<p>চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে হাতির আক্রমণে আলী আকবর (৪২) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৩টার দিকে দক্ষিণ শাহমিরপুর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুন্দবীপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।</p> <p>স্থানীয়রা জানায়, আকবর স্থানীয় মৃত এনামুল হকের ছেলে। তিনি একজন দিনমজুর। ইয়ালিফ আল রাফসান (১০) ও হাফেজ ওয়ালিফ আল আহনাফ (১২) নামের দুই ছেলে আছে তার।</p> <p>কান্নারত অবস্থায় নিহতের বড় ছেলে হাফেজ ওয়ালিফ আল আহনাফ বলে, ‘রাতে আমার আব্বুকে হাতি মেরে ফেলছে, কেইপিজেড থেকে যদি হাতিগুলো সরানো না হয় তাহলে আমার আম্মুকেও মেরে ফেলবে হাতিটা, অনেক মানুষকে মেরে ফেলবে।</p> <p>আকবরের মা জোহরা খাতুন বলেন, ‘প্রতিবেশীর চিৎকার শুনে ঘর থেকে বের হয় আকবর। পেছন পেছন আমিও বের হই। তার স্ত্রী মিনু আকতারও বের হয়। ঘরের উঠানেই হাতির সামনে পড়ে যায় আকবর। সঙ্গে সঙ্গে দৌড় দিতে চেষ্টা করে সে। কিন্তু উঠোনের সীমানায় রাখা জালে পেঁচিয়ে পড়ে যায় সে। হাতিটি সেখানে গিয়ে প্রথমে তাকে পায়ে পিষ্ট করে এরপর শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে। আমাদের চোখের সামনেই ছেলেটি মারা গেল।’</p> <p>নিহতের চাচাতো ভাই জুনায়েদ আলম শাফি বলেন, গত রাত ৮টার দিকে একটি হাতি আমাদের এলাকায় আসে, ৮টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করে। পরে রাত ৩টা ২০ মিনিট নাগাদ গেটের সামনে ভাইকে আক্রমণ করে। ঘটনাস্থলেই ভাইয়ের মৃত্যু হয়। মেডিক্যালে নেওয়ারও সময় হয়নি।</p> <p>আকবরের মৃত্যুর পর বুধবার সকালে কর্ণফুলী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (কেইপিজেড) বিক্ষোভ মিছিল করে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এ সময় কেইপিজেডের সঙ্গে এলাকাবাসীর একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে।</p> <p>আগামীতে আকবরের তার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে কেইপিজেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহিম জানান, আকবরের পরিবারকে কেইপিজেডের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। </p> <p>জলদী বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যের রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, ‘হাতির আক্রমণে একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। আমরা বন বিভাগ থেকে সরকারি নিয়ম অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’</p> <p>মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বটতলী গ্রামের গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প এলাকায় হাতির আক্রমণে হালিমা খাতুন (৬৫) নামের এক গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের উপকারভোগীর মৃত্যু হয়। এ পর্যন্ত আনোয়ারা-কর্ণফুলীতে হাতির আক্রমণে ২০ জনের বেশি নারী-পুরুষের মৃত্যু হয়েছে।</p>