<p>সাতদিন আগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সৌদি আরব প্রবাসী যুবক সোহান আহমদ (২৩)। এখনো হাত থেকে মেহেদির রং যায়নি সোহানের। পূরণ হয়নি বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার স্বপ্ন, মেহেদির রং মোছার আগেই প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন সোহান আহমদ।</p> <p>গতকাল সোমবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরো ২ জন আহত হয়েছেন। নিহত সোহান ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে। আহতরা হলেন সোহানের চাচাতো দুই ভাই নুর আলমের ছেলে মোসাদ্দেক আলম (২৪) ও আবু সায়েদের ছেলে শহীদুল্লা (২৫)। আহতদের মধ্যে মোসাদ্দেকের অবস্থা সংকটাপন্ন।</p> <p>পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই সপ্তাহ পূর্বে সৌদি আরব থেকে দেশে আসেন ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের সিরাজ মিয়া ছেলে সোহান আহমদ। এক সপ্তাহ আগে স্বপ্নের দেশ যুক্তরাজ্যে যাওয়ার জন্য পাঞ্জারাই গ্রামে বিয়ে করেন সোহান। স্বপ্ন ছিল স্ত্রী সহকারে যাবেন যুক্তরাজ্যে। কিন্তু স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল সোহানের। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের উমরপুর গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের পুত্র নুরকাছ ও তার সহযোগীদের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে সোহানের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তাদের মাঝে হাতাহাতি শুরু হলে সোহান নিজেকে রক্ষায় দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। ইনাতগঞ্জ বাজারের গলিতে প্রকাশ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে সোহানকে একাধিক জখম করা হয়। এ সময় সোহানকে বাঁচাতে মোসাদ্দেক ও শহীদুল্লাহ এগিয়ে আসলে তাদেরকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় সোহান ও মোসাদ্দেককে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অপর আহত শহীদুল্লাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহানের মৃত্যু হয়। এদিকে হামলায় গুরুতর আহত মোসাদ্দেকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।</p> <p>ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও নিহত সোহানের চাচা মসুদ আহমেদ জিহাদী বলেন, ‘আমার ভাতিজাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীরা এলাকায় নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। প্রতিনিয়ত তারা অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এর আগেও একাধিকবার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগে সৌদি আরব থেকে দেশে আসে সোহান। তার স্বপ্ন ছিল বিয়ে করে স্ত্রীসহ যুক্তরাজ্যে যাবে। গত এক সপ্তাহ আগে পাঞ্জারাই গ্রামে বিয়ে করে সোহান। কিন্তু তার স্বপ্ন আর সত্যি হলো না।’ তিনি সোহানকে যারা প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।</p> <p>নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানা এলাকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে।’</p>