণে দাম তেমন কমছে না। তবে কাঁচা মরিচ ও টমেটোর দাম অনেকটাই কমেছে। বাজারে সরবরাহ বাড়লে সবজির দাম কমতে থাকবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দামে বড় পার্থক্যের কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবহন ভাড়া, প্রায় ২৫ শতাংশ পণ্য পচে যাওয়া এবং ইজারাদারদের বাড়তি টাকা দিতে গিয়ে খরচ বেড়ে যায়। এ কারণে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দামে বড় ব্যবধান তৈরি হয়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখনো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২১০ টাকা এবং সোনালি মুরগি কেজি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা, দেশি রসুন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কারওয়ান বাজারের মুরগি বিক্রেতা নুরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাজারে চাহিদার তুলনায় মুরগির সরবরাহ কিছুটা কম, যার কারণে দাম বাড়তি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ঋণের সুদহার বাড়ানোসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। চলমান ডলার সংকটের মধ্যেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে জোর দেওয়া হয়েছে। পেঁয়াজ, আলু, ডিম, চিনি ও ভোজ্য তেল আমদানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে। ভারত থেকে ডিম আমদানি শুরু হয়েছে। ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দেওয়া, চাঁদাবাজি রোধে নানা উদ্যোগ, টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি বাড়ানো এবং পণ্য উৎপাদন ও সরবররাহ নিশ্চিত করতে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তার পরও বাজারে স্বস্তি ফিরছে না।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সড়ক ও বাজারে চাঁদাবাজিসহ ব্যবসায়ীদের অসাধু সিন্ডিকেট আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সরকারবিরোধী এই চক্রের কারণে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমছে না। পুরনো অসাধু সিন্ডিকেট বাজারে আগের কৌশলে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। এতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে ভোক্তাসাধারণের।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><strong><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বগুড়ায় বাজারে শীতের আগাম সবজি আসায় দাম কমতে শুরু করেছে</span></span></span></span></span></strong></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বগুড়ার বাজারে শীতের আগাম সবজি উঠতে শুরু করায় দাম কমতে শুরু করেছে। ১৫ দিন আগে লাগাতার বৃষ্টি ও বন্যার প্রভাবে সবজির দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়। তবে এখন বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলায় মাঠে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি। বাজারেও উঠতে শুরু করেছে এই আগাম সবজি। এ জন্য দাম কমতে শুরু করেছে। পটোল, বেগুন, কপিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম ১৫ দিনের ব্যবধানে বেশ কমেছে। পাইকারি বাজারে প্রতি মণ ২০০ থেকে ৫০০ টাকা কমেছে প্রতিটি সবজির দাম। কৃষকরা বলছেন, বাজারে শীতের আগাম সবজি আসতে শুরু করায় দাম কমছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গতকাল উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ সবজির মোকাম বগুড়ার মহাস্থান হাটের বিভিন্ন আড়ত ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। মোকাম ঘুরে দেখা গেছে, গত ১৫ দিনের তুলনায় প্রতিটি সবজির দাম মণে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এর মধ্যে করলা ১৫ দিন আগে ৩০০০ থেকে ৩২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হলেও গতকাল তা কমে বিক্রি হয়েছে ২৬০০ থেকে ২৭০০ টাকায়। একইভাবে বেগুন ৩০০০ টাকা মণ থেকে কমে ২৪০০ থেকে ২৬০০ টাকা, পটোল ২২০০ টাকা থেকে কমে ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা, মুলা ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা থেকে কমে ১০০০ থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তবে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে মিষ্টিকুমড়ার। আগে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। তবে পেঁয়াজ প্রতি কেজিতে ১০ টাকা এবং লাল পাকড়ি আলুর দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হাটে সবজি বিক্রি করতে আসা চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আট কাঠা জমিতে মুলার চাষ করেছি। যেখানে ফলন হওয়ার কথা ৩০ মণ, বৃষ্টিতে ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় ১২ মণ ফলনও পাইনি। এতে অনেক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে হাটে সবজির আমদানি কম। আমদানি না থাকায় এবং কৃষকের ক্ষতি কিছুটা পোষাতে দামও বাড়তি। নতুন সবজি বাজারে এলে দাম কমবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন কালের কণ্ঠ</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">র বগুড়া অফিস ও যশোর প্রতিনিধি]</span></span></span></span></span></p> <p> </p>