<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের কেনাকাটায় ৮৪ কোটি টাকার দুর্নীতির আয়োজন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী এক ঠিকাদারকে তাই পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এতে পরিবার নিয়ে তিনি চরম আতঙ্কে রয়েছেন।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভিযোগকারীর নাম শামীম আশরাফী। তিনি বেসরকারি </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মেডিকিট করপোরেশনে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">র মালিক। গত ২২ অক্টোবর সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের কেনাকাটায় ৮৪ কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতির আয়োজন চলছে জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব (ক্রয়কারী প্রধান) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এর পর থেকেই তাঁকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি শুরু করা হয়। শামীম আশরাফী দাবি করেন, তিনি এ বিষয়ে এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও পুলিশ সদর দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শামীম আশরাফী আরো বলেন, পুলিশ দুই দফায় বাসায় গিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কি না এসব জানতে চায়। তাঁর ধারণা, সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের কেনাকাটায় ৮৪ কোটি টাকার দুর্নীতির আয়োজন নিয়ে প্রতিবাদ করায় প্রকল্প পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান ও তাঁর ঘনিষ্ঠ আলিফকো হেলথকেয়ারের মালিক বাতেনের যোগসাজশ থাকতে পারে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে গতকাল সোমবার এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান তা অস্বীকার করে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি তাঁকে কোনো হুমকি দিইনি। পুলিশ দিয়ে হয়রানিও করিনি। তিনি দুর্নীতির আয়োজন সম্পর্কে যে অভিযোগ করেছেন সে সম্পর্কে আমার জানা নেই।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ধানমণ্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল আলিম কালের কণ্ঠকে বলেন, পুলিশ উনাকে (শামীম আশরাফী) হয়রানি করছে না। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তার তদন্ত করছে। তবে পুলিশের কেউ যদি তাকে অযথা হয়রানি করে, তাহলে তিনি থানায় এসে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শামীম আশরাফী দাবি করেন, দরপত্রে অনিয়মের অভিযোগ করায় এই হুমকির মাত্রা আরো বেড়ে গেছে। তাঁর বাসা ও অফিসের আশপাশে হুমকিদাতারা সার্বক্ষণিক অবস্থান করছেন। জানা যায়, সিদ্দিকুর রহমান সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল সম্প্রসারণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সুপারিশে। নিয়োগ পেয়েই তিনি ৮৪ কোটি টাকার কেনাকাটার দরপত্র আহ্বান করেন। সেই দরপত্রে কারসাজি করে নিজের পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার সব ধরনের প্রস্তুতিও নিয়েছেন। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে দরপত্রে অংশ নেওয়া একটি প্রতিষ্ঠান অভিযোগ দেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্প পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান বদলিও হয়ে যান। তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা। গত ১৫ অক্টোবর তাঁকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। কিন্তু বদলির আদেশের প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তিনি প্রকল্প পরিচালকের পদ ছাড়েননি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্টরা জানান, বদলির আদেশ হলেও দরপত্রে কাজ শেষ করে প্রকল্প ছাড়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে দেনদরবারও করছেন তিনি। জানা গেছে, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল সম্প্রসারণ প্রকল্পের (৫০০ শয্যায় উন্নতীকরণ) চিকিত্সাযন্ত্র ক্রয়ের জন্য দুটি প্যাকেজে ৮৪ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু দরপত্রের নির্ধারিত শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ার পরও ক্রয় নীতিমালা লঙ্ঘন করে একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান। সূত্র আরো জানায়, সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের সম্প্রসারণ প্রকল্পের জিডি-১১ (এসকেএইচইউপি) ও জিডি-১২ (এসকেএইচইউপি) প্যাকেজের আওয়তায় ৮৪ কোটি টাকায় ৩৭৪টি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি কেনার জন্য গত ১৩ আগস্ট সর্বশেষ দরপত্র আহ্বান করা হয়। জিডি-১১ প্যাকেজে চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। কিন্তু নির্ধারিত শর্ত পূরণ করতে না পারায় প্রাথমিক পর্যায়েই দুটি প্রতিষ্ঠান বাদ পড়ে যায়। দরপত্র পাওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আনিফকো হেলথকেয়ার ও মেডিকিট করপোরেশন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূত্র জানায়, দরপত্রের শর্তানুযায়ী বহনযোগ্য কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র বা ভেন্টিলেটর সরবরাহের ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) অনুমোদিত সনদ থাকতে হবে। কিন্তু আনিফকো হেলথকেয়ার এফডিএর একটি ভুয়া সনদ জমা দেয়। এ ছাড়া কার্ডিয়াক মনিটর কেনার জন্য দরপত্রে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গ্রুপের যন্ত্র নেওয়ার শর্ত ছিল। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপানের উত্পাদিত যন্ত্র এ গ্রুপের যন্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু আনিফকো চীনে উত্পাদিত </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গ্রুপের যন্ত্র দেওয়ার কথা উল্লেখ করে। একই সঙ্গে দরপত্রে চারটি আলট্রাসাউন্ড ট্রান্সডুসার প্রোবসহ মেশিন কেনার কথা উল্লেখ ছিল। কিন্তু আনিফকোর প্রস্তাবিত দরপত্র শিট যাচাই করে এসব উল্লেখ করা হয়নি বলে জানা গেছে। অথচ প্রোব না থাকলে মেশিনটি পরিচালনা করা সম্ভবই হবে না।</span></span></span></span></p>