<p>সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটনে বিধি-নিষেধ আরোপের ফলে লাখো মানুষ কাজ হারাবে এবং উদ‍্যোক্তারা সর্বশান্ত হবে বলে আশঙ্কা করছে টোয়াব।</p> <p>সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘সেন্টমার্টিন’ দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোট আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।</p> <p>সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ট‍্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ-টোয়াব সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, আমাদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও সেন্টমার্টিনে রাত্রি যাপন ও পর্যটক যাতায়াত সীমিত করার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, নভেম্বর মাসে সেন্টমার্টিনে কোনো পর্যটক রাত্রি যাপন করতে পারবে না। আর ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দিনে ২০০০ পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন এবং রাত্রি যাপন করতে পারবেন। আর ফেব্রুয়ারি মাসে সেন্টমার্টিনে সরকার পর্যটক যাতায়াত বন্ধ রাখবে এতে পর্যটন শিল্প ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সাধারণ উদ্যোক্তারা সর্বশান্ত হয়ে যাবে।</p> <p>মো. রাফেউজ্জামান বলেন, সেন্টমার্টিনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বাস করে। এরা সবাই পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। সেন্টমার্টিনে পর্যটন সীমিত করা হলে অথবা বন্ধ করা হলে এরা সবাই বেকার হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে উদ্যোক্তাদের আর্থিক বিনিয়োগ মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে। ফলে তিনি সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান এবং আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পর্যটকদের জন্য সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণকে নির্বিঘ্ন ঘোষণা করার জোরালো দাবি জানান।</p> <p>তিনি আরো বলেন, আমরা সেন্টমার্টিনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে চাই, তবে পর্যটন বন্ধ করে দিয়ে নয়। বরং পরিবেশের অনুকূলে সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে। দাবি আদায়ে ঐতিহাসিক শাহবাগে আমাদের রাজপথের কর্মসূচি শুরু হলো দুই দিনের মধ্যে দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচি প্রদান করা হবে।</p> <p>মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের চেয়্যারম্যান শিবলুল আজম কোরেশি বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করে রাত্রিযাপনসহ যাবতীয় বিধি-নিষেধ ব্যতিরেকে পর্যটন চালু রাখা এবং টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে বিকল্প পথ তৈরি করতে হবে।</p> <p>তিনি আরো দাবি করেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশসহ জীববৈচিত্র সংরক্ষণ এবং পর্যটনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করে পর্যটন উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। দ্বীপে লোনা পানি মিঠা পানিতে পরিণত করার নিমিত্বে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করতে হবে। পচনশীল বর্জ্য ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে বায়োগ্যাসে পরিণত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দ্বীপে জেনারেটর ব্যবহার বন্ধ করে পরিবেশবান্ধব সোলার প্লান্ট স্থাপন করতে হবে এবং ইট, বালু, সিমেন্ট, রড ব্যবহার করে স্থায়ী স্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।</p> <p>প্রচার সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। এ দ্বীপে পর্যটকদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হলে জনমনে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি হবে এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসীসহ পর্যটন ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত সকল ক্ষুদ্র ও বৃহৎ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে পড়বে। অসংখ্য পেশাজীবী তাদের চাকরি হারাবে এবং লক্ষ লক্ষ লোক বেকার হয়ে পড়বে। যা এতদঞ্চলে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। ফলে সামগ্রিক ক্ষতি বিবেচনায় সরকারকে আমরা এ ধরনের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার অনুরোধ করছি।</p> <p>সভায় ই-ট্যাব সভাপতি ইমরানুল আলম বক্তব্যে বলেন, যদি সেন্টমার্টিন বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মহীন হয়ে যাবে। বক্তব্যে তিনি সেন্টমার্টিন সম্পর্কিত সব বিধি-নিষেধ তুলে নেওয়ার দাবি জানান।</p> <p>মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে টোয়াব, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার, জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি-ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (স্কুয়াব)সহ আরো কয়েকটি সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। </p>