<p>সুরের অনুরাগীদের অনেকেই হাজির হয়েছিলেন রাজধানীর ধানমণ্ডির ছায়ানটের সংগীত আয়োজনে। হেমন্তের সন্ধ্যার অবকাশে তারা শুনেছেন শিকড়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া গান। মৃত্তিকাসংলগ্ন সুরের স্রোতধারায় প্লাবিত হয়েছে শ্রোতার অন্তর। নাগরিক জীবনের ক্লান্তি ভালোলাগায় ভরে গেছে মন।</p> <p>গতকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে হৃদয় রাঙানিয়া এই লোকসংগীতের আসর।</p> <p>সংগীত-গুণী তপন মজুমদারকে উৎসর্গ করা হয় এই লোক সংগীতানুষ্ঠানটি। প্রখ্যাত পাঁচ লোককবির গীতবাণীতে সজ্জিত ছিল এই গানের আসর। এই পাঁচ লোককবি হলেন—রশীদ উদ্দিন, কানাইলাল শীল, আব্দুল খালেক দেওয়ান, মোমতাজ আলী খান ও আব্দুল লতিফ।</p> <p>ছায়ানটের যুগ্ম সম্পাদক জয়ন্ত রায়ের সংক্ষিপ্ত কথনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর মতিউর রহমান বকুলের গাওয়া গানের আশ্রয়ে এগিয়ে চলে পরিবেশনা পর্ব। নিরবধি বয়ে চলা নদীর প্রতি অনুরাগের প্রকাশে গেয়ে শোনান—সর্বনাশা পদ্মা নদী তোর কাছে শুধাই/বল আমারে তোর কি রে আর/কূল-কিনারা নাই...। অনেকটা অভিন্ন প্রকাশে জোনাকী রাণী শীল শুনিয়েছেন—অকুল গাঙে ভাটির তরী কে যাও তুমি বাইয়া ...। সরদার মো. রহমাতুল্লা পরিবেশন করেন ‘তোমার নাম লইয়া ধরিলাম অকুল গাঙে সাঁই’।</p> <p>একক কণ্ঠের পরিবেশনার পর অনেক কণ্ঠ মিলে যায় এক স্বরে। আসন্ন শীতের আবাহনে সকলে মিলে গেয়ে শোনান ‘পৌষে বাও পাহাড়ি’। পার্থিব জগতের মোহমায়ার বারতায় স্বপ্না রায় শুনিয়েছেন—এই যে দুনিয়া কিসেরও লাগিয়া/এত যত্নে গড়াইয়াছেন সাঁই ... । সঞ্চিতা বর্মণ পরিবেশিত গানের শিরোনাম ছিল—‘আমায় খুন কইরাছে’। ভাব-ভালোবাসার নির্যাসকে সঙ্গী করে অভিবাঁধন দাস অর্ণ গেয়েছেন, ‘আমার মন চিঠিটা লইয়ারে’। দ্বৈত কণ্ঠে পলাশ কুমার বিশ্বাস ও সবিনা রাণী পরিবেশন করেন ‘ওলো নাকের বিন’। নারায়ণ চন্দ্র শীল শুনিয়েছেন ‘মা লো মা, ঝি লো ঝি/বইন লো বইন করলাম কী’। মুহাম্মদ কামরুল বাশার পরিবেশিত গানের শিরোনাম ছিল, ‘ঘরখানা বেন্ধে কি কৌশলে’। মো. মানিক শুনিয়েছেন ‘সোনার বউ গো শুনছো নি’। শিপ্রা ভৌমিক গেয়েছেন, ‘আমি ভাবি যারে’ শীর্ষক সংগীত। বিমান চন্দ্র বিশ্বাস পরিবেশিত গানের শিরোনাম ছিল, ‘তোমার লাগিয়া রে সদাই প্রাণ আমার’। নাজমুল আহসান তুহিন শুনিয়েছেন, ‘আমি বলবো কি শুনবে কে’ শীর্ষক সংগীত। মহিতোষ কুমার মণ্ডল শুনিয়েছেন ‘সকল গোলমাল মিটে যাবে’।</p> <p>কণ্ঠশিল্পীদের সঙ্গে যন্ত্রসংগীতে তবলায় বোল তুলেছেন অজয় দাস ও স্বরূপ হোসেন। বাঁশিতে সুর ছড়িয়েছেন মো. মামুনুর রশীদ। দোতারা ও মন্দিরার বাদনে ছিলেন রকন বুসার রায় ও প্রদীপ কুমার রায়। ঢোল বাজিয়েছেন দশরথ রায়। কিবোর্ডে সুর তুলেছেন রবিন্স চৌধুরী।</p> <p> </p>