<p>বরিশালের বানারীপাড়া পৌর শহরের ফেরিঘাটসংলগ্ন ঐতিহ্যবাহী বন্দরবাজারে ইজারার নামে চাঁদাবাজি বন্ধে মাইকিং করেছেন স্থানীয় জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তাঁরা জামায়াতের কাছে এর উদ্দেশ্য জানতে চাইছেন। সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে তারা প্রশাসনের কাছে গিয়ে অসন্তোষের কথা জানান।</p> <p>জানা গেছে, বানারীপাড়া বন্দরের ইজারাদার ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আক্তার হোসেন মোল্লা। ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে থাকায় আক্তার হোসেন খাজনা তুলছেন না। একই কারণে বানারীপাড়ার সব হাট-বাজার, বন্দর, ফেরিঘাট, বাসস্ট্যান্ড ও  খেয়াঘাটসহ ইজারা খাতের সব কিছু বিএনপি নেতাকর্মীরা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। উপজেলার প্রধান বন্দরবাজার ও ফেরিঘাট এলাকায় ভাসমান ব্যসায়ীদের কাছ থেকে দৈনিক হারে টাকা তুলছেন তারা।<br /> রবিবার সকালে জামায়াত নেতারা বন্দর বাজারের ফেরিঘাট, নতুন রাস্তা, কাঁচামাল ও মাছ বাজারে মাইকিং করেন। রশিদ ছাড়া টাকা তোলা এক ধরনের চাঁদাবাজি বলে মাইকিংয়ে উল্লেখ করেন। রশিদ ছাড়া কেউ টাকা চাইতে এলে বেঁধে রাখতেও বলা হয়। মাইকিংয়ের সময় ফেসবুকে লাইভ দেখানো হয়।</p> <p>বানারীপাড়া পৌর জামায়াতের আমির কাওছার হোসেন জানান, কারা যেন বন্দর বাজার ও ফেরিঘাট থেকে টাকা তোলে। এটা যদি চাঁদাবাজি হয় তাহলে তা বন্ধ করতে তারা মাইকিং করেছেন। উপজেলা প্রশাসনকেও চাঁদাবাজি বন্ধ করতে বলেছেন। </p> <p>তিনি বলেন, বন্দরবাজার ইজারা নেওয়ার বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। মাইকিংয়ের সময়ে তিনিসহ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মোজাম্মেল হোসাইন ও অন্যান্য নেতা উপস্থিত ছিলেন।</p> <p>পৌর বিএনপির সদস্যসচিব হাবিবুর রহমান বলেন, তারা সোমবার পৌর প্রশাসকের দায়িত্বরত সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ওসির কাছে গিয়ে জানতে চেয়েছেন, জামায়াত কী করে চাঁদাবাজি বন্ধের মাইকিং করল। জামায়াত যেহেতু মাইকিং করেছে, এতে মনে হয়েছে বিএনপি চাঁদাবাজি করেছে? তিনি বলেন, বন্দরবাজার আগে থেকেই ইজারা দেওয়া আছে। সেখানে দুই টাকা করে খাজনা নেওয়ার নিয়ম। কিন্তু কোথাও নিয়ম অনুযায়ী খাজনা তোলা হয় না। তাই ৫ থেকে ১০ টাকা নেওয়া হয়।</p> <p>হাবিবুর বলেন, তারা প্রশাসনকে বলেছেন বাজারের খাজনা তোলা হলে নদীর পাড়ে থাকা শতাধিক অবৈধ দোকানঘরও উচ্ছেদ করতে হবে। এতে প্রশাসন বলেছে, সময় লাগবে। মাইকিং করার কারণ জানতে উপজেলা জামায়াতের আমিরের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান হাবিবুর।</p> <p>বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোমিন উদ্দিন বলেন, ইজারাদার দাবি করে বন্দরবাজার ও ফেরিঘাট এলাকায় ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলছে- এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুই দিন আগে শিবিরের কর্মীরা গিয়ে পৌর প্রশাসকের দায়িত্বরত সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুসতাহসিন তাসমিম রহমান অনিন্দ্রর কাছে অভিযোগ জানান। রবিবার পৌর প্রশাসক বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চান। তিনি ব্যবসায়ীদের অবহিত করেন, বাজার কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি এবং চাঁদা না দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান।</p> <p>এদিকে ইজারা খাজনার নামে চাঁদাবাজি বন্ধে জামায়াতের এ উদ্যোগ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় সচেতন মহল তাদের সাধুবাদ জানিয়েছে।</p>