<p>৪২ সরকারি প্রতিষ্ঠানের ছয় হাজার কোটি টাকার আমানত পদ্মা ব্যাংকে বন্দী। এর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিলের ৮৭৪ কোটি টাকা। বারবার চিঠি দেয়ার পরেও ট্রাস্ট এর জমানো এফডিআর এর টাকা ফেরত দিতে পারছে না পদ্মা ব্যাংক। </p> <p>বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে এক বৈঠকে এই টাকা উদ্ধারের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পদ্মা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গঠনের পর আদায় প্রক্রিয়া শুরু হলে সবার আগে এই ট্রাস্টের টাকা পরিশোধ করাই হবে এই কমিটির কাজ। সুতরাং জলবায়ু ট্রাস্টসহ কোন সরকারি সংস্থাই এখন তাদের জমানো টাকা ফেরত পাচ্ছে না। অপেক্ষা করতে হবে ব্যাংকিং টাস্ক ফোর্স এর তদন্ত প্রতিবেদন এবং ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গঠন পর্যন্ত।</p> <p>অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সভায় পদ্মা ব্যাংকে আটকে থাকা অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের তহবিল উদ্ধারের বিষয়েও কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে। ২০১৫ সালে তত্কালীন ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমান পদ্মা ব্যাংক) গুলশান, মতিঝিল ও গুলশান সাউথ অ্যাভিনিউ শাখায় এক বছর মেয়াদে ৫০৮ কোটি টাকা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল থেকে স্থায়ী আমানত হিসেবে রাখা হয়।</p> <p>মেয়াদ শেষে সুদাসল পরিশোধ না করায় ২০১৮ সাল পর্যন্ত এটি নবায়ন করা হয়। ওই সময় পর্যন্ত কয়েক দফায় পদ্মা ব্যাংক মাত্র ৮০ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত্ম সুদ-আসলে আটকে থাকা অর্থ দাঁড়ায় ৫৯৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এ আমানতের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর বিভিন্ন সময় ট্রাস্ট অর্থ উঠাতে চাইলে দেয়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুদ-আসলসহ ব্যাংকটির কাছে সংস্থাটির পাওনা দাঁড়িয়েছে ৮৭৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা।</p> <p>এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা কালের কণ্ঠকে বলেন, এখন পদ্মা ব্যাংকের কোনো পরিচালনা পর্ষদ নেই। তাই কেউই এখন আমানত ফেরত পাচ্ছে না। পরিচালনা পর্ষদ গঠনের পর ব্যাংকের সম্পদ বা ঋণ আদায় সাপেক্ষে গ্রাহকদের টাকা ফেরত প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে সবার আগে জলবায়ূ ট্রাস্টের টাকা যেন ফেরত দেওয়া হয় সেজন্য বিআরপিডির নির্বাহী পরিচালককে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আদায় সাপেক্ষে এই ট্রাস্টের টাকা ফেরত দেবে পদ্মা ব্যাংক।</p> <p>তিনি আরও বলেন, সরকার পরিবর্তনের আগে পদ্মা ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক মার্জ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন এক্সিম ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা ব্যাংকের সাথে মার্জ হতে দ্বিমতপোষণ করেছে। তাই এখন সেই প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে। তবে ব্যাংকগুলোর বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে টাস্কফোর্স। সেই তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।<br />  </p>