<p style="text-align:justify">কুমিল্লার লালমাই উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মাইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ফাইল প্রস্তুত ও উর্ধ্বতন অফিসারদের ম্যানেজ করে পেনশনের টাকা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে খলিলুর রহমান নামের একজন মৃত শিক্ষকের পরিবারের কাছে ৭০ হাজার টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে।</p> <p style="text-align:justify">গত শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার হরিশ্চরস্থ একটি রেস্টেরেন্টে বসে তিনি শিক্ষকের ছেলের কাছে ঘুষ দাবি করেন। ওই সময়ে শিক্ষকের ছেলে কলেজ শিক্ষার্থী আরিফুর রহমান কৌশলে ঘুষ দাবির কথোপকথন নিজের মোবাইল ফোনে রেকর্ড করেন। ঘুষ দাবি করা অডিও রেকর্ডের ক্লিপটি কালের কণ্ঠে পৌঁছেছে।</p> <p style="text-align:justify">অডিও রেকর্ডে মৃত শিক্ষকের ছেলের উদ্দেশ্যে অফিস সহকারি মাইনুল হোসেনকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনার বাবা প্রায় ২৭ লক্ষ টাকা পাবেন। পেনশনসহ সবকিছু পেতে হলে আমাদের মোট ৭টি কাজ করতে হবে। এখানে আমাদের অফিস, ট্রেজারি অফিস, জেলা অফিস ও চট্টগ্রাম অফিসে কাজ আছে। আপনি কিছু কাজ করতে পারবেন? নাকি সব অফিসের কাজ আমি করবো? ট্রেজারি অফিস ও কুমিল্লা অফিসের তারা কাফনের কাপড় বিক্রি করেও খায়। আমাকে কিছু দিতে হবে না। আমি মৃত শিক্ষকের টাকা খাই না। আপনাদের ইচ্ছে হলে দিয়েন। কুচাইতলী হাসপাতালের গেইটের পাশে আমার দুই তলা বাড়ির কাজ চলছে। সে কারণে আমি এখন হরিশ্চরে ভাড়া থাকি। চৌদ্দগ্রামে আমি ৫ বছর চাকরি করেছি। খবর নিয়েন। টাকা পয়সা অফিসে দেওয়া যাবে না। বিকাশে অথবা নগদে বাহিরে দিবেন। ৭টি কাজের জন্য মোট ৭০ হাজার টাকা দিলে হবে। কালকে (রবিবার) সকালে শুধু ৫ হাজার টাকা দিবেন।’</p> <p style="text-align:justify">এদিকে ঘুষ চাওয়া ওই কর্মচারীর বিচারের উদ্যোগ নিতে এবং পিতার পেনশন দ্রুত পাওয়ার জন্য ভুক্তভোগী শিক্ষকের ছেলে রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) জেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট লিখিত আবেদন করেছেন।</p> <p style="text-align:justify">মৃত শিক্ষকের ছেলে আরিফুর রহমান বলেন, গত ২৬ জুলাই পর্যন্ত আমি ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম। ২৭ জুলাই হঠাৎ করে বাবা মারা যাওয়ার পর গ্রামে ফিরে আসি। গত ১ সেপ্টেম্বর আমি বাবার সকল কাগজপত্র নিয়ে শিক্ষা অফিসে যাই। অফিস সহকারি মাইনুল হোসেন আমাকে বলেন মাকে নিয়ে যেতে। আমি ৫ সেপ্টেম্বর মাকে নিয়ে অফিসে যাই। তখন তিনি বলেন আজ হবে না। তুমি ফোন করে আমার সাথে হরিশ্চর একা দেখা করবে। সে কারণে শনিবার বিকেলে আমি ফোন করলে তিনি আমাকে হরিশ্চর তাজ হোটেলে যেতে বলেন। অনুমান বিকেল ৬টার পরে আমি দেখা করি। একজন সচেতন শিক্ষার্থী হিসেবে দেখা করার একটু আগে আমি আমার ফোনে অডিও রেকর্ড চালু করি। তিনি প্রথমে টাকা না চেয়ে বাবার পেনশনের টাকার হিসেব করেন। শেষ পর্যায়ে ট্রেজারীসহ বিভিন্ন অফিসের কথা বলে ৭০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। এর মধ্যে রবিবার ৫ হাজার টাকা বিকাশে দিতে বলেন।</p> <p style="text-align:justify">অভিযুক্ত অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর মাইনুল হোসেন বলেন, শনিবার বিকেলে শিক্ষকের ছেলেটা তার বাবার পেনশনের বিষয়ে কথা বলতে হরিশ্চর তাজ হোটেলে আমার সাথে দেখা করেন। আমি প্রথমে টাকা চাইনি। শিক্ষকের ছেলে বারবার কাজটার জন্য অনুরোধ করায় ৭০ হাজার টাকা দিতে বলেছি। ছেলেটা এসব কথা রেকর্ড করে ফেলবে আমি বুঝতে পারিনি।</p> <p style="text-align:justify">লালমাই উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাফর আল সাদেক বলেন, ‘শুনেছি একজন মৃত শিক্ষকের ছেলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে অফিস সহকারির বিরুদ্ধে টাকা চাওয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। যেহেতু ঘটনাটা আমার অফিসের আমাকে আগে জানানো দরকার ছিল।<br />  </p>