<p>সর্বকালের সেরা তাত্ত্বিক-পদার্থবিজ্ঞানীদের একজন পল ডিরাক। যে কজন বিজ্ঞানীর হাতে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার বেড়ে ওঠা, পল ডিরাক তাঁদের মধ্যে অন্যতম। জন্ম ব্রিস্টলে। বাবা ছিলেন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক, মা ব্রিটিশ। দ্বিতীয় সন্তান ডিরাক। বাবার মার্তৃভাষা ফরাসি। তিনি ভাষা ও পারিবারিক সংস্কারের ব্যাপারে ছিলেন ভীষণ কড়া।</p> <p>সন্তানদের ফরাসি ভাষা শেখানোর জন্য বাড়িতে ফরাসি ভাষায় কথা বলা বাধ্যতামূলক করে দেন। এমনকি খাবার টেবিলে শুদ্ধ ফরাসিতে কথা বলতে না পারলে খাবার না দেওয়ার নিয়মও জারি করেন। বাবার গোঁড়ামির প্রভাব ডিরাকের ওপর পরে। তিনি কথা বলা কমিয়ে দেন। নিরব থাকতে শুরু করেন। এমনকি সবার সাথে এক টেবিলে খেতেও বসতেন না।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী এরউইন শ্রোডিঙ্গার" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/27/1730012562-fcb0aa2829366ec2682d633bce68b461.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী এরউইন শ্রোডিঙ্গার</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/27/1439673" target="_blank"> </a></div> </div> <p>১৯২১ সালে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন ডিরাক। সেটাও তাঁর বাবার জোরাজুরিতেই। তাঁর মন পড়ে ছিল ফলিত গণিতে। বাবা তাতে রাজি নন। পড়াশোনার খরচ দেবেন না। ১৯২১ সাল। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার সুযোগ পান ডিরাক। কিন্তু অর্থসাহায্য না পেয়ে কেমব্রিজে পড়ার স্বপ্ন ভেঙে যায়। আবার ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতে দ্বিতীয় স্নাতক শুরু করেন। এবার ফুল-ফান্ড স্কলারশিপে।</p> <p>১৯২৩ সালে ফার্স্ট ক্লাস ডিগ্রি নিয়ে বের হন তিনি। দ্বিতীয়বার সুযোগ আসে কেমব্রিজে পড়ার। সে বছরই কেমব্রিজের সেন্ট জোনস কলেজে গবেষণা সহকারী হিসেবে যোগ দেন। সেখানে গিয়ে প্রফেসর রালফ ফাউলারের অধীনে তিনি কোয়ান্টাম তত্ত্বের ওপর কাজ শুরু করেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="নোবেলজয়ী দ্ম্পতি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/09/1728466824-e0b8fc77e3e7c5bcd2a7c40fd404783e.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>নোবেলজয়ী দ্ম্পতি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/09/1433447" target="_blank"> </a></div> </div> <p>১৯২৬ সালে গণিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন ডিরাক। ডক্টরেট থিসিস সাবমিট করার আগেই তাঁর ১১টি গবেষণাপত্র প্রকাশ হয়। যা সে আমলের তুখোড় বিজ্ঞানীদের জন্যও সহজ ছিল না।</p> <p>ডক্টরেট ডিগ্রি নেওয়ার পর ডিরাক কোপেনহেগেনে আসেন নিলস বোরের সাথে কাজ করার জন্য। বোর বুঝতে পেরেছিলেন, ছেলেটি খুব মেধাবী, কিন্তু কথা কম বলে। ১৯২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে জার্মান যান ডিরাক। সেখানে পরিচিত হন রবার্ট ওপেনহেইমার ও ম্যাক্স বর্নের সঙ্গে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="নোবেল পুরস্কার ও ব্যর্থ প্রেমের কাহিনি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/07/1728287344-42346b41183c8dbe3d9c3c8d7e9556a6.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>নোবেল পুরস্কার ও ব্যর্থ প্রেমের কাহিনি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/07/1432716" target="_blank"> </a></div> </div> <p>১৯২৮ সালে আপেক্ষিকতার সাথে শ্রোডিঙ্গারের সমীকরণের মিল খুঁজে পান তিনি। দুটোর মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে বের করে যুগান্তকারী এক সমীকরণের জন্ম দেন। যা 'ডিরাকের সমীকরণ' নামে পরিচিতি পায়। