<p>শীতের শুরু থেকেই নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় লেপ-তোষক তৈরি করতে বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন কারিগররা। পাশাপাশি দোকানেও ব্যস্ততা দেখতে পাওয়া যায়। </p> <p>কারিগররা বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে লেপ তোষক বানানোসহ অগ্রিম অর্ডার নেওয়ার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন। দোকানেও প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ফরমায়েশ অনুযায়ী লেপ-তোষক তৈরি করছেন তারা। তবে, রেডিমেট লেপ-তোষক, ম্যাট্রেসের কদর বৃদ্ধি, উপকরণের মূল্য ও মজুরি বৃদ্ধির কারণে এবার কমেছে চাহিদার পরিমাণ। সে কারণে কারিগরদের ব্যস্ততাও আগের থেকে একটু কম।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="‘দেশটা কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠীর নয়, দেশটা সবার’" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/04/1733288516-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>‘দেশটা কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠীর নয়, দেশটা সবার’</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/04/1453703" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তীব্র শীত শুরু হতে এখনো বাকি কিছুদিন। কনকনে শীতের আগে তাই লেপ-তোষকের দোকানে আসছেন ক্রেতারা। নতুনের পাশাপাশি কেউ কেউ আবার পুরনো লেপ-তোষকই নতুন করে গড়িয়ে নিচ্ছেন। কারিগররা কেউ তুলা সেট করছেন, কেউ তুলায় মোড়ানো কাপড় সেলাই করছেন, এমনিভাবে পৌরশহরের অধিকাংশ দোকানে কাজ চলছে সকাল নয়টা থেকে রাত আটটা বা নয়টা পর্যন্ত।</p> <figure class="image" style="float:left"><img alt="লেপ তোষক" height="327" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/Nahid/Untitled-7a.jpg" width="546" /> <figcaption>দোকানেও ব্যস্ততম সময় কাটাচ্ছেন লেপ-তোষক কারিগররা। ছবি : কালের কণ্ঠ</figcaption> </figure> <p>সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পাওয়া যায় পৌর শহরের সাউদপাড়া মোড়, দিগদাইর মোড়, চিরাং রোডসহ পাড়া মহল্লার কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মধ্যে দলপা ইউনিয়নে বৈখেরহাটি বাজার, নওপাড়া ইউনিয়নে নওপাড়া বাজার, রোয়াইলবাড়ী ইউনিয়নে রোয়াইলবাড়ী বাজারসহ অন্যান্য বাজারগুলোতে লেপ-তোষকের তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। এ সকল দোকানে বানানো লেপ-তোষকের পাশাপাশি রেডিমেড লেপ-তোষকও বিক্রি হচ্ছে। পাওয়া যাচ্ছে রেডিমেড ফোম এবং ম্যাট্রেসও। এবারে তুলা ও কাপড়ের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে লেপ, তোষক তৈরিতে খরচও বেড়েছে। উপকরণ ও মজুরি মিলিয়ে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর খরচ কিছুটা বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ে। তাই কমেছে অর্ডারের সংখ্যাও। সেই সাথে কম্বল, ফোম ও ম্যাট্রেসের ব্যবহার বেড়ে যাবার কারণে লেপ তোষকের কারিগরদের ব্যস্ততাও আগের চেয়ে কমেছে। এ কারণে এ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট কারিগররা ঝুঁকছেন অন্য পেশায়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="পলাতক ২২০০ কারাবন্দীর মধ্যে এখনো পলাতক কত জন?" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/04/1733295315-794cdb9c73f8c687c66ee249c67e263a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>পলাতক ২২০০ কারাবন্দীর মধ্যে এখনো পলাতক কত জন?