<p>টঙ্গীতে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। শনিবার (১৬ নভেম্বর) সাতাইশ শরিফ মার্কেট এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়। যানবাহন ভাঙচুর করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে হামলাকারীরা।</p> <p>স্থানীয় সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পর থেকেই টঙ্গীতে ঝুট ব্যবসার দখল নিয়ে ছোটখাট ঘটনা ঘটছে। শনিবার সকাল থেকেই মাসকো টেক্স লিমিটেডের ঝুট নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। এ সময় দুই গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মহড়া দিতে থাকে। এক পর্যায়ে এক পক্ষের লোকজন ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে অপর পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে দোকানপাট বন্ধ করে দেয় এবং সড়কে চলমান অটোরিকশা ভাঙচুর করে। </p> <p>গাজীপুর মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক সাজেদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, 'ঘটনার সময় আমি ছিলাম না। পরে শুনেছি। আমি মহানগরের রাজনীতি করি, সবাই আমাদের লোক। নেতাদের সঙ্গে বসে মীমাংসা করা হবে।</p> <p>টঙ্গীর ৫১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, তেমন কিছুই হয়নি। বিষয়টি নিয়ে হাসান সরকার সাহেব বসেছেন। ঠিক হয়ে যাবে।</p> <p>টঙ্গী পশ্চিম থানা বিএনপির আহ্বায়ক প্রভাষক বসির আহম্মেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ৫০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সাজেদুল ঝুট নিতে আসলে স্থানীয়রা বাধা দেয়। সব পক্ষই আমাদের। বিষয়টি আমাদের মুরুব্বি হাসান উদ্দিন সরকার মীমাংসা করছেন।</p> <p>বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক এমপি হাসান উদ্দিন সরকারকে ফোন দিলে তিনি বলেন, 'আমি কিছু জানি না। জনির সঙ্গে কথা বলেন বলে তিনি জনির হাতে ফোন দেন। হাসান সরকারের পিএস গোলাম কিবরিয়া জনি কালের কণ্ঠকে বলেন, দুই পক্ষকে বসিয়ে আপস করে দিয়েছি। কোনো সমস্যা নেই।'</p> <p>টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, গার্মেন্টসের সামনে উত্তেজনা হয়েছিল। এখন কোনো সমস্যা নেই।</p> <p>টঙ্গী শিল্পনগরীতে তিনশতাধিক চলমান শিল্পকারখানা রয়েছে। এই সব কারখানায় বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের নেতারা ঝুট ব্যবসা করতেন। তাদের সঙ্গে একাধিক বিএনপির নেতা গোপনে অংশীদার ছিলেন। ৫ আগস্টের পর বিএনপি সব কারখানার ঝুট ব্যবসা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। এসবের মধ্যে বিএনপির একাধিক নেতা কোনো কোনো কারখানায় ঝুট ব্যবসা ও মিল নিয়ন্ত্রণে অতীত বন্ধু আওয়ামী লীগের নেতাকেও কৌশলে অংশীদার করছেন। ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করার পর এখন যেসব গ্রুপ ঝুট ব্যবসা করছে, সেসব গ্রুপের মধ্যে উপ-গ্রুপ তৈরি হওয়ায় প্রায়ই ঝুট নিয়ে সমস্যা হয়। ঝুট নিয়ে মহড়া, পাল্টা মহড়া, মারামারি ও হাতাহাতি নিত্যদিনের চিত্র।</p> <p>তবে টঙ্গী বিএনপির সব বড় নেতারাই বলছেন, তারা কেউ ঝুট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। কিন্তু ঝামেলা হলে তারাই আপস করছেন।</p>