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি তড়িৎচুম্বক ক্ষেত্রের ওপর কোয়ান্টম তত্ত্ব প্রয়োগ করেছিলেন। যার নাম দিয়েছিলেন কোয়ান্টাম ইলেকট্রো-ডায়নামিকস বা কোয়ান্টাম তড়িৎ-গতিবিজ্ঞান।</p> <p>১৯৩২ সালে মাত্র ত্রিশ বছর বয়সে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে লুকাসিয়ান প্রফেসর পদে নিয়োগ পান ডিরাক। যে পদে আইজাক নিউটন অধিষ্ঠিত ছিলেন এক সময়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="নোবেল পদকের ডিজাইনার কে ছিলেন?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/07/1728296603-b51b0e7568b46069c7e7b905ec46aafd.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>নোবেল পদকের ডিজাইনার কে ছিলেন?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/07/1432750" target="_blank"> </a></div> </div> <p>১৯৩৩ সালে পল ডিরাক ও শ্রোডিঙ্গারকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। নোবেল পাওয়ার খবর শুনে বিব্রত বোধ করেন ডিরাক। কারণ নোবেল পেলে বিজ্ঞানীদের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। আর হৈ চৈ, জনসমক্ষে বক্তৃতা, মিডিয়া— এসবে অস্বস্তি লাগতো তাঁর।</p> <p>ফলে নোবেল প্রত্যাখ্যান করতে চান তিনি। কিন্তু রাদারফোর্ড তাঁকে বোঝান— নোবেল প্রত্যাখ্যান করলে হৈচৈ আরও বেড়ে যাবে।<br /> ১৯৬৯ সালে লুকাসিয়ান প্রফেসর পদ থেকে অবসর নেন এই মহাবিজ্ঞানী। দু-বছর পর সপরিবারে চলে যান ফ্লোরিডায়। আমৃত্যু সেখানেই ছিলেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="কী আছে নোবেল পদকের উল্টোপিঠে?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/08/1728374629-4802d4fdcea541ff0de3c7fad76f798b.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>কী আছে নোবেল পদকের উল্টোপিঠে?</p> </div> </div> </div> <p><a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/08/1433081" target="_blank"> </a></p> <p><strong>৮ আগস্ট ১৯০২</strong></p> </div> </div> <p>যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টলে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুল শিক্ষক চার্লস ডিরাক এবং লাইব্রেরিয়ান ফ্লোরেন্স হল্টেনের দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন তিনি।</p> <p><strong>১৯২১</strong><br /> ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন।</p> <p><strong>১৯২৩</strong><br /> ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে ফার্স্ট-ক্লাস ডিগ্রি নিয়ে দ্বিতীয় স্নাতক সম্পন্ন করেন।</p> <p><strong>১৯২৬</strong><br /> কেমব্রিজের সেন্ট জোনস কলেজে গবেষণা সহকারী হিসেবে যোগ দেন।</p> <p><strong>১৯২৮</strong><br /> বিখ্যাত ডিরাক সমীকরণ প্রণয়ন করেন।</p> <p><strong>১৯৩০</strong><br /> প্রতিপদার্থ বা অ্যান্টিম্যাটারের ধারণা দেন।</p> <p><strong>১৯৩০</strong><br /> রয়্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন।</p> <p><strong>১৯৩২</strong><br /> কার্ল অ্যান্ডারসন পরীক্ষামূলকভাবে ডিরাকের প্রতিপদার্থের অনুমান বাস্তবায়ন করেন।</p> <p><strong>১৯৩২-১৯৬৯</strong><br /> কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে লুকাসিয়ান প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।</p> <p><strong>১৯৩৩</strong><br /> শ্রোডিঙ্গারের সাথে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন।</p> <p><strong>১৯৩৭</strong><br /> ইউজিন উইগনারের বোন মার্গিটকে বিয়ে করেন।</p> <p><strong>১৯৬৯</strong><br /> কেমব্রিজে লুকাসিয়ান প্রফেসর পদ থেকে অবসর নিয়ে ফ্লোরিডা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন।</p> <p><strong>২০ অক্টোবর ১৯৮৪</strong><br /> ফ্লোরিডায় মৃত্যুবরণ করেন।<br />  </p>