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/12/04/1453732" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তবে যেসব মানুষ পারিবারিক ঐতিহ্য অনুসরণ করে চলেন, তারা এখনো নির্ভর করেন বানানো লেপ ও তোষকের ওপর। এ ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টরা জানান, পৌরশহর ও বিভিন্ন ইউনিয়নে ৫০টির বেশি দোকান রয়েছে। যেসব দোকানে লেপ-তোষক বানানোর পাশাপাশি রেডিমেড লেপ, তোষক, ফোম ও ম্যাট্রেস বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে লেপ বানাতে ১০০০ থেকে ১৮০০ টাকা, বালিশ ৩০০ থেকে  ৪৫০ টাকা, তোষক সর্বনিম্ন ৭৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২০০ টাকা, জাজিম ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্য বানানো হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের ম্যাট্রেস ৫০০০ থেকে ১২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।</p> <p>সাজিউরা মোড়ের কারিগর রুহুল মিয়া বলেন, প্রায় ১৮ বছর ধরে একাজের সাথে রয়েছি। দিনে ৫০০/ ৬০০ টাকা মজুরি পাই। আগে দিনে এক হাজার টাকাও মজুরি পেয়েছি। কম কাজ ও কম মজুরির জন্য এখন লেপ-তোষকের কারিগররা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন’। আরেকজন কারিগর রফিক মিয়াও একই কথা জানান।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সিরাজগঞ্জে হেরোইনসহ সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/04/1733291683-7151184986aed9f8f418938930271d37.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সিরাজগঞ্জে হেরোইনসহ সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/04/1453717" target="_blank"> </a></div> </div> <p>দিগদাইর মোড়ের কারিগর আনিস বলেন, ‘বংশ পরম্পরায় তিন পুরুষ ধরে লেপ তোষক বানানোর কাজ করছি। কয়েক বছর আগেও কাস্টমার বেশি ছিল। বর্তমানে ম্যাট্রেস আর ফোমের ব্যবহার বেড়ে যাবার কারণে কাস্টমার কমেছে। তাছাড়া, কাপড় ও তুলার দামও বেড়েছে আগের চেয়ে’।</p> <p>চিরাং মোড়ের মামুন বলেন, ‘দেশি-বিদেশি বাহারি কম্বল ও ম্যাট্রেসে বাজার সয়লাব হলেও এখনো লেপ-তোষকের বিকল্প নেই। তুলা ও কাপড়ের দাম বাড়লেও যারা বানানো লেপ তোষকে অভ্যস্ত, তাদের কম্বল বা ম্যাট্রেসে চলে না’।</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘তুলা ও কাপড়ের দাম বেড়েছে। তবু লেপ বানাতে দিয়েছি। ১২ বছর আগের লেপের তুলা খানিকটা ড্যাম হয়েছে, তাই এবার পুরনো লেপ নতুন করে বানাতে দিয়েছি’।</p> <p>লেপ বানাতে আসা শফিক মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান, শীতের সময় আমাদের মত নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য লেপ খুবই দরকারি। শীতে লেপ ছাড়া আমাদের একদম চলে না। লেপ তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদানসহ কারিগরদের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় আমাদের মত নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের খুব কষ্ট হচ্ছে। লেপ-তোষকে বেশি দাম হওয়াতে আক্ষেপ করে সে বলল, কম্বলের দাম বেশি হলেও কিছু লোকজন কষ্ট করে হলে কম্বলের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। একটা কম্বল কিনতে পারলে এবং তা যত্ন করে ব্যবহার করলে প্রায় ১৫/২০ যাবে এটা নিশ্চিত বলা যায়। তবু আমরা বলব, লেপ আমাদের খুবই পরিচিত। আমাদের বাপ-দাদারা ব্যবহার করেছেন। আমরাও লেপ ব্যবহার করতে চাই। তাই লেপ-তোষকের দামটা নাগালের মধ্যে থাকলে আমাদের জন্য ভাল হয়।  </p> <p>সাজিউড়া মোড়ের ভাই ভাই লেপ-তোষক ব্যবসায়ীর মালিক কোহিনূর মিয়া বলেন, ‘বানানো লেপ-তোষকে অনেক যত্নের ছোঁয়া থাকে তাই স্থায়ী হয় বেশি। যার সাথে এখনকার ফোম বা ম্যাট্রেসের তুলনা চলে না।’</p> <p>আরেক ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এক শ্রেণির কাস্টমার আছেন যারা এখনো বানানো লেপ, তোষক ও জাজিমের ওপরই নির্ভর করেন। তাদের কারণেই আমাদের ব্যবসাটা এখনো টিকে রয়েছে।’</p>