<p>সাল ১৯১১। নিলস বোর গবেষণার কাজে ইংল্যান্ড যান। ইচ্ছা ছিল জে জে থমসনের অধীনে কাজ করবেন। কিন্তু থমসনের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পেলেন না। হতাশ হয়ে চলে আসেন ম্যানচেস্টার। সেখানে পরিচয় হয় থমসনেরই পুরনো ছাত্র রাদারফোর্ডের সঙ্গে। রাদারফোর্ড কিছুদিন আগেই তার পরমাণুর মডেল প্রকাশ করেছেন। সে মডেল অনুযায়ী, পরমাণুর দুটো অংশ রয়েছে। নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রন।</p> <p>ঘুরতে থাকা ইলেকট্রন তড়িৎচুম্বক শক্তি বিকিরণ করে। এ ঘটনার ব্যাখ্যা ছিল না রাদারফোর্ডের সৌর মডেলে। এ ধারণায় ইলেকট্রনের কক্ষপথ হয়ে যায় সর্পিলাকার। ফলে ঘুরতে ঘুরতে ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের ভেতর মিলিয়ে যাওয়ার কথা। বোর বুঝতে পারেন, ক্লাসিক্যাল বলবিদ্যায় এই রহস্যের জট খুলবে না। তিনি সাহায্য নেন কোয়ান্টাম তত্ত্বের। যদিও কোয়ান্টাম তত্ত্বে তেমন ভরসা ছিল না বোরের। তবু ইতোমধ্যে দু-দুটো সফলতা তো ফেলে দেওয়া যায় না।</p> <p>বোর প্রস্তাব করেন—কক্ষপথ যদি সর্পিল হয়, তখন বিকিরণ হতো নিরবচ্ছিন্ন। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। কাজেই ইলেকট্রনের কক্ষপথই বিচ্ছিন্ন। বৃত্তাকার। নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘোরার সময় ইলেকট্রন কোনো শক্তি নির্গমন করে না। একেকটি কক্ষপথে ইলেকট্রন নির্দিষ্ট শক্তি ধারণ করে। সেই শক্তি কমবেশি হলে ইলেকট্রন ওপর বা নিচের কক্ষপথে লাফিয়ে যেতে পারে। ইলেকট্রনের এই লাফিয়ে চলাকে বলা হয় কোয়ান্টাম লিপ।</p> <p>প্ল্যাংক-আইনস্টাইনের কোয়ান্টাম তত্ত্ব ব্যবহার করে পরমাণুর শক্তিস্তরের ধারণা দেন নিলস বোর। যা পরমাণুর স্থায়িত্ব ও ইলেকট্রনের তড়িৎচুম্বক বিকিরণ— দুটোর পক্ষেই যুক্তি দেয়।</p> <p>বোরের পরমাণু মডেলে প্ল্যাংক-আইনস্টাইনের কোয়ান্টাম তত্ত্বের অবদান স্পষ্ট। বোর বলেন, ইলেকট্রনের কক্ষপথগুলো নিরবচ্ছিন্ন নয়। আলাদা আলাদা। আর ইলেকট্রন শুধু কক্ষপথ পরিবর্তনের সময়েই শক্তি ছাড়তে বা গ্রহণ করতে পারে। কাজেই ইলেকট্রন থেকে যে শক্তি বের হয়, তা-ও নিরবচ্ছিন্ন নয়। যেমনটা প্ল্যাংক বলেছিলেন, শক্তি গুচ্ছ গুচ্ছ বা কোয়ান্টা আকারে আসে। আইনস্টাইন এই কোয়ান্টার নাম দিয়েছিলেন ফোটন।</p> <p><strong>সম্পর্কিত তত্ত্ব</strong><br /> প্ল্যাংকের কোয়ান্টা<br /> বামারের বর্ণালি<br /> ইপিআর প্যারাডক্স</p> <p><strong>জীবনী</strong><br /> <strong>জোসেফ জন থমসন</strong><br /> ১৯৫৬-১৯৪০<br /> ব্রিটিশ পদার্থবিদ, ইলেকট্রনের আবিষ্কারক।</p> <p><strong>আর্নেস্ট রাদারফোর্ড</strong><br /> ১৮৭১-১৯৩৭<br /> নিউজিল্যান্ডীয় পদার্থবিদ, তেজষ্ক্রিয় মৌলের অর্ধায়ু এবং পরমাণুর নিউক্লিয়াসের আবিষ্কারক।</p> <p>বর্ণনা<br /> ব্রায়ান ক্লেগ</p>